স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৪ জুন : সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনে সংখ্যালঘুদের উপর অকথ্য নির্যাতন ও আক্রমনের ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রাণরক্ষার তাগিদে গনা কয়েক মানুষ সীমান্ত ডিঙ্গিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের বাঙালী বিদ্বেষী চক্রান্তকারীরা আবার নতুন উৎসাহ পেয়েছে। গুজরাটে সরকারী উদ্যোগে বুলডজার চালিয়ে বাঙালি পরিবারের বাড়ি ঘর, দোকানপাট ভেঙ্গে চুড়মার করে তাড়িয়ে দেয়।
জানা যায় তারা পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময় ধরে স্থায়ীভাবে গুজরাটে থেকে ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছিল। একই ধরণের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ওড়িষ্যায়। সেই রাজ্যে কর্মরত বাঙালী পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে ঘটেছে এই ঘটনা। শুধু গুজরাট, ওড়িষ্যাই নয়, বিগত কয়েক বছর ধরে বিহার, মহারাষ্ট্র, দিল্লীসহ দেশের সর্বত্র বিভিন্ন অজুহাতে বিদেশী, বহিরাগত, বাংলাদেশী ইত্যাদি অভিধায় ভূষিত করে বাঙলীদেরকে আক্রমণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে সাংবিধানিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
অসম, ত্রিপুরা সহ সমগ্র উত্তরপূর্বাঞ্চলে বাঙালীদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। উত্তর পূর্বাঞ্চলকে সম্পূর্ণ বাঙালীশূন্য করার লক্ষ্যে পঞ্চাশের দশক থেকে অসমে উগ্র অসমিয়াদের দ্বারা ‘বঙ্গাল খেদা’ আন্দোলন ও ৮৩ সালে নেলীর বাঙালী গণহত্যা সংঘটিত হয়। তেমনি ত্রিপুরাতে বাঙালী বিদ্বেষী ‘সেংক্রাক পার্টির মাধ্যমে প্রথমে পঞ্চাশের দশকে বাঙালী হত্যা, গুমকান্ড সংঘটিত করার পর ৮০ সালে স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষে সবচেয়ে বড় বাঙালী গণহত্যা সংঘটিত করা হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার আমরা বাঙালি রাজ্য কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ কর্মসূচি সংঘটিত করা হয়। দাবি জানানো হয়, স্বাধীনতার জাতীয় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ও বাঙালীদেরকে উদ্বাস্তু পঞ্জাবীদের মতো পূর্ণক্ষতিপূরণ দিয়ে পুনর্বাসন দেওয়া, বাঙালী রেজিমেন্ট গঠন সহ বাংলার অঞ্চলগুলি নিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা, ভারতের বুকে বাংলাদেশী, বিদেশী বলে বাঙালী বিতাড়নের সমস্ত উদ্যোগ বন্ধ করা।