আগরতলা, ২১ মার্চ (হি.স.) : ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের ৩২৪২৩.৪৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ করলেন ত্রিপুরার অর্থমন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৪২৯.৫৬ কোটি টাকা। এদিন বাজেট পেশের পর বিধানসভার প্রেস কর্নারে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে অর্থমন্ত্রী বাজেটের উল্লেখযোগ্য দিকগুলি তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে রাজ্যের নিজস্ব রাজস্ব ৪০১০ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে রাজ্যের নিজস্ব কর-বহির্ভূত রাজস্ব ৫০৪ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়েছে। তিনি জানান, অর্থনীতির চাকা চাঙ্গা করার জন্য মূলধন ব্যয়ের উপর আরও জোর দেওয়া হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে মূলধন ব্যয় ৭.৯০৩ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বাজেটের তুলনায় ১৯.১৪ শতাংশ বেশি।
সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী জানান ২০২৫ ২৬ অর্থ বর্ষের ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাবে অনেক নতুন প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে।অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এই বাজেটে কোন নতুন করের প্রস্তাব রাখা হয়নি। ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাবে গত বছরের বাজেটের তুলনায় ৪৬১৮.৭৭ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ছিল ২৭৮০৪.৬৭ কোটি টাকার, যা ২০২৪-২৫ সালের সংশোধিত বাজেটে বৃদ্ধি পেয়ে ৩০২৯৬.৫০ কোটি টাকা হয়েছে। বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ৪২৯.৫৬ কোটি টাকা।
তিনি জানান, বাজেটে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট খাতের জন্য ১৮৮৫.৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা ২০২৪-২৫ সালের বাজেটের তুলনায় ৯.৪৯ শতাংশ বেশি। বাজেটে শিক্ষা খাতের জন্য ৬১৬৬.১৯ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। যা ২০২৪-২৫ সালের বাজেটের তুলনায় ১১.৯৪ শতাংশ বেশি।
অর্থমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে আরো জানান, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের জন্য ১৯৪৮.৬৯ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। যা ২০২৪-২৫ সালের বাজেটের তুলনায় ১২.৮৯ শতাংশের বেশি। উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসলের প্রচারের জন্য একটি নতুন প্রকল্প ‘মুখ্যমন্ত্রী শস্য শ্যামলা যোজনা’ চালু করা হয়েছে। এর জন্য ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতিটি মহকুমায় একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ‘বিজ্ঞান বিষয় এবং ইংরেজি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ স্থাপন করা হবে। বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনা করে সদর মহকুমায় ৩টি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, আমবাসা, কাকড়াবন ও করবুকে নতুন ডিগ্রি কলেজ স্থাপন করা হবে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির স্বার্থে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য আগরতলা, উদয়পুর এবং আমবাসায় ‘ত্রিপুরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা কেন্দ্র’ স্থাপন করা হবে। এর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ১.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কৈলাসহর ও উদয়পুরে ২টি বহুমুখী ক্রীড়া ইন্ডোর হল নির্মাণ করা হবে। গন্ডাতুইসা এবং কাকড়াবনে সিন্থেটিক ফুটবল টার্ফ নির্মাণ করা হবে।