স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ আগস্ট : মরার উপর খাড়ার ঘা! শাসক দল সমর্থিত দুই শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে শুরু হয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি। ঘটনার সূত্রপাত দিনের মধ্যে একাধিকবার ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণ করার নাম করে পরিবর্তন হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের আইন কানুন। মর্জি মাফিক নিয়ম-কানুন বানিয়ে শহরে লাগু করে বরং সৃষ্টি করছে ট্রাফিক জ্যাম এবং বাড়ছে জনসাধারণের দুর্ভোগ। এরই মধ্যে আবার সরকার সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে বসে বৈঠক করে যেকোনো এক মনগড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে নিচ্ছে।
আর এতে পেটে লাথি পড়ছে যান শ্রমিকদের। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন নিয়ম-কানুন শহরের মধ্যে দেখা যায়। এরই মধ্যে শনিবার প্রতিবাদে শামিল হল ই রিক্সা এবং টমটম চালকরা। শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর পোস্ট অফিস চৌমুহনী – কামান চৌমুহনী পর্যন্ত কোন টমটম চালককে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এবং মোটর স্ট্যান্ড থেকে কামান চৌমুহনী পর্যন্তও যাতায়াত করতে দিচ্ছে না ট্রাফিক পুলিশ। বেরিকেট নিয়ে দাঁড়িয়ে টমটম চালকদের ঘুরিয়ে দিচ্ছে আর এম এস চৌমুহনী এবং জ্যাকসেন গেট দিয়ে। এরই প্রতিবাদে শনিবার সকাল ১১ টা নাগাদ পোস্ট অফিস চৌমুহনী এলাকায় রাস্তায় অবরোধ করে ই – রিক্সা এবং টমটম চালকরা। তাদের অভিযোগ, এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে না দেওয়ায় তারা যাত্রী নিয়ে বিপাকে পড়েছে। যাত্রীরা তাদের টমটমে ও রিক্সায় উঠতে চাইছে না। এ বিষয় নিয়ে শুক্রবার ট্রাফিক দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত এসপি -র সাথে কথা বলতে গেলে রাত আটটা পর্যন্ত তাদের বসিয়ে রাখা হয়।
কিন্তু তাদের সাথে দেখা করেনি এস পি। অপরদিকে তারা জানতে পারে শ্রমিক দরদী সংগঠন মজদুর মনিটরিং সেলের নেতা ইমাম হোসেনকে এসপি ডেকে নিয়ে টমটমের জন্য পোস্ট অফিস চৌমুহনী থেকে কামান চৌমুহনী পর্যন্ত রাস্তায় বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। তাই শ্রমিক বিরোধী এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পারায় রাস্তায় বসে পড়েছে টমটম ও ই-রিক্সা শ্রমিকরা। তখন আর মুখ লুকাতে না পেরে ইমান হোসেন বটতলা স্থিত কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসপির সাথে বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করেন। এবং কিছু শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামানোর ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে দাবি করেন ক্যামেরার সামনে। তিনি আরো বলেন সরকারকে কালিমা লিপ্ত করতে এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নাকি টমটম চালকদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি যখন জটিল আকার ধারণ করে তখন ট্রাফিক পুলিশ ও নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়। তড়িঘড়ি পশ্চিম থানায় অবরোধকারীদের মধ্যে নেতৃত্বে থাকা সকলকে ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ। সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিকদের সামনে সিদ্ধান্ত হয় আগামী সোমবার বিষয়টি নিয়ে পরিবহন দপ্তরের বৈঠক হবে। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয় আর দুমাস পর দুর্গাপূজা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এ ধরনের সিদ্ধান্তে টমটম ও ই -রিক্সা চালকদের পেটে লাথি মারার ছাড়া আর কিছু নয়। সোমবারের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। এবং তারা বলেন এসপি অফিসে যাদের ডেকে নিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তারা এই রিক্সা চালানোর সাথে জড়িত নয়। তাদের ভুয়া সংগঠন থেকে বের হয়ে ট্রাফিক জ্যাম এড়াতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে দাবি জানাই অবরোধকারীরা। পরবর্তী সময়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করার আগে অবরোধকারীরা জানায় এই রাস্তা দিয়ে চললে সবাই চলবে, না হলে সবার জন্য এই রাস্তা বন্ধ করতে হবে। সরকার শ্রমিকদের ভোটেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমনটাই বললেন ত্রিপুরা ই- রিক্সা সংঘের কর্মকর্তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।