স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ আগস্ট : গত ১৯ আগস্ট থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির কারণে ডিডাব্লিউএস -এর ৯৮ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে, বিদ্যুৎ নিগমের ট্রান্সফর্মার এবং বিদ্যুতিক তার নষ্ট হয়ে ২৫০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আরবান দপ্তরের অধীনে থাকা বাড়িঘর সহ স্টেট লাইট নষ্ট হয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। সোমবার বিকেলে মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান বিদ্যুৎ, নগরোন্নয়ন, পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং। তিনি জানিয়েছেন, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে বিভিন্ন জায়গার বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হবে।
তবে গোটা রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা ১০০ শতাংশ সংস্কার হতে পার এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানান অভিষেক সিং। তিনি জানান, বিদ্যুতের সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ জেলা এবং গোমতী জেলা। ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিক সিটি কর্পোরেশন লিমিটেডের মহকুমার অনুযায়ী বন্যায় দক্ষিণ জেলার বিলোনিয়ায় ৬০ শতাংশ, ঋষ্যমুখে ৬৭ শতাংশ, রাজনগরে ৯৮ শতাংশ, শান্তির বাজার এবং জুলাই বাড়িতে ২০ শতাংশ, বগাফায় ৮৯ শতাংশ, সাব্রুম পঞ্চায়েত এলাকায় ৬৫ শতাংশ, কাকড়াবনে ৭০ শতাংশ, অমরপুরের ৬৪ শতাংশ বিদ্যুতিক লাইন নষ্ট হয়েছে, এগুলো সংস্কারের জন্য কাজ চলছে। অপর থেকে অমরপুর, করবুক, যতন বাড়িতে আগামী দু দিনের মধ্যে বিদ্যুতিক সংস্কার পুরোপুরি সম্পন্ন হবে।
বিশালগড়, জম্পুইজলা, নলছড়ে ইতিমধ্যে ১০০ শতাংশ বিদ্যুতিক সংস্কার সম্পন্ন হয়ে গেছে। মেলাঘর, কাঠালিয়া, সোনামুড়া এবং বক্সনগরে আগামী দু দিনের মধ্যে বিদ্যুতি লাইন সংস্কার সম্পন্ন হবে। তিনি আরো জানান, উত্তর জেলা, ঊনকোটি জেলা, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা, খোয়াই জেলা এবং ধলাই জেলায় এখন পর্যন্ত পুরোপুরি বিদ্যুৎ সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। তিনি আরো জানিয়েছেন যেসব এলাকায় জল নেমেছে সেসব এলাকায় মানুষের বাড়ি ঘরে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি স্যানিটাইজেশন করা হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে সচিব জানান, পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরও জোর কদমে পানীয়জল সরবরাহ অক্ষুন্ন রাখতে নিরলস কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রকল্প সমূহের ক্ষতি হয়েছে। পুনরায় এগুলিকে সচল করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই এখন পর্যন্ত জলের উৎসগুলিকে সচল করা সম্ভব হয়েছে বলে সচিব শ্রী সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ত্রিপুরা জল বোর্ডের প্রকল্পগুলোও কার্যকর হচ্ছে।
শ্রী সিং জানান, খোলা জল পরিশোধনের জন্য নিয়ম অনুসারে জলে ফিটকিরির মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। তাতে জলের স্বাদ একটু অন্যরকম হলেও ভয়ের বা আতঙ্কের কিছু নেই। রাজ্যের বিভিন্ন নগর ও শহর এলাকায় এখনও ৯১টি ত্রাণ শিবির রয়েছে। সেগুলিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। নগর ও শহর এলাকার ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা রাজ্যে বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডের এম ডি বিশ্বজিৎ বসু, জল বোর্ডের সিইও রজত পন্থ, বিদ্যুৎ নিগমের জেনারেল ম্যানেজার স্বপন দেববর্মা এবং পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার শ্যামলাল ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন।