স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৫ নভেম্বর : সুশাসনের রাজ্যে থানায় মামলা করলেও বিপদ। ধর্ষণের শিকার হওয়া মহিলা মামলা দায়ের করলে তাঁকে দেওয়া হচ্ছে চরিত্রহিনার আখ্যা। এইবার এই ধরনের একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসল। খোয়াই উত্তর সিঙ্গিছড়া এলাকায় এক গৃহবধূকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে যাচ্ছিল অজয় দাস ও সুব্রত দাস নামে দুই শাসক দলীয় কর্মী। অসহায় গৃহবধূ স্বামী ও সন্তানদের প্রানের কথা চিন্তা করে দীর্ঘ দিন ধরে চুপ ছিল। অবশেষে সম্প্রতি খোয়াই মহিলা থানায় মামলা দায়ের করে গৃহবধূ।
প্রথম দিকে খোয়াই মহিলা থানার পুলিশ মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। পড়ে অবশ্য বাধ্য হয়ে খোয়াই মহিলা থানার পুলিশ মামলা দায়ের করে। এবং দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। দুই অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর বিজেপি দল থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু এইবার অভিযুক্তদের বাঁচাতে ময়দানে নামলেন এলাকার প্রমিলা বাহিনী। জানা যায় শাসক দলের ইন্দনে প্রমিলা বাহিনী ময়দানে নেমেছে। শুক্রবার প্রমিলা বাহিনী খোয়াই-কমলপুর সড়কের চেরমা এলাকায় সড়ক অবরোধে সামিল হয়। তাদের অভিযোগ ধর্ষিতা চরিত্রহিনা। সে দেহ ব্যবসা করে। যাদেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তারা ধর্ষিতাকে দেহ ব্যবসা বন্ধ করার জন্য বলতে গিয়েছিল। কিন্তু ধর্ষিতা উল্টো তাদের নামে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। সুশাসনের রাজ্যে যেন এক অরাজকতা চলছে। ধর্ষিতা থানায় মামলা দায়ের করার পর সে চরিত্রহিনা হয়ে গেছে ? প্রশ্ন হচ্ছে ধর্ষিতা যদি দেহ ব্যবসা করে থাকে, তাহলে এতদিন কেন এলাকার সকলে নিরব ছিল। এতদিন কেন এলাকার প্রমিলা বাহিনী পুলিশের দ্বারস্থ হয় নি। তর্কের খাতিরে তাদের বক্তব্য সঠিক মেনে নিলেও, প্রশ্ন হচ্ছে অভিযুক্ত সুব্রত দাস ও অজয় দাস কেন দিনের পর দিন ধর্ষিতার বাড়িতে যেত। তাহলে কি প্রমিলা বাহিনী শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য ধর্ষিতাকে চরিত্রহীনা আখ্যা দিয়ে সড়ক অবরোধে সামিল হয়েছে। উল্লেখ্য, এই ঘটনার মূল্য অভিযুক্ত অজয় দাস এবং সুব্রত দাস দুজনই শাসকদলের সক্রিয় কর্মী। বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের গ্রেপ্তার করার পর প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের নির্দেশে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।