স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৪ এপ্রিল : দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা। সরকারকে দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সিবিআই তদন্তের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা বলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা। তিনি বলেন, রাজ্যের শাসক দল এবং সরকার পুরোপুরি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। মন্ত্রী বিধায়ক থেকে শুরু করে বিজেপি নেতৃত্ব যেভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন তা নিয়ে ধারণা করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নেবেন।
কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা অধিবেশনে এই বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে বিরোধীদলের বেঞ্চকে বিভিন্ন ভাবে দাবিয়ে রাখা হয়েছে এবং আলোচনার করার সময় পর্যন্ত বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাজস্ব দপ্তরের দুর্নীতি নিয়ে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন যখন বিধানসভা অধিবেশনে বলার চেষ্টা করেছিলেন তখন ট্রেজারি বেঞ্চ সহ অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন নানাভাবে বাধা দিয়ে কথা বলার সুযোগ দেননি। পরবর্তী সময় বিধায়ক সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এডিশনাল সেক্রেটারিকে চিঠি লিখেছিলেন বর্তমান পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ডঃ বিশাল কুমার। তিনি সেই সময় সিপাহিজলা জেলার জেলাশাসক ছিলেন। চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন সিপাহীজলা জেলার ১৪০০ কানি জমি নিয়ে চলছে প্রতারণা, যার মূল্য ৫০০ কোটি টাকার অধিক। বিশেষ করে জমিগুলি কোন তথ্য ছাড়াই স্থানান্তর করা হচ্ছে। বিশেষ করে যাদের নামে জমি হস্তান্তর করা হচ্ছে তারা জমির প্রকৃত মালিকদের পরিচিত নয়।
তিনি আরো লিখেছেন বহু খাস জমি, জোত জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। খাস জমি বরাদ্দকৃত জমি হিসেবে দেখানো হয় এবং তারপর অনুমতি ছাড়াই বরাদ্দকৃত জমি জোত জমিতে রূপান্তর করা হচ্ছে। তিনি এই বিষয় গুলো উল্লেখ করে চিঠি দেওয়ার পর ১২ ই অক্টোবর তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়। শুধু এই দুর্নীতি নয় আরো বহু দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে বিজেপি সরকারের গত কয়েক বছরে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি কেলেঙ্কারি দুর্নীতি, ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে ঘুষ নিয়ে পাস করে দেওয়ার দুর্নীতি, এবং জল জীবন মিশনের নাম করে একটা বড় পরিমাণে দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। এছাড়াও ধর্মনগর, পানিসাগর ব্লকের দুর্নীতি অভিযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। এতগুলি দুর্নীতি সংগঠিত হওয়ার পরেও রাজ্যের হাইকোর্টের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে সমুঠো মামলা নেওয়া হয়নি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি অবিলম্বে রাজস্ব দপ্তরের বড় দুর্নীতির বিরুদ্ধে যাতে সিবিআই তদন্ত করা হয়। তিনি আরো বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই তদন্ত দিয়ে উনার স্বচ্ছতা প্রমাণ না করে তাহলে সিবিআই তদন্তের দাবিতে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে কংগ্রেস। এমনটাই জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। এ দিনের আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।