স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৪ নভেম্বর : ভোটের আগেই নিরাপত্তা জোরদার করতে দাবি তুললেন ১৭ নং ওয়ার্ডের সিপিআইএম মনোনীত প্রার্থী ফুলন ভট্টাচার্যী। তিনি বুধবার দুপুরে আগরতলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ভোট প্রচারে বের হয়ে নিজ এলাকা থেকে কোন ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়নি।
মানুষের কাছ থেকে দারুণভাবে সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার বিকেল থেকে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা নিজ এলাকায় প্রত্যক্ষ করছেন। হেলমেট পরিধান করা কিছু যুবক বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য বলে আসছে। মঙ্গলবার বিকেলে অফিসার্স কোয়াটাস এলাকায় কিছু যুবক এলাকায় সাধারণ মানুষের বাড়ি ঘরে ঢুকে ভোট দিতে যাতে না যায় তার জন্য বলে এসেছে। পরবর্তী সময় রাতের বেলা ব্যানার্জি পাড়া এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য বলছে। আরো বলছে নাকি তারা সাধারণ মানুষের ভোট নাকি দিয়ে দেবে। ভোটকেন্দ্রে যেতে হবেনা। বিষয়টি সাথে সাথে পশ্চিম থানায় জানানো হলে, পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। কিন্তু পুলিশ কাউকে পায় নি। এমনকি বুধবার সকালে মেগনেট ক্লাব এলাকায় গিয়ে হেলমেট পরিধান করা সেইসব যুবক মানুষকে ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য বলে এসেছে। বিষয়টি সদর মহকুমার শাসক এবং পশ্চিম থানায় জানানো হয়। কারণ মানুষের মধ্যে ভোট দেওয়ার উৎসাহ রয়েছে। মানুষ যাতে নিরাপদে ভোট দিতে যেতে পারে এর ব্যবস্থা প্রশাসন থেকে করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জানানো হয়েছে সদর মহকুমার শাসক এবং পুলিশকে। এবং সাতজন যুবকের নাম দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। তারা সকলে বিজেপি কর্মী। পুলিশ যাতে তাদের বিরুদ্ধে আজকের মধ্যেই আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করে তার জন্য দাবী জানানো হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন বামফ্রন্টে পক্ষ থেকে আগেই দাবি তোলা হয়েছিল আসন্ন নির্বাচনে যাতে ওয়েব কাস্টিং এর ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু ওয়েব কাস্টিং -এর ব্যবস্থা করা হয়নি। প্রশাসন যাতে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে, তার জন্য প্রশাসনকে দায়িত্ব পালন করতে অবগত করা হয়েছে। আর প্রশাসন যদি দায়িত্ব না গ্রহণ করে তাহলে উনাকেই দায়িত্ব নিতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আগরতলা শহরে ভোটের জন্য নিরাপত্তা চাইতে হবে, তা আগে কখনো ভাবেন নি। এবং উনার এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও থাকেন। কিন্তু তারপরেও নিরাপত্তা নেই। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ফুলন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন আগে উৎসবের মেজাজে ভোট হতো রাজ্যে। রেকর্ড সংখ্যক ভোট পড়ত। ৯৪ শতাংশ ভোট পড়ার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু এখন যারা বাইক বাহিনী হয়ে কাজ করছে তাদের জন্য কষ্ট হয়। প্রশ্ন জাগে তাদের মা-বাবা কে ? বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বছরে ৫০ হাজার বেকার যুবক-যুবতী চাকরি হবে। কিন্তু চাকুরির প্রতিশ্রুতি এখন আর পালন করছে না সরকার। ফলে যুবসমাজ হতাশ। আর তাদের কাজ দিতে না পেরে এখন বাইক বাহিনীর কাজে লাগানো হয়েছে তাদের। আর যারা বেকার যুবকদের দিয়ে এগুলি করাচ্ছে তারা আসলে ভয় পেয়ে গেছে। জবরদস্তি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। এভাবে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। এমনকি বামফ্রন্টের সময় প্রকৃত গরিবদের সামাজিক ভাতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই ভাতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত বহু গরিব মানুষ। আসলে এইগুলি করে ত্রিপুরা রাজ্যের সংস্কৃতি বদলে দিতে চাইছে তারা। কিন্তু এগুলি করে কোন লাভ হবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করলেন ফুলন ভট্টাচার্যী। একটি প্রত্যাশাও পালন করিনি বর্তমান সরকার। ভয় পেয়ে গেছে তারা। তাই ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায় তার জন্য ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বাম নেত্রী পাঞ্চালি ভট্টাচার্যী। বিজেপি কোনো চ্যালেঞ্জ বা নির্বাচনের মুখোমুখি হতে চাইছে না। তাই এইগুলি করে পুর ভোটের ফায়দা নিতে চাইছে তারা। পূবোর্তন সরকারের সময় ভোট মানে উৎসব ছিল। রাজ্য সেই পরিবেশ এখন আর নেই। ত্রিপুরার পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। তাই বিজেপি মানুষকে ঢেলে ভোট দিতে দেবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন পাঞ্চালি ভট্টাচার্যী।