স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৮ জুন : রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের উদ্বেগ প্রকাশের পর পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলেন প্রদেশ বি জে পি ডক্টর সেলের রাজ্য সভাপতি ডক্টর সুসান্ত রায়। বুধবার তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেন, কিছুদিন পূর্বে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একটি স্বাস্থ্য শিবিরে গিয়ে ২০১৮ সালের পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিষেবার অবনতি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সুপার স্পেশালিটি ব্লক ২০২২ সালের আগস্ট মাস থেকে ৯টি বিভাগ চালু আছে। যেগুলি হল কার্ডিওলজি, সিটিভিএস, নেফ্রোলজি, ইউরোলজি, প্লাস্টিক সার্জারি, নিউরোসার্জারি, জিএল সার্জারি, নিউরোলজি এবং গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি।
জিবি হাসপাতালে দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আইপিডি শয্যার সংখ্যা ৭২৭ থেকে বেড়ে ১৪১৩ হয়েছে। আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১১ থেকে বৃদ্ধি করে ২৩ করা হয়েছে। ডায়ালাইসিস ইউনিটের সংখ্যা ১২ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৯ হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পিজি আসন ২৫ থেকে বেড়ে ৮৯ হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইউ জি আসন ১০০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ হয়েছে। সুতরাং রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বর্তমানে অনেক উন্নত বলে দাবি করেন তারা। উল্লেখ্য, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার দাবি করেছিলেন, বর্তমানে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো হাসপাতালে গিয়ে রোগীর রক্তের প্রয়োজন হলে সেটা রোগীকে কিংবা তার পরিবারকেই জোগাড় করতে হচ্ছে। যারা রক্ত পাচ্ছে না তারা ভীষণ সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে। এর থেকে যেটা মনে হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে রক্তের জোগান নিশ্চিত করতে থেকে রক্তদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ সরকারি কর্মচারীদের দিয়ে যদি রক্তদান করা না গেলে রক্ত সংকটের সমস্যা সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, রাজ্যের হাসপাতাল গুলি ভালো চলছে না। পরিষেবার ক্ষেত্রে দিন দিন নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। কারণ হাসপাতালের সিনিয়র ডক্টররা রোগীদের সরাসরি দেখভাল করছেন না। এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করার পর ইন্টান ছেলেমেয়েদের দ্বারা হাসপাতালগুলি চালানো হচ্ছে। তারা একদিকে যেমন ১২ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করছে, অপরদিকে তাদের ছুটি নেই। এক প্রকার ভাবে তারা চরম অব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে সীমাবদ্ধ অভিজ্ঞতাতে দায়িত্ব পালন করছেন। এতে রাজ্যের জিবি, আইজিএম হাসপাতাল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেন কিসের ভিত্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি ও অগ্রগতি হচ্ছে সেটা নজরে আসছে না। কারণ সরকারের বক্তব্যের সাথে বাস্তব অভিজ্ঞতার কোন মিল নেই। তারপরও সরকার যদি এ ধরনের সংগতিহীন বক্তব্য করে তাহলে এই সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে বিক্ষোভ আরও বেশি বাড়বে। এগুলো বন্ধ হওয়া উচিত। ডাক্তার, নার্সের ডিগ্রি নিয়ে ছেলেমেয়েরা বসে আছে। তাদের নিয়োগ করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল থেকে সব ওষুধ দেওয়া সম্ভব না হলেও কিছু ওষুধ রোগীদের দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আর এইগুলি করা না গেলে সরকারের অস্তিত্বের ভিত্তি কি প্রশ্ন তুলেন? তবে বলা বাহুল্য, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ত্রিপুরার চারবারের মুখ্যমন্ত্রী।