স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ অক্টোবর : রাজধানীর মেলার মাঠে ব্যবসায়ী খুন হওয়ার ঘটনা এবং থানার লকাপে নির্যাতন হওয়া বাদল ত্রিপুরার পরে মৃত্যুর ঘটনা এবারের দূর্গা পূজায় সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার বিজেপি, আইপিএফটি এবং তিপরা মথার জোট সরকারের। মনুবাজার থানার পুলিশের নির্যাতনে খুন হওয়া বাদল ত্রিপুরার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সাথে কথা বলে এই কথা বললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি শুক্রবার সকালে মনুবাজার স্থিত কালাডেপায় বাদল ত্রিপুরার বাড়িতে গিয়ে আরো বলেন, গত ১৩ অক্টোবর দশমীর দিন বাদল ত্রিপুরাকে মনু থানার কয়েকজন পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সে কারোর বাগানের রাবারের সামগ্রী চুরি করেছে।
কিন্তু পুলিশ বাদল ত্রিপুরাকে থানায় নিয়ে সেদিন সারারাত নিসংসভাবে মারধর করে পরের দিন ছেড়ে দেয়। তারপর বাড়ির লোকেরা বাদলের শারীরিক অবস্থা দেখে সাথে সাথে নিয়ে যায় স্থানীয় হাসপাতালে। সেখান থেকে রেফার করা হয় শান্তির বাজার জেলা হাসপাতালে। জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ার পরেও পুলিশ রেফার করে নি জিবি হাসপাতালে। কোন উন্নত চিকিৎসার ও ব্যবস্থা করেনি। তিনি প্রশ্ন করলেন কোথায় মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য যোজনার প্রকল্পের কার্ড এবং আয়ুষ্মান কার্ড? গত ১৬ অক্টোবর রাতের বেলা বাদলের মৃত্যু হয়। তারপর গতকাল মৃতদেহ নিয়ে যখন থানার সামনে বিক্ষোভে সামিল হয় মানুষ তখন মন্ডল নেতারা এসে আন্দোলন প্রত্যাহার করতে বলে। তাদের প্রশ্ন আজ ত্রিপুরা রাজ্যের থানা গুলিতে এই ধরনের ঘটনায় কেন হচ্ছে?
কারণ বর্তমান সরকারের আমলে অপদার্থ ডিজি হলেন অমিতাভ রঞ্জন। সরকারের পা চাটা ছাড়া তার আর কোন কাজ নেই। এসপি, আইজি লয়ান অর্ডার পদে অভিজ্ঞ ভালো আধিকারিক থাকার পরেও তারা জনস্বার্থে কাজ করতে পারছে না। একটা ছোট্ট অংশের পুলিশ আজ মাথা পর্যন্ত দুর্নীতিতে ডুবে আছে। এই পুলিশরা ড্রাগস পাচার, নারী পাচারের সাথে যুক্ত। তাদের জন্য সারা ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। তাদের কারণে সৎ অফিসরা আজ দায়িত্ব নিতে পারেনা।
এর ফলশ্রুতি হলো দশমীর রাতে রাজধানীর মেলার মাঠে খুন হয়ে যায় ব্যবসায়ী এবং মনু বাজার থানার পুলিশের নির্যাতনে খুন হয় সাধারণ নাগরিক। আর এভাবে চলতে থাকলে একদিন পুলিশের ঘরের লোকেরাও বাঁচবে না। কিন্তু এই পুলিশদের জেনে রাখা ভালো, রাজ্যের দুর্নীতিবাজ ও অপদার্থ সরকার তাদের বেতন দেয় না। পুলিশকে বেতন দেয় রাজ্যের জনগণ। তিনি আরো বলেন, শুধু অভিযুক্ত পাঁচজন পুলিশকর্মীকে গ্রেফতার করে দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে ভাবলে চলবে না, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায় রাজ্যবাসী। কারণ এত নিষ্ঠুর অমানবিক ঘটনা আর হতে পারে না। তাই উপযুক্ত শাস্তির মধ্য দিয়ে বাদল ত্রিপুরার পরিবারকে স্বস্তি দিতে হবে। এবং সকলকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে এই মামলা কলাপাতা না করে ফেলে পুলিশ এবং রাজ্যে বর্তমান সরকার। এমনটাই বলে জানান তিনি। বিরোধী দলনেতা আরো জানান, সরকারকে বাদল ত্রিপুরার তিন শিশু কন্যার পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি কাছ থেকে কোন একটি কাজের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। নাহলে গোটা পরিবারটি ভেসে যাবে বলে জানান তিনি।