স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৯ আগস্ট: ফের উত্তপ্ত জম্মু ও কাশ্মীর। ভয়ংকর গুলির লড়াইয়ে কাঁপছে উপত্যকা। বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর জোড়া এনকাউন্টারে খতম হয়েছে তিন জঙ্গি। এখনও জেহাদিদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলছে জওয়ানদের। লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের খোঁজে চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান। সামনেই কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন। জোর কদমে চলছে ভোটের প্রস্তুতি। আর এই নির্বাচন বানচাল করতে সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা।
সেনা সূত্রে খবর, কয়েকদিন ধরেই ভূস্বর্গে বড়সড় নাশকতার ছক কষছে জঙ্গিরা। কিন্তু সেই ছক ধরে ফেলেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সেখান থেকে খবর পেয়েই যৌথ অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী ও কাশ্মীর পুলিশ। জেহাদিদের অনুপ্রবেশের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে গতকাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের নানা জায়গায় চলছে চিরুনি তল্লাশি। এদিন কুপওয়ারের মাচিল ও তাংধর সেক্টরে জঙ্গিদের উপস্থিতির খবর পায় সেনা। রাত থেকে শুরু হয় এনকাউন্টার। জওয়ানদের সঙ্গে সংঘর্ষে ওই দুই জায়গায় নিকেশ হয়েছে তিন জেহাদি। এনিয়ে, এক্স হ্যান্ডেলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘গোয়েন্দা সূত্রে বেশ কয়েকজন জঙ্গির অনুপ্রবেশের খবর মিলেছিল। বুধবার রাত থেকে যৌথ অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী ও কাশ্মীর পুলিশ। খারাপ আবহাওয়ার সুযোগ নিয়েই অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল জঙ্গিরা। কিন্তু তাদের সেই ছক ভেস্তে দেওয়া হয়েছে। এখনও অভিযান চলছে।
এদিকে, বুধবার রাতে উপত্যকার রাজৌরি জেলার লাঠি গ্রামে তিন-চার জন জঙ্গির লুকিয়ে থাকার খবর পায় সেনা। শুরু হয় অভিযান। এখনও সেখানে জওয়ানদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলছে জঙ্গিদের। গোটা এলাকায় চলছে তল্লাশিও। রাজৌরির এনকাউন্টার নিয়ে সেনাবাহিনীর তরফে এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে, ‘বুধবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ রাজৌরির লাঠি গ্রামের বেশ কিছু জায়গায় জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর পাওয়া যায় গোয়েন্দা সূত্রে। তার পরই তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়।’
উল্লেখ্য, কাশ্মীরে ১৮ সেপ্টেম্বর, ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর ৩ দফায় ভোটগ্রহণ হবে। ফলাফল জানা যাবে ৪ অক্টোবর। এই নির্ঘণ্ট জানার পরই খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে ভূস্বর্গে। ভোটের লড়াইয়ের জন্য জোর কদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু এর মাঝেই উপত্যকা উত্তপ্ত করতে চাইছে জঙ্গিরা। লোকসভা নির্বাচনের আগেও জম্মু ও কাশ্মীরকে রক্তাক্ত করেছে জেহাদিরা। প্রাণ হারিয়েছেন সাধারণ মানুষ। শহিদ হয়েছেন জওয়ানরা। কিন্তু জঙ্গিদের পালটা জবাব দিয়ে সব পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে সেনা।
বলে রাখা ভালো, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে পাকিস্তান। ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ করিয়ে নাশকতার চেষ্টা করছে তারা। আর এক্ষেত্রে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে মদতের পাশাপাশি পাঞ্জাবের খালিস্তান জঙ্গিদেরও নানাভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। তাই চিনের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করে অস্ত্র ও মাদকও ভারতে ঢোকানো হচ্ছে। সম্প্রতি এক গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সন্ত্রাসবাদী হামলার লঞ্চিং প্যাডগুলো সক্রিয় করেছে পাক সেনা। সেখান থেকে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিরা ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।