Sunday, July 27, 2025
বাড়িরাজ্যভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী বাস পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী বাস পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১০ জুন : বহু প্রতিক্ষার পর আগরতলা – কলকাতা ভায়া – ঢাকার রয়েল মৈত্রী বাস সার্ভিস পরিষেবার সূচনা হয় শুক্রবার। আখাউড়া ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাস সার্ভিস পরিষেবা আনুষ্ঠানিক শুভ সূচনা করেন পরিবহন মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। এদিন তিনি প্রদীপ প্রজ্বলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। মন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে মার্চ মাসের পর কোভিড অতিমার জন্য দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী বাস পরিষেবা বন্ধ ছিল। গত ২৮ এপ্রিল বাস সার্ভিস চালু করা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

কিন্তু প্রশাসনিক ত্রুটির কারণে বাস সার্ভিস চালু হয়নি। শুক্রবার সমস্ত ত্রুটিমুক্ত করে বাস সার্ভিসটি চালু হয়। সরকার দুই দেশে বাস সার্ভিস পরিষেবা চালু করার জন্য অত্যন্ত আন্তরিক ছিল। কারণ দুই দেশের সংস্কৃতির মধ্যে মিল রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো বাস সার্ভিস পরিষেবাটি চালু হয়েছে বলে জানান তিনি। শুধু বাস পরিষেবার মধ্যেই যাত্রী পরিষেবা সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছে না সরকার। তবে দুই দেশের যাত্রীদের চলাচলের সময় পররাষ্ট্র নীতি মেনে চলতে হবে। যাত্রী পরিষেবার ক্ষেত্রে যদি কোন ত্রুটি থাকে তাহলে চিঠি লিখে পরিবহন দপ্তরে অভিযোগ জানাতে পারবে বলে জানান মন্ত্রী। এ ধরনের পরিষেবার চালুর ফলে বিদেশের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যিক সবদিকেই উন্নয়ন হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন প্রণজিৎ সিংহ রায়। ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের রেল, জাহাজ এবং উড়ান পরিষেবা চালু করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। সহসাই আগরতলা এম বি বি বিমানবন্দর থেকে ঢাকা চিটাগাং উড়ান পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকারের। দু’দেশের মধ্যে শুধু সুসম্পর্ক যাতে অব্যাহত থাকে সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে মানুষের পরিষেবার দিকে নজর দিচ্ছে সরকার। মন্ত্রী এদিন পূর্বতন সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, বিগত দিনে টি আর টি সি লাভের মুখ দেখছিল না। প্রায় এক কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে টি আর টি সি-র কর্মীদের প্রতি মাসে বেতন দিতে হতো। তাই সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেই ক্ষতির জটিলতা কাটিয়ে উঠছে টি আর টি সি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত টি আর টি সি -র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিন বাদে দুই দেশের মধ্যে বাস পরিষেবা চালু হয়েছে। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে, কিন্তু দুই দেশের মধ্যে কোন ভাগ রয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ তিনি দেশের মানুষের মধ্যে সুভ্রাতৃময় সম্পর্ক রয়েছে। বিদেশের মানুষ যাতায়াতের ফলে পর্যটন সহ চিকিৎসা দিকে অনেকটাই লাভান্বিত হবে ভারত বলে জানান তিনি। বাম আমলে টিআরটিসি দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা ছিল। সেই জটিলতা কাটিয়ে বর্তমান সরকারের আমলে আমূল পরিবর্তন হয়েছে রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থা এবং টি আর টি সি -র। সরকারের মূল উদ্দেশ্য দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা বলে জানান মেয়র দীপক মজুমদার।

বহু প্রতিক্ষার পর বাস সার্ভিস চালু হওয়া মৈত্রীর প্রতীক। এর জন্য বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

রেয়েল মৈত্রী বাসটি ৪০ আসনের। শুক্রবার পরিষেবা পুনরায় চালু হওয়ার প্রথম দিন ২৮ জন যাত্রী কলকাতা এবং বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে আখাউড়া চেকপোস্ট থেকে রওয়ানা হয়েছেন। এর মধ্যে ২২ যাত্রী ভারতের এবং ৬ জন যাত্রী বাংলাদেশ নাগরিক। ১৯ ঘণ্টায় বাসটি আগরতলা থেকে কলকাতা গিয়ে পৌঁছবে। কলকাতার যাত্রীভাড়া ২২০০ টাকা এবং ঢাকার যাত্রী ভাড়া ৯০০ টাকা। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকী ছয়দিন বাস পরিষেবা মিলবে দুই দেশের যাত্রীর। মন্ত্রী এবং অন্যান্য অতিথিরা এদিন সবুজ পতাকা নেড়ে বাসটি শুভযাত্রা করায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!