স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ মে : বৃহস্পতিবার কমলপুর মহকুমার কচুছড়া থানার ডাববাড়ি গ্রামে যুবেন্দ্র পাড়ায় জমি সংক্রান্ত বিবাদকে কেন্দ্র করে রজনী দাস, সন্তোষ দাস, প্রিয়তোষ দাস, ও বিলাসী দাসের উপর লাঠি, দা নিয়ে হামলা চালায় ডাববাড়ি গ্রামের বিকাশ দাস ও ধীরেন্দ্র দাসের নেতৃত্বে একদল ।
ধানের জমির আইল কাটা নিয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় একই পরিবারের আহত চারজনকে ধলাই জেলার কুলাই হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে এদের মধ্যে তিন জনকে কুলাই হাসপাতাল থেকে জিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এরা হলেন, রজনী দাস, প্রিয়তোষ দাস এবং বিলাসী দাস। এইদিকে জীবী হাসপাতালে আনার পথে মৃত্যু হয় গৃহকর্তা রজনী দাসের। পরে জিবিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় প্রিয়তোষ দাস, ও বিলাসী দাসের । একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে এলাকায়। ঘটনা স্থলে যায় কচুছড়া থানার পুলিশ ।
গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে। এদিকে শুক্রবার ময়না তদন্তের পর মৃতদেহ গুলি নিয়ে যাওয়া হয় কচুছড়া থানার ডাববাড়ি গ্রামে যুবেন্দ্র পাড়ায়। মৃতদেহ পৌছানোর আগেই কমলপুর মহকুমার পুলিশ আধিকারিক সব্যসাচী দেবনাথ , কচুছড়া থানার ওসি বিদ্যা দেববর্মা সহ বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। যাতে করে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। নিহত প্রিয়তোষ দাস বিজেপি-র অঞ্চল নেতা ও ডাববাড়ি পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। ফলে আমবাসা, সালেমা এবং ডাববাড়ি বিজেপি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় মরদেহ। স্থানীয় নেতা, কর্মীরা পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়। শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটা নাগাদ রজনী দাস , বিলাসী দাস ও ছেলে প্রিয়তোষ দাসের মরদেহ ডাববাড়ি নিজ বাড়িতে আনা হয়। সেখানে সালেমা, কচুছড়া ও ডাববাড়ির হাজার হাজার মানুষ শেষ দেখা দেখার জন্য ভীড় জমায়। যে জমি নিয়ে তিনজন খুন করা হয়েছে সেই জমিতে তিন জনের শেষকৃত্য সম্পন্ন ব্যবস্থা করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ধর্মনগর থেকে ছুটে যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক পরিমল দেববর্মা সহ জেলা নেতৃত্ব। তিন জনের মরদেহে শ্রদ্ধা জানান তিনি। কচুছড়া থানার ওসি বিদ্যা দেববর্মা জানায় এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী চারজন কুলাই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানায় পুলিশ। মোট ১১ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার তিন জনের নাম হল দিলীপ দাস ও তার দুই ছেলে প্রসেনজিৎ দাস ও অমল দাস । নিহতের আত্মীয় জানায় এভাবে মারধোর করবে তা আগে আঁচ করতে পারেননি তারা। এই ঘটনার পেছনে বীরেন্দ্র দাস ও তার মামা রমণী দাসের হাত রয়েছে। দুজনেই সিপিএম নেতা। এদিকে বীরেন্দ্র দাস টি এস আর-এ কর্মরত। তারাই আক্রমণ করার ইন্ধন যোগায়। মামলা করার অর্থ রাশি তারাই যোগান দেবে বলে জানান আত্মীয়। এদিকে জানা গেছে এই ঘটনায় অভিযুক্ত বিকাশ দাস , স্বাগতম দাস , অজয় দাস ও ধীরেন্দ্র দাস ধলাই জেলার কুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়া হলেই পুলিশ গ্রেপ্তার করবে। বাকী চার অভিযুক্ত এখনো পলাতক।