স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ অক্টোবর : গত আগস্ট মাসের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মিলছে না সরকারি সহযোগিতা। তাদের দাবি সরকার মাঠে নেমে সরজমিনে পরিদর্শন করে নিজ হাতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য। তাহলেই বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত প্রকৃত কৃষকরা সরকারি সাহায্য পাবে। উপকৃত হবে কৃষকরা। রবিবার লাউ ক্ষেতের পাশে দাঁড়িয়ে দুঃখের সহিত সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন চড়িলাম ব্লকের চেছুড়িমাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষক প্রদীপ দত্ত।
এবারের ভয়াবহ বন্যায় তার লাউ, বেগুন, কাঁকরোল, মরিচ সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বন্যার ভয়াবহতা কাটিয়ে ফের জমি পত্তন নিয়ে এক কানি পাঁচ গন্ডা জায়গায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে লাউ গাছ লাগিয়েছেন। লাউ বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন বিক্রির জন্য। আবার তিন কানি জমি তৈরি করেছেন খিড়া আলুর জন্য। নিজের এক তুলা জমি নেই। অন্যের থেকে পাঁচ কানি জমি বছরে পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে চাষবাস করে সংসার প্রতিপালন করার পাশাপাশি ছেলে মেয়েদের কলেজের পড়াশোনা এবং বৃদ্ধ মায়ের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করেন। কেন্দ্রীয় টিম যতবার পরিদর্শনে এসেছে ততবারই কৃষক প্রদীপ দত্তের জমিতে এসেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভয়াবহ বন্যায় প্রদীপ দত্তের সমস্ত সবজি ধ্বংস হয়ে যায়। শুধু সবজি নয় প্রদীপ দত্তের পুকুরের ও ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মাছ চলে যায় বন্যায়। এখন পর্যন্ত এক টাকা ক্ষতিপূরণ পায়নি প্রদীপ দত্ত। অথচ চেছুড়ি মাই গ্রামে এমন বহু রয়েছে যারা কৃষক নয় এমন পরিবারে চার থেকে পাঁচজনের ব্যাংক একাউন্টেও ঢুকেছে বন্যায় ক্ষতিপূরণের টাকা। অথচ প্রকৃত কৃষক প্রদীপ দত্ত এক টাকা ও ক্ষতিপূরণ পায়নি সরকার থেকে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী কৃষাননিধি সম্মান যোজনায় চার মাস পর পর যে দুই হাজার টাকা দেয়া হয় সেটা পর্যন্ত কেটে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রদীপ দত্ত। তিনি আরো বলেন, সরকারি ব্যাংকে গিয়েও ঋণ পায় নি। এখন বন্ধন নিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে শীতকালীন ফসল শুরু করেছেন।
বন্যার পর সরকারি ভাবে বলা হয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যেন পুনরায় চাষবাস শুরু করতে পারে তাদেরকে দ্রুততার সাথে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক প্রদিপ দত্ত স্পষ্ট জানান তিনি কোন ক্ষতিপূরণ পান নি। তাহলে প্রশ্ন কাদেরকে দেওয়া হচ্ছে সরকারি ভাবে ক্ষতিপূরণ ? এখন দেখার সরকার সরজমিনে যাচাই করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা করে কিনা।