স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৯ এপ্রিল : পুলিশ কর্মী কর্তৃক আক্রান্ত মহিলা। অভিযুক্ত পুলিশ ছাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার বিশালগড় থানা ঘেরাও করে আক্রান্ত মহিলার পরিবার। প্রতিবেশী এক অসহায় গরিব মহিলাকে সুযোগ বুঝে শ্লীলতাহানি করে এবং মহিলা প্রতিবাদ করলে পরে ওই পুলিশ কর্মী ও তার স্ত্রী এসে বেধড়কভাবে মাটিতে ফেলে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয় মানুষজন এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে চাপে পড়ে বিশালগড় থানার পুলিশ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী সাব্বির হোসেন ও তার স্ত্রীকে থানায় নিয়ে আসলেও সন্ধ্যার সময় তাদের দুজনকে ছেড়ে দেয়। এ নিয়ে ছি:ছি রব পড়ে যায়। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর কেন তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হলো তার তদন্তে গিয়ে জানা যায় পুলিশ ফ্রেন্ড নামে এক বয়স্ক দালালের হাত ধরে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় অভিযুক্তকে। অভিযুক্ত সাব্বিরকে ছাড়িয়ে নিতে ওই বয়স্ক দালাল পুলিশের চেম্বারে গিয়ে পায়ের উপর পা তুলে পুলিশের মাথায় লবণ রেখে সাব্বিরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। আর এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষ স্থানীয় লোকজন খেপে যায়।
অভিযুক্ত পুলিশকর্মী সাব্বিরকে গ্রেফতারের দাবিতে বিশালগড় থানায় ধর্নায় বসতে হয়েছে। যেহেতু দালাল মারফত সাব্বিরকে থানা থেকে ছেড়ে দিতে হয়েছে তাই পুলিশের সঙ্গে ওই দালালের পাক্কা কথা হয়েছে অতিরিক্ত চাপে পড়লে পুলিশ মামলা নিলেও যাতে কোন ভাবে তাকে গ্রেপ্তার না করে। যতদূর জানা গেছে পুলিশ প্রাণপণ চেষ্টা করছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে গ্রেপ্তার না করে নোটিশ ইস্যু করে তাকে বাঁচিয়ে দেওয়ার। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পারিবারিক কোনো এক বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘনিয়ামাড়া পঞ্চায়েত টিলা এলাকার পুলিশ কর্মী ছাব্বির হোসেন ও তার সহধর্মীনে মিলে পার্শ্ববর্তী এক গৃহবধূকে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধোর করেন। আক্রান্ত গৃহবধূকে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে আগরতলা জিবিপি হাসপাতালে রেফার করে।
এদিকে বিশালগড় থানার পুলিশ অভিযুক্ত ছাব্বির হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। উক্ত বিষয়ে বিশালগড় থানায় মামলা পাল্টা মামলা হয়। বিশালগড় থানায় ছাব্বির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে পুলিশ যার মামলা নাম্বার 28/2025 BLG। অভিযুক্তকে মঙ্গলবার গভীর রাতে বিশালগড় থানা থেকে জামিনে ছেড়ে দেন বিশালগড় থানা পুলিশ। এদিকে অভিযুক্তকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার খবর পেয়ে জিবিপি হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত গৃহবধূ এবং তার পরিবারের সদস্যরা বিশালগড় থানা মূল ফটক সামনে বসে পড়ে এবং থানা ঘেরাও করেন। তাদের দাবি পুলিশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছাব্বির হোসেন ওরফে লিটন মজুমদারকে ছেড়ে দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিশালগড় থানার ওসি সঞ্জিত সেন। উক্ত বিষয়টি নিয়ে আক্রান্ত মহিলার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এদিকে থানার মূল ফটকের সামনে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন আক্রান্ত গৃহবধূ। তাকে দ্রুত বিশালগড় মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় অগ্নিনির্বাপক দপ্তরে কর্মীরা। মুহূর্তের মধ্যে থানা চত্বরের সামনে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।