Thursday, December 26, 2024
বাড়িরাজ্যজনজাতিদের কোন প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পেরে তিপরা মথা পালাতে চাইছে, তাই...

জনজাতিদের কোন প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পেরে তিপরা মথা পালাতে চাইছে, তাই নাটক করে ইস্যু করেছে পুষ্পবন্ত প্রাসাদ : জিতেন্দ্র চৌধুরী

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ ডিসেম্বর : তিপরা মথা পুরাতন রাজভবন তথা পুষ্পবন্ত প্রাসাদ নিয়ে নাটক করছে। আসল কারণ অন্য কিছু। কারণ রাজ্যে পুষ্পবন্ত প্রাসাদের মত মালঞ্চ নিবাস এবং মানিক্য কোর্ট সহ আরো বেশ কয়েকটি রয়েছে বিয়ে বাড়ি। তাহলে মানিক্য কোর্ট এবং মালঞ্চ নিবাস নিয়ে যদি কোনো আপত্তি না থাকে তাহলে কেন পুরাতন রাজভবন নিয়ে মথার এত আপত্তি। অর্থাৎ সেগুলি নিয়ে যদি মথার বিবেক না বেধে থাকে তাহলে এটা নিয়ে কেন এত তাদের বিবেক বাঁধছে। আসল কথা হলো ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের এবং বিশেষ করে জনজাতি অংশের মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য এগুলি করছে মথা। বৃহস্পতিবার বামুটিয়া বেড়িমুড়ায় অনুষ্ঠিত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদীর মোহনপুর মহকুমা চতুর্থ সম্মেলন থেকে এই কথা বললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী।

 তিনি সরাসরি দলকে আক্রমণ করে বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতে গিয়ে দলের নেতৃত্ব চুক্তি করে এসে জানিয়েছেন প্রার্থী দেবে। কিন্তু তার চিহ্ন হবে দলের নয়, চিহ্ন হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এগুলি ভূ-ভারতে কোথাও নেই। কিন্তু লক্ষ্য করা গেছে সেখানে গিয়ে এই চুক্তি করে আসলেও জনজাতিদের গ্রেটার তিপরাল্যান্ড নিয়ে কোন চুক্তি করেননি। এবং যে সমস্ত চুক্তি সেখানে হয়েছিল সেগুলি নাকি ৬ মাসের মধ্যে পূরণ করা হবে কারো লিখিত এনেছিল। তারপর গত ৬ সেপ্টেম্বর ৬ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এই ছয়মাসে যার যে স্বার্থসিদ্ধি করার তা করে নিয়েছে। কিন্তু জনজাতিদের স্বার্থে সে চুক্তির বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক পর্যন্ত হয়নি। এর চাইতেও আরো বড় আশ্চর্যের বিষয় হল দিল্লি থেকে কোন প্রতিনিধি রাজ্যে সফর পর্যন্ত করেন নি। তারপর দেখা গেছে জনগণকে বুঝ দিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে একটি হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত কয়েকদিন আগেও আবার একটি বৈঠক করেছেন দিল্লিতে।

 কিন্তু যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি জনজাতিদের দিয়েছিল মথা সেগুলি কিছু পূরণ করেনি। এ ধরনের কমিটি আগেও বহুবার হয়েছে প্রয়াত মন্ত্রী এন সি দেববর্মার সাথে। তারও সে সময় দাবি করেছিল বিজেপি ও আইপিএফটি জোট সরকার আসলে ছয় মাসের মধ্যে নাকি তিপরাল্যান্ড হবে। কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। অর্থাৎ যাদের কাজে লাগিয়ে এডিসি দখল করেছিল তাদের বিভিন্ন ভাবে বুঝ দিয়ে এখন পালাবার চেষ্টা করছে তিপরা মথার নেতৃত্ব। সুতরাং অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মথার একটা ইস্যু দরকার, সেই ইস্যুটা হল পুরাতন রাজভবন। তাদের কাছে জনজাতিদের অস্তিত্ব এবং সংস্কৃতির কোন বালাই নেই বলে জানান বিরোধী দলনেতা। তিনি আরো বলেন, রাজ্যের জনজাতিদের স্বার্থ রক্ষা করে ত্রিপুরা রাজ্যে যেই পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ করতে আসুক না কেন বিরোধীদল সিপিআইএমের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, তাজ গ্রুপের হাতে যখন পুরাতন রাজভবন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুই সদস্য অনিমেষ দেববর্মা এবং বৃষকেতু দেববর্মা কেন এর প্রতিবাদ করেননি। এখন পর্যন্ত তাদের মুখ থেকে কোন বক্তব্যও শোনা যায় না। সুতরাং এতে স্পষ্ট সরলমতি জনজাতি মহিলা, যুবক এবং ছাত্রদের রাস্তায় নামিয়ে প্রতিবাদ করে নাটক তৈরি করছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সাথে প্রদ্যোতের হাসি হাসি মুলাকাতের সময় কোন ধরনের প্রতিবাদ দেখা যায় নি।

 একই সাথে সরকারের উদ্দেশ্যে কামান দেখে বলেন, এমন একটি ঐতিহাসিক স্থান বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার আগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয়, সাংস্কৃতিক জগতের সাথে জড়িত মানুষের মতামত নিতে হয় এবং জন শুনানি করতে হয়। এগুলি কিছুই করল না সরকার। তিনি আরো বলেন, ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩৬৫ দিনেই রাজ্যের লক্ষ্য করা যায় রেগার কাজ, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট এবং চাকরির জন্য পথ অবরোধ হয় না। এভাবেই প্রতিদিন রাজ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নাগরিক বিক্ষোভ চলছে। এগুলি প্রমাণ করে সরকার তার সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না। মানুষ এ সরকারের উপর অসন্তুষ্ট। এবং সরকার তার প্রতি মানুষের কোন আস্থা নেই। বিজেপি -র সদস্যতা অভিযান নিয়ে তিনি বলেন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত বিজেপি -র সদস্যতা অভিযানে নেমেছে। কিন্তু লক্ষ্য করা গেছে যাদের সাথে মুখ্যমন্ত্রী ছবি তুলেছেন তারা দুদিন বাদে আবার অন্য দলে যোগদান করছে। এটাই বিজেপির আভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। আয়োজিত সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস, প্রাক্তন বিধায়ক পবিত্র কর সহ মহকুমা কমিটির অন্যান্য নেতৃত্ব।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য