স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৫ এপ্রিল : তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে ১৪ মাসের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, হাসপাতালের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের উদাসীন মনোভাবের ফলেই অকালে ঝরে গেল শিশুটির জীবন। অনুজ দেববর্মা নামে এক শিশুকে গুরুতর শ্বাসকষ্ট নিয়ে অম্পি নগর হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যা ৮ টা ১৫ মিনিট নাগাদ তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে রেফার করা হয়।
শিশুটির পিতা বিশ্বজিৎ দেববর্মার অভিযোগ, হাসপাতালে উপস্থিত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. উত্তম কুমার বর্মনের তত্ত্বাবধানে প্রায় এক ঘণ্টা চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করলেও চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। হাসপাতালে দুইজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলেও, ডা. উত্তম কুমার বর্মন তাঁদের কাউকেই পরিস্থিতি জানিয়ে পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। ফলে চিকিৎসা বিলম্বিত হয় এবং এক পর্যায়ে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। শেষে রেফার করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও, পরিবার আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আগরতলার জিবি হাসপাতালে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। হাসপাতালে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের আগমনের আগে মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে শিশুর মরদেহ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন চিকিৎসক। যা এই মৃত্যুকে ঘিরে সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তোলে। স্থানীয়দের মতে, হাসপাতালের দুই শিশু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একজন ডা. প্রণয় দাস হাসপাতালের কোয়ার্টার কমপ্লেক্সেই অবস্থান করেন এবং অন্যজন, ডা. সুকন্যা দাস, নিজের সুবিধামতো সময়েই হাসপাতালে উপস্থিত হন। অভিযোগ উঠেছে, ডিউটি সময় বাদে তাঁকে স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে বাণিজ্যিক চিকিৎসা পরিষেবা দিতে দেখা যায়।
এই ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকের বক্তব্য শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে শিশু থেকে আনা হয়েছে হাসপাতালে। তারপর যথারীতি চিকিৎসা শুরু করা হয়। পরবর্তী সময়ে শিশুদের অবস্থা আরো বেশি আশঙ্কা জনক হওয়ার পর সাথে সাথে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা হয়। কিন্তু শেষ হতে কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এখন দেখার বিষয়, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তেলিয়ামুড়া বিধায়িকা কল্যাণী সাহা রায় কী পদক্ষেপ নেন এবং হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিসেবা উন্নয়নের জন্য কী ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।