স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ সেপ্টেম্বর : কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই নং ওয়ার্ডের জোর কালভার্ট এলাকার গৃহবধূ রুহিনা পারভিনের মৃত্যুর ঘটনায় এখনো পলাতক ৪ অভিযুক্ত। সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয় ন্যায় বিচারের দাবি জানান কন্যা হারা মা পাতারুন নেছা। প্রায় ১১ মাস পূর্বে কদমতলা থানাধীন কুর্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুহিনা পারভিনের বিয়ে হয় ধর্মনগর জোর কালভার্ট এলাকার বাসিন্দা জব্বার মিয়ার সাথে। বিয়ের সময় রুহিনার বাবা মা অনেক সামগ্রী দেন মেয়েকে।
বিয়ের পর কয়েকমাস ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। পরবর্তীতে স্বামী জব্বার মিয়া শশুর বাড়ি থেকে নগদ অর্থ নিয়ে আসার জন্য স্ত্রী রুহিনার উপর চাপ দিতে থাকে। এমনকি স্বামী ও শাশুড়ি মিলে রুহিনার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। পরে রুহিনা তার বাবা-মার কাছে ফোন করে কান্নাকাটি করে বিষয়টি জানালে ঘরোয়া সালিশি সভার মাধ্যমে দুই ধাপে চার লাখ টাকা দেন রুহিনার বাবা মা। তারপরও টাকার জন্য রুহিনার উপর চাপ দিতে থাকে স্বামী, শাশুড়ি সহ স্বামীর বাড়ির লোকজন। এদিকে রুহিনার মা পাতারুন নেছা জানান, ৮ সেপ্টেম্বর সকাল এগারোটা নাগাদ রুহিনা মায়ের কাছে ফোন করে তার উপর অত্যাচারের কথা কেঁদে কেঁদে বলার সময় তার স্বামী মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়।
তারপর ১২ টা ৪১ মিনিটে রুহিনার ননদের জামাই আনোয়ার হোসেন তাদেরকে ফোন করে জানায় রুহিনা ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে দ্রুত মেয়ের শশুর বাড়িতে ছুটে যান তারা। সেখানে গিয়ে দেখতে পান তাদের মেয়ে ঘরের ফ্লোরে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মেয়ের গলায় ওড়না বাধা অবস্থায় রয়েছে। তবে স্বামী সহ শশুর বাড়ির সকলেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। মৃত রুহিনার গাল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্ন ও ক্ষত রয়েছে। ধর্মনগর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। রুহিনার মা জানান তিনি ধর্মনগর মহিলা থানায় মেয়ের স্বামী জব্বার মিয়া,শাশুড়ি লায়লা বিবি, ভাসুর রহিম বাদশা, আব্দুল সত্তার ও আব্দুল সাত্তারের স্ত্রীর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার দিন রাতে পুলিশ মৃত রুহিনার ভাসুর রহিম বাদশাকে গ্রেফতার করে। তারপর থেকে পলাতক বাকি অভিযুক্তরা। মৃত রুহিনার মা পাতারুন নেছা এইদিন সংবাদ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে ন্যায় বিচারের দাবি জানান। জানা যায় পুলিশকে ম্যানেজ করে পলাতক অভিযুক্তরা বুক চেতিয়ে খোলা আকাশের নীচে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখন দেখার পুলিশ মৃতার মাকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে কিনা।