স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ অক্টোবর : রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও কর্মসংস্থানের অভাবের প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে চলেছে কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করে সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা বললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা। তিনি প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সারা রাজ্যে নৈরাজ্যের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে। আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। আর মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার নাকি উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সর্বভারতীয় স্তরে রিপোর্ট অনুযায়ী পরিসংখ্যানে এটা বলে না।
২ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত লক্ষ্য করে গেছে ৮ জন খুন এবং ৮ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর সাথে রয়েছে বহু চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ অন্যান্য অপরাধমূলক ঘটনা। দুর্গাপূজা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সারা রাজ্যে একটা আতঙ্কে পরিবেশ বিরাজমান। কারণ গত কয়েকদিন ধরে দেখা গেছে ও এন জি সি সংলগ্ন নেতাজি নগর এলাকায় মা-মেয়ে জোড়া খুন হয়েছে, তেলিয়ামুড়া থানা এলাকায় একটি মেয়ে পূজা দেখে বাড়ি ফেরার সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছে, বিশালগড়ে দুর্গাপূজার দশমী ঘিরে মা ও ছেলে আক্রান্ত হয়েছে, বিশালগড় থানায় এলাকায় একটি দিব্যাঙ্গন নিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
মনোবাজার থানায় পুলিশের নির্যাতনে খুন হয়েছে এক যুবক। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো কার্নিভালের মধ্যে গিয়ে পর্যন্ত রাজ্যের কচিকাঁচারা আক্রান্ত হয়েছে। যেখানে আগে থেকেই ছিল পূর্ণ নিরাপত্তা এবং থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয় পরবর্তী সময় বাড়ি ঘরে প্রবেশ করে অভিভাবকদের মারধর এবং পিস্তল উচিয়ে হুমকি দেওয়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। আরো উদ্বেগের বিষয় হলো পুলিশের সামনেই গত ১৫ অক্টোবর মেলারমাঠ এলাকায় এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত করেছে। পুলিশ অভিযুক্তকে প্রতিহত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তী সময়ে অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু এভাবে অরাজক পরিস্থিতি সারা রাজ্যে কায়েম হয়ে আছে। একই সাথে রয়েছে ধর্মীয় সুড়সুড়ি। কদমতলা, পানিসাগরের পর এবার যুবরাজ নগরে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। এ ধরনের ঘটনা ঘটার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এখনো নিশ্চুপ।
সুতরাং এ ধরনের ঘটনা রাজ্যে ঘটার পর কোন ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী দায় এড়াতে পারে না। স্বরাষ্ট্র দপ্তর সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তিনি স্বরাষ্ট্র দপ্তর ও মুখ্যমন্ত্রীর পদ চালাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে, বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন।
এ নিয়ে মানুষের মনে ক্ষোভ প্রশমিত হতে চলেছে। তাই মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে এ সরকার রাজ্যে একটি দাঙ্গা লাগাতে চাইছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো প্রশ্ন তুলে বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা কেন্দ্রে যদি পিস্তল উঁচিয়ে দিন দুপুরবেলায় এভাবে মানুষকে প্রাননাশের হুমকি দেয় তাহলে কোথায় প্রশাসন? কার স্বার্থে কাজ করছে তারা? এভাবে আরোক্ষা প্রশাসনও দিন দিন মানুষের কাছে আস্থা হারাচ্ছে। এগুলো সার্বিক বিষয় নিয়ে আগামী ২১ অক্টোবর থেকে রাস্তায় নামবে কংগ্রেস। মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। একটা বিষাদের সুর সারা রাজ্যের মধ্যে বয়ে চলেছে বলে জানান তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই দিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের মুখোপাধ্যায় প্রবীর চক্রবর্তী, শাহজাহান ইসলাম।