স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ জুলাই : ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে এক গর্ভবতী মহিলা সহ দুই নবজাতক শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। জানা গেছে কৈলাশহর রাংরুং গ্রাম পঞ্চায়েতের ইন্দিরা নগর এলাকার সাথী দেব মালাকার নামে এক গর্ভবতী মহিলাকে চিকিৎসক চিরঞ্জীব দেবকে নিয়মিত পরামর্শ নিন। মহিলার বেশ কয়েকদিন ধরেই শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ছিল। শুক্রবার গর্ভবতী মহিলাকে রিতি নিতি মেনে সাধ খাওয়ানো হয়।
কিন্তু এদিন দুপুরে ভাত খাওয়ার পর গর্ভবতী মহিলা সাথীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তারপর গর্ভবতী মহিলা কৈলাশহর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতে তার শারীরিক অবস্থা সূচনীয় হতে থাকে। হাসপাতালে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের পক্ষ থেকে কোন ধরনের পরিষেবা মিলে নি। দীর্ঘক্ষণ জীবন যুদ্ধে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন গৃহবধূ সাথী। সাথে সাথেই চিকিৎসকরা মৃত গর্ভবতী গৃহবধূকে প্রসূতি বিভাগের নিয়ে মৃত দুই নবজাতক শিশু প্রসব করায় বলে অভিযোগ পরিবারের লোকজনদের। আরো জানা যায় এদিন বিকাল সাড়ে চারটার নাগাদ সাথীকে হাসপাতাল ভর্তি করে বহুবার চিকিৎসক চিরঞ্জীব দেবকে ফোন করা হয়। তিনি আসছেন বলে শুক্রবার বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাটিয়ে দেন। চিকিৎসক চিরঞ্জীব দেবের দেখা পাওয়া যায় নি। যার ফলে স্বাস্থ্যকর্মীর চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসার কাজে হাত লাগায়নি। স্যালাইন দিয়ে শ্বাসকষ্ট রোগীকে ফেলে রাখা হয়। গৃহবধূ সাথীর যখন শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতি হয়, তখন স্বাস্থ্যকর্মীদের বহুবার ডাকাডাকি করা হয়েছে, বলা হয়েছে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য। আশ্চর্যের বিষয় হলো কোন স্বাস্থ্যকর্মী ছুটে আসেনি। আর মৃত্যুর পর এসেছেন চিকিৎসকবাবু বলে অভিযোগ। সুতরাং চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের চরম গাফিলতিতে অকালে ঝরে গেছে তিনটি প্রান বলে অভিযোগ।
এদিকে চিকিৎসক মৃতার পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ নাকচ করে বলেন হাসপাতালে কোন আই সি ইউ নেই। যার ফলে উন্নত পরিষেবা দিতে পারেন নি চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা। আরো বলেন রোগীর সংখ্যা এতটাই বেশি যে স্বাস্থ্যকর্মীদের এক রোগীকে সময় দেওয়া অসম্ভব। অর্থাৎ হাসপাতালে যে সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে তারা এত রোগীকে পরিষেবা দিতে পারেন না।
মৃত মহিলার আত্মীয়-পরিজনের উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত স্বাস্থ্য কর্মীদের উপর চড়াও হয়। ঘটনার খবর পেয়ে কৈলাশহর থানার বিশাল পুলিশ ও টি এস আর কর্মীরা ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।অভিযোগ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের গাফিলতির কারণেই তিনটি প্রাণ অকালে ঝরে গেছে। পাশাপাশি দিন চিকিৎসকের মন্তব্য ঘিরে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রোগীর অবস্থা যদি আশঙ্কা জনক বুঝতে পারেন তাহলে কেন উন্নত পরিষেবার জন্য পণ্য হাসপাতালে রেফার করা হয়নি। পাশাপাশি আরও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি সকলকে সঠিক সময়ের মতো পরিষেবা দিতে না পারেন, তাহলে মানুষের জীবন কোথায় সুরক্ষিত।