স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ ডিসেম্বর : জনজাতিরা এখন বুঝতে পারছে তিপরা মথার নেতৃত্ব তাদের সাথে প্রতারণা করেছে। ভোট গেল তাদের বিজেপির কথা বলে, আর ভোটের পর এখন দেখা যাচ্ছে তারা বিজেপি-র মধ্যে ঢুকে গেছে। এবং তাদের মধ্যে যারা উচ্চশিক্ষিত এবং জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করে এসেছে তারাই এখন প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এবং তাদের অভিভাবক তাই এখন মুখোমুখি হয়ে কথা বলতে পারছে না।
এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার কৈলাশহর মহাকুমা ২৪ তম সম্মেলনে এই কথা বললেন রাজ্যের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তিনি এদিন কৈলাসহরের উনকোটি কলাক্ষেত্রের সামনে আয়োজিত সভায় বক্তব্য রেখে আরো বলেন, বামফ্রন্ট সরকার এক টাকাও খরচ করলে সেটা যাতে মানুষের স্বার্থে খরচ করা যায় তার জন্য চোখ কান খোলা রেখেছে। জাতীয় রাজনীতিবিদরা বলতেন কেন বামফ্রন্ট বিজ্ঞাপন দেয় না। তখন পাল্টা বলা হত সেই বিজ্ঞাপনের টাকা দিয়ে কয়েকটি গ্রামের কল বসানো যাবে, বিদ্যুতের খুটি বসানো যাবে। কৃষকদের কাছে জলের সেচ পৌঁছানো যাবে। এখন বক্তৃতা, বিজ্ঞাপন, মন্ত্রীদের মুখ দেখা যাচ্ছে। আর মানুষের ঘরে খাবার নেই, অনাহারে মৃত্যু, সন্তান বিক্রি চলছে। আর এদিকে আগরতলায় দুর্গাপূজার পর ভাসানের নাম করে ফুর্তি করছে সরকার। তাই বলা হয় বামফ্রন্ট সরকারের বিকল্প কোন শক্তি ও দল রাজ্যে নেই।
বর্তমানে যে সমস্যা গুলি হচ্ছে সেগুলি থেকে বের হতে গেলে আন্দোলন তেজি করতে হবে। সরকারের সমালোচনা করে আরো বলেন, বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে রেগায় টাকা কমিয়েছে, সারের ভুর্তুকি বন্ধ করে দিয়েছে, রেশন বন্ধ করে দিতে চাইছে। সাধারণ মানুষের কল্যানে কোনো কাজই বিজেপি সরকার করছে না। মানিক সরকার আরও বিস্ফোরক বলেন, রাজ্যের মানুষ দীর্ঘদিন রাজন্য আমল দেখেছে, কংগ্রেসের ত্রিশ বছর দেখেছে, সি.পি.আই.এম দলের দশ বছর দেখেছে, টি জি ইউ এস -এর সাথে কংগ্রেস দলের পাঁচ বছর দেখে সাধারণ মানুষ আবার রাজ্যে সি.পি.আই.এম দলের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলো। এবং একটানা ২৫ বছর সি.পি.আই.এম দল সরকার পরিচালনা করে। কিন্তু এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি রাজ্যের মানুষকে। এদিকে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বক্তব্য রেখে বলেন, সি.পি.আই.এম দলের কর্মীদের ভোট ছাড়া কোনো ভাবেই ২০২৩ সালের বিধানসভা ভোটে কৈলাসহর কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস দলের প্রার্থী বিরজিত সিনহা ভোটে জয়লাভ করতেন না। শুধু তাই নয়, গত আগস্ট মাসে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে সি.পি.আই.এম দল ছাড়া কংগ্রেস দল গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে পারতো না।
কংগ্রেস গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতি দখল করে সি.পি.আই.এম দলকে ভুলে গিয়ে উল্টো সি.পি.আই.এম দলের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতির পাশেই চন্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে। বিজেপি দল পরিচালিত চন্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপি দলের মাতব্বরদের সেবা করার পর সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে হচ্ছে। ঠিক তেমনি, কংগ্রেস দল পরিচালিত গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতিতেও কংগ্রেস দলের মাতব্বরদের সেবা করে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে হচ্ছে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ত্রিপ্রা মোথা দলের মতোই কংগ্রেস কৈলাসহরে বিজেপিকে সাহায্য সহযোগিতা করছে বলে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর অভিমত। তিনি আরো বলেন ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে তিপরা মথা বিজেপি -র হয়ে যদি গোপন খেলা না খেলতো তাহলে সেই নির্বাচনে ত্রিপুরা রাজ্যে গণতন্ত্রের পতাকা উত্তোলন হতো। আয়োজিত সভায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, সি.পি.আই.এম নেতা রাজেন্দ্র রিয়াং, সি.পি.আই.এম ঊনকোটি জেলা কমিটির সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, কৈলাসহর মহকুমা কমিটির সম্পাদক বিশ্বরূপ গোস্বামী সহ আরও অন্যান্য নেতৃত্ব।