স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৪ এপ্রিল : বিজেপি দল পরিচালিত কৈলাসহর পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে উন্নয়ন বিরোধী বলে প্রকাশ্যেই মন্তব্য করলেন খোদ কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায়। কৈলাসহর পুর পরিসদ এলাকায় তথা গোটা কৈলাসহর শহর এলাকায় বিজেপি পরিচালিত কৈলাসহর পুর পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ চলার পরও পুর পরিষদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায় জানান যে, এতসব উন্নয়নের মধ্যে শহর এলাকায় শিশুদের জন্য এবং মহিলাদের জন্য টয়লেট নির্মানে বাঁধা দিচ্ছেন খোদ কৈলাসহর পুর পরিসদের ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে।
এই বাঁধাদানের মাধ্যমে ভাইস চেয়ারম্যান গোটা শহরের মহিলাদের অপমান করছেন বলে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রকাশ্যেই জানান কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায়। শুক্রবার কৈলাসহর পুর পরিসদের উদ্যোগে পুর পরিষদের কনফারেন্স হলঘরে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান তিনি। এই সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৈলাসহর পুর পরিষদের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার প্রদীপ সরকার, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ অফিসার বিশ্বজিত দাস, পুর পরিষদের কাউন্সিলর জয়দ্বীপ দাস, সিদ্ধার্থ রায়, মানষি রায় এবং পুর পরিষদের টাউন সুপারভাইজার মনিষ দাস। সাংবাদিক সম্মেলনে পুর পরিষদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায় জানান যে, তিনি পুর পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছেন চার বছর হয়েছে। এই চার বছর সময়কালে কৈলাসহর পুর পরিষদের বিভিন্ন এলাকায় নতুন পাকা রাস্তা, সি.সি রোড, ড্রেন, পাবলিক টয়লেট, পুকুর খনন, বেকার শেড, রাস্তা সংস্কার, অফিস বিল্ডিং, পার্ক, পুকুর সংস্কার, বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়া ইত্যাদি নানান উন্নয়ন মূলক কাজ হয়েছে।
এবং ধারাবাহিক সেসব কাজ চলছেও।এতসব উন্নয়ন মূলক কাজ হলেও খোদ কৈলাসহর শহরে মহিলাদের জন্য কোনো ধরনের টয়লেট নেই। সেই কথা চিন্তা করে বিগত ২০২৪সালে বারো জুলাই কৈলাসহর পুর পরিসদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায় এবং ভাইসা চেয়ারম্যান নীতিশ দে-এর উপস্থিতিতে এক সভায় লিখিত ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো যে, কৈলাসহর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে টয়লেট নির্মান করা হবে। সেই সিদ্ধান্তের পর, সাম্প্রতিক কালে প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পে কৈলাসহর শহর এলাকায় শিশু এবং মহিলাদের জন্য উন্নত মানের ছয়টি পিংক টয়লেট এসেছে। সম্পুর্ন কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় একেকটি পিংক টয়লেট নির্মানে প্রায় সাড়ে আট লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। যথারীতি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছয়টি পিংক টয়লেট নির্মানের কাজ শুরুর পর শহরের লায়ন্স ক্লাবের পাশে কার্গিল কর্নারে পিছনে পিংক টয়লেট নির্মানে বাঁধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন খোদ কৈলাসহর পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে এবং কৈলাসহর মন্ডলের সভাপতি প্রীতম ঘোষ বলে জানান পুর পরিষদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায়। চেয়ারম্যান আরও জানান যে, কার্গিল কর্নারে পিংক টয়লেট নির্মান করতে তিনি রাজি ছিলেন না, কিন্তু ২০২৪ সালের বারো জুলাই কৈলাসহর পুর পরিষদের বৈঠকে ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে নিজেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন কার্গিল কর্নারে টয়লেট নির্মান করার জন্য। ভাইস চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ী শহরের কার্গিল কর্নারে টয়লেট নির্মানের কাজ শুরু হয়েছিলো।
অথচ, টয়লেট নির্মানের কাজ শুরুর পর কৈলাসহর মন্ডলের সভাপতি প্রীতম ঘোষ এবং পুর পরিসদের ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে পুর পরিসদের কাউকে কিংবা প্রশাসনের কাউকে কিছু না বলে টয়লেট নির্মানের কাজ বন্ধ করে দিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়ে দেন যে, কার্গিল কর্নারে অবৈধভাবে টয়লেট নির্মান করা হচ্ছে এবং ভাইস চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে এই কাজ করা হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে পুর পরিসদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায় জানান যে, ২০২৪সালের বারো জুলাই পুর পরিসদের কনফারেন্স হলঘরের যে বৈঠকে লিখিতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো যে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় এবং শহরের কার্গিল কর্নারে টয়লেট নির্মান করা হবে তাতে পুর পরিষদের রেজিস্ট্রার খাতায় ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে নিজেও স্বাক্ষর দিয়েছেন। সেই রেজিস্ট্রার খাতাও সাংবাদিক সম্মেলনে সবাইকে দেখান চেয়ারম্যান। তাছাড়াও চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায় জানান যে, পুর পরিসদের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে এবং বিভিন্ন কাজে বাঁধা প্রদান করেন স্থানীয় মন্ডল সভাপতি। সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রকাশ্যেই নাম ধরেই মন্ডল সভাপতি প্রীতম ঘোষ এবং পুর পরিসদের ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে-এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পুর পরিসদের চেয়ারম্যান চপলা রানী দেবরায়। এভাবে মন্ডল সভাপতি প্রীতম ঘোষ এবং পুর পরিসদের ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে উন্নয়ন মূলক কাজে বাঁধা দেওয়ায় গোটা কৈলাসহর শহরের শহরবাসীরা ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে এবং মন্ডল সভাপতি প্রীতম ঘোষকে ছিঃ ছিঃ করছেন।