Sunday, December 22, 2024
বাড়িখেলাকামিন্সের ‘কঠোরতম’ সমালোচককে একহাত নিলেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ

কামিন্সের ‘কঠোরতম’ সমালোচককে একহাত নিলেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,২৫ জুলাই: অস্ট্রেলিয়ার রাজ্য দল ভিক্টোরিয়ায় একসময় একসঙ্গেই খেলেছেন বেরি ও ম্যাকডোনাল্ড। বেরি একসময় ছিলেন দলের নেতৃত্বেও। পরে সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় বেরির কোচিংয়ে খেলার অভিজ্ঞতাও আছে ম্যাকডোনাল্ডের। সময়ের পরিক্রমায় ম্যাকডোনাল্ড এখন অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের কোচ। বেরি সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় দীর্ঘদিন কোচিং করানোর পাশাপাশি বিভিন্ন দায়িত্ব কাজ করেছেন বিগ ব্যাশ, পিএসএল ও আইপিএলে। অ্যাশেজের সদস্যমাপ্ত ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দুর্দশা দেখে টুইটারের একের পর এক কঠোর মন্তব্য করে যান বেরি। বিশেষ করে তৃতীয় দিনে শর্ট বলের যে কৌশল অস্ট্রেলিয়া বেছে নিয়েছিল, সেটি বেরির মতে ছিল ‘উন্মাদের মতো’ এবং ‘দেখার অযোগ্য।’ এছাড়াও বেরি কাঠগড়ায় দাঁড় করান প্যাট কামিন্সকে। এই অ্যাশেজ শেষে কামিন্সের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সব মিলিয়ে তাকে বলা হচ্ছে কামিন্সের ‘কঠোরতম’ সমালোচক। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট ছিল কামিন্সের ৫৪ ম্যাচের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বাজে টেস্ট। ২৩ ওভার বোলিং করে কোনো মেইডেন পাননি তিনি। ১২৯ রান খরচায় উইকেট নিতে পারেন ১টি। টেস্ট ক্যারিয়ারে এতট খরুচে ও নির্বিষ তিনি ছিলেন না আগে কখনোই। 

তার বোলিং ও শরীরী ভাষায় ক্লান্তি ও শ্রান্তির ছাপ দেখছিলেন অনেকে। নেতৃত্বের চাপ তার বোলিংয়ে পড়ছে কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। কামিন্স যদিও বলেন, ক্লান্তি বা চাপ নেই, স্রেফ একটি ম্যাচই বাজে গেছে। তবে বেরির মন্তব্যগুলোই তুমুল আলোচনার জন্ম দেয় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে। ওভাল টেস্টের আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ম্যাকডোনাল্ড বললেন, এই ধরনের মন্তব্যকে তারা পাত্তাও দেন না। “ড্যারেনের (বেরি) মন্তব্যগুলো নজরে এসেছে আমার। দারুণ ইন্টারেস্টিং ছিল সেসব। আমি যেটা বলতে পারি, নেতৃত্বের বিভিন্ন ধরন ও আকার আছে। যদি কেউ স্রেফ ট্যাকটিকসের জগতেই বুঁদ থাকতে চায়, তাহলে আমাদের কিছু কৌশল ও সেসবের বাস্তবায়ন করতে না পারা নিয়ে সমালোচনা করাটা ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য। কিন্তু সিরিজ শেষে অধিনায়ক পদত্যাগ করবে, এতদূর বলে ফেলাটা আসলেই কিছুটা বাড়াবাড়ি।” 

“কিছু মতামত আছে, যেগুলোকে আমরা সম্মান করি, কিছু মতামতকে একদমই করি না।” কামিন্সের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া ১১ টেস্ট জিতেছে, হেরেছে ৪টিতে। প্রথমবারের মতো জিতেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০২১-২২ অ্যাশেজে ঘরের মাঠে তার নেতৃত্বেই ৫ টেস্টে ৪টিতে জয়ের পর এবার ইংল্যান্ড সফরেও নিশ্চিত করেছে অ্যাশেজ ধরে রাখা। নেতৃত্বের ২০ টেস্টে তার উইকেট ৭৩টি। এই সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটে তার চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পেরেছেন কেবল সতীর্থ অফ স্পিনার ন্যাথান লায়ন (২২ টেস্টে ৯৭) ও ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড (১৭ টস্টে ৭৬)। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ব্যর্থতা ও কৌশলের অকার্যকারিতা মেনে নিতে অবশ্য আপত্তি নেই ম্যাকডোনাল্ডের। কৃতিত্ব দিলেন তিনি ইংলিশদেরও, বিশেষ করে ১৮৯ বলে ১৮২ রানের অসাধারণ খেলা ওপেনার জ্যাক ক্রলিকে। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান কোচ এটিও মনে করিয়ে দিলেন, এই টেস্টের আগে লম্বা সময় ধরে অস্ট্রেলিয়া দারুণ পারফর্ম করে আসছে। 

“অবশ্যই আমাদের পরিকল্পনাগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবব আমরা এবং পরিকল্পনার বাস্তবায়নে যাদেরকে বেছে নিয়েছিলাম, তাদের কথাও ভাবব। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের তিনটি দিন খুব হতাশাজনক ছিল, এটা আমরা অস্বীকার করছি না মোটেও। দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি।” “যেভাবে জ্যাক (ক্রলি) ক্রিজে গিয়ে আমাদের ওপর চাপ ফিরিয়ে দিয়েছে, প্রতিপক্ষকেও কখনও কখনও কৃতিত্ব দিতে হয়। কিন্তু এই দলটি গত ৮ মাসে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। ওই তিনটি দিন দিয়ে আমাদেরকে বিচার করা তাই হবে খুব রূঢ় ব্যাপার।” গত অ্যাশেজে ঘরের মাঠে দাপুটে জয়ের পর গত বছর পাকিস্তানে গিয়ে চমকপ্রদভাবে টেস্ট সিরিজ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। এরপর সিরিজ ড্র করে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে। দেশের মাঠে সিরিজ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এই বছর ভারত সফরে গিয়ে অবশ্য হেরে যায় তারা ২-১ ব্যবধানে। তবে ইংল্যান্ডে গিয়ে জিতে নেয় প্রথম দুই টেস্ট। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বৃষ্টির সৌজন্যে ড্রয়ের পর নিশ্চিত হয় তাদের অ্যাশেজ ধরে রাখা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য