স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ৯ জানুয়ারি : এবার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য ময়দানে অবতীর্ণ হলেন আগরতলা পুর নিগমের ৪৪ নং ওয়ার্ডের মেয়র ইন কাউন্সিলর উদয় ভাস্কর চক্রবর্তী। রাজধানীর লোটাস ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় সুমিত্রা সরকার নামে এক মহিলার জমি জবরদখল করে সেই বাড়িতে অপর মহিলার সাথে ফষ্টিনষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার তিনি ওয়ার্ড অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করলেন, সুমিত্রা সরকার ভারসাম্যহীন। মহিলা কখন কি বলেন তার কোন ঠিকঠিকানা নেই।
তিনি আরো দাবি করেন এলাকায় নাকি উন্নয়নমূলক অনেক কাজ চলছে। এগুলি অনেকের চোখে সহ্য হচ্ছে না। তাই সরকারকে কালিমা লিপ্ত করতে বিরোধীরা মহিলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করেছে। অর্থাৎ এই ঘটনা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত এবং চক্রান্তের শিকার হয়েছেন বলে জানান তিনি। এদিন আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন করার আগেই ওয়ার্ড অফিসে এলাকার বিজেপি সমর্থিত তথা তার ভক্ত মহিলাদের জড়ো করে রেখেছিলেন অভিযুক্ত কর্পোরেটর। তারা সাংবাদিক দেখে সাংবাদিক সম্মেলনের আগে এলাকার উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ এবং কর্পোরেটরকে ধোঁয়া তুলসী পাতা করার জন্য বলছিলেন সুমিত্রা সরকার নাকি ভারসাম্যহীন। যাইহোক পুলিশ যদি অভিযোগ গ্রহণ করে তাহলে গোটা বিষয়টি পুরোপুরি তদন্ত সাপেক্ষ। তখনই স্পষ্ট হবে আসলে মহিলা ভারসাম্যহীন নাকি মহিলার অভিযোগ সত্যি।
উল্লেখ্য, অভিযোগকারী সুমিত্রা সরকারের অভিযোগ, তিনি সারা জীবন অত্যন্ত কষ্ট করে ধার দেনা নিয়ে এই বাড়িতে ক্রয় করেছিলেন। শেষ বয়সে মাথা গুজার একটি সম্বল এটা। গত কয়েক বছর ধরে তিনি বাড়িতে ভাড়া দিয়ে রেখেছিলেন। ভাড়াটিয়া উঠে যাওয়ার পর আচমকা একদিন এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পান স্থানীয় কাউন্সিলর উদয় ভাস্কর চক্রবর্তী এবং বিজেপি নেতা কানু বণিক দুজন তার বাড়িতে এক মহিলাকে ভাড়া দিয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে গিয়ে দেখেন এক অপরিচিত মহিলা তার বাড়ি দখল করে বসে আছে। সাথে সাথে বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলার পর জানতে পারেন স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে এই মহিলা বাড়িতে ভাড়া এসেছেন। তারপর বহুবার মহিলাকে বাড়ি থেকে উঠে যাওয়ার কথা বললে তিনি রাজি হন না। তারপর কাউন্সিলরের সাথে কথা বললে তিনি সেই মহিলাকে পরিচয় দেন তার মাসি হিসেবে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সেই ভাড়াটিয়া মাসি এবং তার বোনের ছেলে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। কারণ অভিযোগ প্রতিদিন রাতের বেলা দূর-দূরান্ত থেকে বহিরাগত কিছু পুরুষ মহিলা বাড়িতে নিয়ে এসে আসর বসায় অভিযুক্ত কাউন্সিলার এবং বিজেপি নেতা কানু বণিক। তাদের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় মানুষ প্রতিনিয়ত অভিযোগ করে চলেছেন সুমিত্রা সরকারের কাছে। তিনি বর্তমানে ডুকলি বাজার সংলগ্ন ঘোষপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। কিন্তু তার কথা শুনছে না অভিযুক্ত কাউন্সিলার। অবশেষে তিনি বুধবার সকালে আগরতলা প্রেস ক্লাবে এসে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কিভাবে বাড়ি জবর দখল করে রাতের বেলা আসর চালানোর কারণে ওনার বদনাম হচ্ছে। অভিযুক্ত কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সরকার যাতে কঠোর আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। অভিযুক্ত কাউন্সিলরের এলাকার বড় নেতা হিসেবেও পরিচিত।