স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৫ জুলাই : একই যাত্রায় যেন পৃথক ফল। পশ্চিমবঙ্গে বিরোধীর আসনে রয়েছে বিজেপি। অপরদিকে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় রয়েছে সেই বিজেপি। দুই রাজ্যেই বিদ্যুৎ দপ্তরের আধুনিকিকরনের নামে লাগানো হচ্ছে গ্রাহকদের বাড়িতে স্মার্ট মিটার। প্রশ্নটা এই স্মার্ট মিটার নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের সদ্য প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেছেন স্মার্ট মিটারে অতিরিক্ত বিল আসে। স্মার্ট মিটারের নামে কাটা হচ্ছে ভোক্তাদের পকেট। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্যের ক্ষেত্রে বিজেপির অবস্থায় সম্পূর্ণ বিপরীতে।
ত্রিপুরা রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। আর রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী স্মার্ট মিটারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু বাস্তব বলছে অন্য কথা। রাজ্যের যেখানেই স্মার্ট মিটার লাগানো হচ্ছে, সেখানকার ভোক্তাদের অভিযোগ স্মার্ট মিটারে বেশি বিল আসছে। সম্প্রতি ধর্মনগরের বেশকিছু এলাকায় লাগানো হয় স্মার্ট মিটার। অভিযোগ এই স্মার্ট মিটার লাগানোর পর থেকে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল প্রতিমাসে পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ কিংবা তিন গুন আসছে। কিন্তু গ্রাহকদের এই অভিযোগ শুনার মতো কেউই নেই। নিরুপায় গ্রাহকরা এই অভিযোগ কার কাছে জানাবে বুঝতে পারছে না। কারন বিদ্যুৎ বিল দিতে গেলে দপ্তরের কর্মীরা গ্রাহকদের এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে পাঠিয়ে দেয়। টেবিলে টেবিলে ঘুরতে ঘুরতে গ্রাহকদের অবস্থা বেহাল।
তাই এইবার ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ধর্মনগর বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধর্নায় সামিল হয়। ধর্মনগর বিদ্যুৎ দপ্তরের এক গ্রাহক জানান ধর্মনগরের যে সকল এলাকায় স্মার্ট মিটার লাগানো হয়েছে, সেই সকল এলাকার গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিল আসছে। তাই ধর্মনগর বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার যে সকল অভিযোগ রয়েছে সেই সকল অভিযোগের সুরাহা না করা পর্যন্ত যেন ধর্মনগরের অন্য কোথাও স্মার্ট মিটার লাগানো না হয়। যে সকল গ্রাহকদের বাড়িতে স্মার্ট মিটার লাগানো হয়েছে, সেই সকল বাড়িতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার বিষয়ে ধর্মনগর বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিককে প্রশ্ন করা হলে তিনি দপ্তর থেকে লিখে দেওয়া বয়ান তোতা পাখির মতো পরে শুনান। এবং বলেন অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার বিষয়টি সঠিক নয়। পাল্টা তিনি দাবি করেন যারা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসার বিষয়ে অভিযোগ করছেন, তাদের বাড়িতে আগে যে মিটার ছিল সেইটি বন্ধ ছিল। যার কারনে তখন অনুমান করে বিল করা হতো। বর্তমানে স্মার্ট মিটার লাগানোর ফলে সঠিক বিদ্যুৎ বিল আসছে।ধর্মনগর বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিক দপ্তরের লিখে দেওয়া বয়ান আর নিজের মন গড়া কথা বলেছেন তা সহজেই বুঝা যায়।
কারন যারা এইদিন ধর্নায় সামিল হয়েছে সকলের বাড়ির মিটার আগে বন্ধ ছিল এইটা কি বিশ্বাস যোগ্য ? পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি বিদ্যুৎ বিল আসছে বলেই তো সমগ্র রাজ্যের গ্রাহকরা প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে। আবার পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতিও স্মার্ট মিটার নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। তার থেকে অনুমান করা হয় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগের কিছুটা হলেও সত্যতা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্মার্ট মিটার গুলি পুনঃরায় পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন বলে অভিমত অভিজ্ঞ মহলের। এখন দেখার বিদ্যুৎ দপ্তর স্মার্ট মিটারের স্বচ্ছতা প্রমানে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে।