স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ৯ জানুয়ারি : ৭ রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের দক্ষিণ রামনগর এলাকায় ১৮ নং বুথ সভাপতি অমল দাসের গুন্ডামিতে ভিটে মাটি হীন হয়ে পড়ল এক পরিবার। পশ্চিম আগরতলা থানা এবং পশ্চিম মহিলা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানালে মহিলার কাছ থেকে মামলা গ্রহণ করছে না দলদাস পুলিশ। দুদিন ধরে পশ্চিম আগরতলা থানায় এসে অভিযোগ জানালেও পুলিশ বিষয়টি বাঁকা পথে মীমাংসা করে রাষ্ট্রপতি কার্লাস প্রাপ্ত উদ্দির অসম্মান করতে চাইছে। এমনটাই অভিযোগ এক মহিলার মুখে। মহিলার নাম আনোয়ারা বেগম।
তিনি দক্ষিণ রামনগরে এলাকার বাসিন্দা। বৃদ্ধ মহিলা আনোয়ারা মেয়ে এবং দুই নাতি, নাতিনকে নিজ বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। আর্থিক অভাব অনটনের কারণে গত এক বছর আগে বাড়ির কিছুটা অংশ বিক্রি করেছিলেন। তারপর থেকে এলাকার বুথ সভাপতি অমল দাস সেই মহিলার বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করে।
অভিযুক্ত দালাল মাফিয়া বুথ সভাপতির দাবি অনুযায়ী এক লক্ষ টাকা মিটিয়ে দিলেও পরবর্তী সময় আরো এক লক্ষ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তারপর সেই টাকা মিটিয়ে দিতে না পারায় বিভিন্ন সময় মহিলাকে বাড়িতে গিয়ে মারধোর এবং ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ বিষয় নিয়ে পরবর্তী সময় মুখ খুলতে চাইলে অভিযুক্ত বুথ সভাপতি বাড়িতে গিয়ে মহিলাকে এবং মহিলার মেয়েকে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দেয় যদি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলে তাহলে গোটা পরিবারকে খুন করে ফেলবে এবং গোটা পরিবারের বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত বলে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তারপর এভাবে কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর বিজেপি -র দুর্বৃত্ত বুথ সভাপতি অমল গত ৮ আগস্ট দলবল নিয়ে আনোয়ারের বাড়িতে গিয়ে গোটা পরিবারকে বেধড়ক মারধর করে। তার সাথে ছিল সোহেল মিয়া, ঝুটন মিয়া, ঝুটন মিয়ার ছেলে এবং তার মা সহ এলাকার কিছু শাসকদলের দুর্বৃত্ত। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি ঘরের দুই শিশু পর্যন্ত। কিন্তু মার খেয়ে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত গুন্ডা আমল মহিলার ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র ভাঙচুর এবং নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, হাঁস, মুরগি লুটপাট চালায়। শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে গোটা পরিবারকে বের করে ঘর ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত মহিলা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছে না। অভিযুক্ত অমলের বিরুদ্ধে মহিলার আরো অভিযোগ, ২০১৮ সালের পর কমরেড থেকে রাষ্ট্রবাদী হয়ে এলাকায় জমির দালালি, নেশা পাচার এবং বাংলাদেশের মানব পাচার সহ বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপের সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে সে। মানুষের বাড়ি-ঘরে রাতের বেলা প্রবেশ করে মহিলাদের হুমকি-ধমকি সহ মারধর করে বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। কেউ এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে চাইলে সে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় পশ্চিম আগরতলা থানার ওসি থেকে শুরু করে সমস্ত অফিসার নাকি তার কেনা। তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ জানালেও কোন কাজ হবে না বলে জানায়। আর এই কথাগুলি যেন গত দুদিন ধরে থানায় ঘুরপাক খাওয়ার পর মিলে যাচ্ছে। মহিলা আরও জানায় অভিযুক্তের কুকর্মের বিরুদ্ধে এলাকার বিধায়ক দীপক মজুমদারকে জানানোর পরেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। সব মিলিয়ে বলা যায় শহরের বুকে দক্ষিণ রামনগর এলাকায় এক প্রকার ভাবে সন্ত্রাস চলছে। উল্লেখ্য, এ ধরনের সুশাসন বিগত দিনে রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ে চলে এখন সরাসরি আগরতলা শহরের বুকে চলছে। এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে খুদ বিজেপি কর্মীরা। সুশাসনকে দুঃশাসনে পরিণত করেছে তারা। সাত রামনগর এলাকার বিধায়কের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অভিযোগ না থাকলেও এলাকার দুর্বৃত্ত এমন ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তাদের কারণে কালিমা লিপ্ত খুদ বিধায়ক।