স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৮ মে :নিজ সন্তানকে শ্বশুরবাড়ি থেকে আনতে গিয়ে দেবরের দ্বারা জুতো পেটার শিকার হয়ে আহত হলেন এক গৃহবধূ। গৃহবধূর নাম পায়েল শীল। অভিযুক্ত দেবরের নাম সুরজিৎ বিশ্বাস। ঘটনা গৃহবধুর শ্বশুরবাড়িতে। গৃহবধূর শশুরবাড়ি সিধাই মোহনপুর বিজয়নগর এলাকায়। গৃহবধূ জানান, নয় বছর আগে সিধাই মোহনপুর বিজয়নগর এলাকার প্রদীপ বিশ্বাসের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দেবর গৃহবধূর উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। একবার তাকে পুড়িয়ে হত্যা করারও চেষ্টা করেছে।
তাদের নয় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শশুর বাড়ির লোকজনদের অশান্তির কারণে গৃহবধূ গত কয়েক মাস ধরে আগরতলা স্থিত যোগেন্দ্র নগর এলাকায় বাপের বাড়িতে রয়েছেন। এর মধ্যে গত কয়েকদিন আগে শশুর বাড়ির লোকজন গৃহবধূকে কীর্তনে নিয়ে যাবে বলে নয় বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে যায় তাদের বাড়িতে। তারপর থেকে গত কয়েকদিন ধরে শিশুদের খোঁজ মিলছে না। গৃহবধূ তার শ্বশুরবাড়িতে ফোন করলে কন্যা সন্তানের সাথে কথা পর্যন্ত বলতে দিচ্ছে না শ্বশুরবাড়ি লোকজন। শনিবার দুপুরে নিজের সন্তানকে আনতে শ্বশুরবাড়িতে যান গৃহবধূ। তখন দেবর সুরজিৎ বিশ্বাস এবং তার স্ত্রী মিলে প্রচন্ডভাবে মারধর করে গৃহবধূর মাকে। তখন গৃহবধূ এগিয়ে গেলে তাকে পর্যন্ত জুতো পেটা করে এবং কিল, ঘুষি, লাথি দেয় অভিযুক্ত দেবর এবং তার স্ত্রী।
শেষ পর্যন্ত গুরুতর আহত অবস্থায় আগরতলা ফিরে এসে ডাক্তার দেখান গৃহবধূ এবং তার মা। তারপর পূর্ব আগরতলা থানায় পুলিশের সহযোগিতা নিতে এবং মামলা করতে আসে আক্রান্ত গৃহবধূ এবং তার বাপের বাড়ি লোকজন। তখন পুলিশ তাদের জানিয়ে দেয় পূর্ব আগরতলা থানা থেকে কোনো রকম সহযোগিতা করতে পারবে না। মামলা করতে সিধাই মোহনপুর থানায় যাওয়ার জন্য বলে দেয়। শেষ পর্যন্ত থানার বাইরে বের হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আক্রান্ত গৃহবধূর স্বামীর সেলুনের দোকান রয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই অভিযোগ তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী যাতে প্রশাসনিক সহযোগিতা করে তার সন্তানকে ফিরিয়ে দেন তার কাছে। তবে প্রশ্ন হল সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা এবং সহযোগিতার জন্যই মহিলা থানা খুলেছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে যদি মহিলারা সহযোগিতাই না পায় তাহলে সেই থানার পুলিশকর্মী থাকা আর না থাকা সমান। কারণ মামলা পূর্ব মহিলা থানা থেকে করা না যেতেই পারে, কিন্তু পুলিশের সহযোগিতা করার প্রয়োজন ছিল থানা থেকে। সেটা না করে কিভাবে দায়ভার এড়িয়ে গেলেন সেটাই প্রশ্ন পূর্ব মহিলা থানার পুলিশ কর্মীদের উপর।