স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৫ নভেম্বর : সুশাসন জামানায় দুর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে! পূবর্তন সরকারের দুর্নীতির সার্টিফিকেটকে পর্যন্ত পিছে ফেলে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে সুশাসন নেতারা। মানুষ প্রতিবাদ ছাড়া আর কোন রাস্তা চোখে দেখছে না। এরই নিদর্শন হলো সোমবার সকালে পাঁচ খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত রেশম বাগান এলাকায় রাস্তা অবরোধের ঘটনা। এলাকার নাথপাড়ার রাস্তাটি গত আগস্ট মাসের বন্যায় ভেঙে চৌচির হয়ে যায়।
তারপর রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে মোটা টাকা আসার পর সেই টাকা গিলে খাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে প্রশাসনিক বাবুরা এবং এলাকার নেতা বাবুরা। এমনটাই অভিযোগ তুলতে বাধ্য হয়েছে স্থানীয়রা। কারণ নাথপাড়ার রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য গত কয়েকদিন আগে কাজে হাত লাগিয়েছে টেন্ডার পাওয়া অধীর দেবনাথ নামে এক রাষ্ট্রবাদী ঠিকাদার। এই রাষ্ট্রবাদী ঠিকাদার ভেবেছিলেন সবটাই কলাকৌশল করে কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জনগণকে বুঝ দেবে। কিন্তু মাস্টারমাইন্ড ঠিকাদারকে হাতেনাতে ধরতে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল এলাকার মানুষ। সোমবার সকালে যখন পিজের তেল এবং সাদা বালি দিয়ে রাস্তা ঝকঝক চকচকে করছিলেন সে সময় এলাকার শ্যামল দাস, স্বপন দেবনাথ সহ কয়েকজন এসে বাধা দেয় শ্রমিকদের। তখন শ্রমিকরা ফোন করে রাষ্ট্রবাদী ঠিকাদারকে। ঠিকাদার বাবু জানান, তাকে দপ্তর যেভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবেই তিনি কাজ করছেন। তারপর ঠিকাদারকে এলাকার মানুষ জানিয়ে দেয় এভাবে হলে কাজ করা যাবে না। কাজটি বন্ধ রাখার জন্য।
বিষয়টি তারা উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে নেবে। তারপর অভিযুক্ত ঠিকাদার তাদের জানায় যদি কাজটি করতে বাধা দেওয়া হয় তাহলে সেই কাজের টাকা এলাকার শ্যামল দাস এবং স্বপন দেবনাথের কাছ থেকে আদায় করা হবে। তারপর এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে রেশন বাগান এলাকায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসে এলাকার বিজেপি নেতা সঞ্জিব মজুমদার। এই মাতব্বর নেতা অবরোধকারী এলাকাবাসীকে আশ্বাস দেন বিষয়টি পরবর্তী সময়ে আলোচনাক্রমে দেখা যাবে। আপাতত অবরোধ তোলার জন্য। অবশেষে অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী। এলাকাবাসী মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এলাকায় দুই শতাধিক মানুষ বসবাস করে। মানুষের স্বার্থে রাস্তাটি যাতে সঠিকভাবে সংস্কার করা হয় সেটাই তাদের দাবি। কিন্তু এভাবে তেল ও বালি দিয়ে রাস্তা সংস্কার চলবে না। সঠিকভাবে রাস্তা সংস্কার করতে হবে। তবে হাস্যকর বিষয় হল রাস্তা অবরোধ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোন আধিকারিক কিংবা ইঞ্জিনিয়ারকে ঘটনাস্থলে আসতে হয়নি। এলাকার নেতার কথায় উঠে গেছে অবরোধ। আসলে বুক ফাটে, মুখ ফাটে না এমনটা অবস্থা হয়ে আছে এলাকাবাসীর মধ্যে। চোখের সামনে অনিয়ম ঘটলেও মুখ খুলতে পারছে না এলাকাবাসী। তবে এদিন অবরোধ পর্যন্ত সবটাই ঠিক ছিল, কিন্তু রাস্তা কতটা সংস্কার হবে সেটা এখন বড় বিষয়।