স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৪ জানুয়ারি। আগামী মাসেই চীনে শুরু হচ্ছে শীতকালীন অলিম্পিক। এর আগে নিজের ব্যক্তিগত স্মার্টফোন বাদ দিয়ে ‘বার্নার ফোন’ নিয়ে যেতে ক্রীড়াবিদদের অনুরোধ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ও প্যারাঅলিম্পিক কমিটি।
বার্নার ফোন হচ্ছে সস্তার মোবাইল ফোন যেটি সাময়িক ব্যবহারের জন্য কেনা হয় এবং ব্যবহারের পরপরই সাধারণত ফেলে দেওয়া যায়।চীনে থাকাকালীন সম্ভাব্য ডিজিটাল নজরদারি সম্পর্কে ক্রীড়াবিদদের সতর্ক করার জন্য গত বছর দুবার এই পরামর্শ পাঠানো হলেও এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। ওই বুলেটিনে বলা ছিল, “আপনার প্রতিটি ডিভাইস, যোগাযোগ, লেনদেন এবং অনলাইন ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।”
“আপনার ডিভাইসগুলোয় ক্ষতিকারক সফ্টওয়্যার ঢুকিয়ে দেওয়া হতে পারে যার জের টানতে হতে পারে চীন থেকে চলে আসার পরও।” ওয়াল স্ট্রিট জর্নালের প্রতিবেদন অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এমন সতর্কবাণী প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং নেদারল্যান্ডস।
কমিটির বিশেষ এই ভয় ভিত্তিহীন নয় বলেই উল্লেখ করেছে ভার্জ। এর আগে ২০১৯ সালে চীন গোপনে জিনজিয়াং অঞ্চল ভ্রমণকারী পর্যটকদের ফোনে স্পাইওয়্যার ইনস্টল করার চেষ্টা করেছে। অসম্ভব নজরদারীর আওতায় থাকা ওই অঞ্চলটি চীনের উইঘুর জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল। দেশটির মুসলিম জাতিগত সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর সেখানে কারাবাস এবং নির্যাতনের শিকার হওয়া নৈমিত্তিক বিষয়।
গবেষণা গ্রুপ সিটিজেন ল্যাব চীনের ‘মাই২০২২ অলিম্পিক’ অ্যাপটি পরীক্ষা করেছে এবং দেখা গেছে এটি নিরাপত্তা ত্রুটিতে পরিপূর্ণ। ফলে, এই অ্যাপটি ইনস্টল করলে এর ফাঁকফোকর ব্যবহার করে গোপনীয়তা লঙ্ঘন, নজরদারি এবং হ্যাকিং করা সম্ভব। অলিম্পিকে অংশগ্রহনকারী কর্মীদের এই অ্যাপটির ইনস্টল করা বাধ্যতামূলক করেছে চীন।
এর আগে ‘বেইজিং ২০০৮’ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের সময়েও মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ চীনগামী যে কোনো পর্যটকের জন্য একই ধরনের পরামর্শ দিয়েছিল। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। কারণ কোভিড-১৯ নিয়ে কড়াকড়ির অংশ হিসেবে চীন এ বছরের শীতকালীন অলিম্পিকে যাবতীয় বিদেশী দর্শক নিষিদ্ধ করেছে।ক্রীড়াবিদরা সম্ভবত তাদের মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভর করবেন তাদের বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য। এই কাজগুলো বার্নার ফোনে জটিল হতে পারে। পাশাপাশি, স্বল্পকাল ব্যবহার উপযোগী এই ফোনগুলোয় মোবাইল ডেটা, টেক্সটিং এবং কলিংয়ের সীমা নির্ধারিত থাকে।চীন অবশ্য একাধিকবার নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, ক্রীড়াবিদ এবং সাংবাদিকরা সে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে সেন্সরবিহীন অ্যাক্সেস পাবেন। তবে, দেশটি নির্দিষ্ট কোনো সাইট বা সেবা ব্লক করবে কিনা সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।