স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ সেপ্টেম্বর : আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর আগরতলার সুকান্ত অডিটোরিয়ামে অল ত্রিপুরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এসোসিয়েশনের ১৫ তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা।
এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সাধারণ সম্পাদক মনমোহন রাজবংশী। শনিবার অল ত্রিপুরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা। ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিস রুলস ১৯৮৭ সালে প্রণয়ন হয়। সেই সময় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ারদের জন্য প্রাথমিক পদ রাখা হয় “ওভারশিয়র” এবং ডিগ্রী ইঞ্জিনীয়ারদের প্রাথমিক পদ ছিল “জুনিয়র ইঞ্জিনীয়ার”। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়াররা তখন পাঁচবছর “ওভারশিয়র” পদে চাকুরি করার পর “অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনীয়ার” পদে পদোন্নতি জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন।
কিন্তু ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিস রুলস চালু হওয়ার আগে ডিগ্রী ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়াররা একই কাজের জন্য নিয়োজিত হতেন। সেই সময় ডিগ্রী ইঞ্জিনীয়াররা ৫ টি অ্যাডভান্স ইনক্রিমেন্ট এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়াররা ৩ টি অ্যাডভান্স ইনক্রিমেন্ট পেতেন। পরবর্তী সময় ১৯৮৯ সালে ডিগ্রী ইঞ্জিনীয়ারদের জন্য জুনিয়র ইঞ্জিনীয়ার গ্রেড-১ এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ারদের জন্য জুনিয়র ইঞ্জিনীয়ার গ্রেড-২ পদের নামকরন করা হয় এবং তখন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য জে ই -২ থেকে জে ই -১ পদের ৪ বছর পর ডিগ্রী ও ডিপ্লোমাদের মধ্যে ৪ বছর ব্যবধান করা হয়। এই ভাবে বছরের পর বছর ডিগ্রী ও ডিপ্লোমাদের মধ্যে ব্যবধান বাড়াতে থাকে। এইভাবে ক্রমাগত একের পর এক আঘাত আনার ফলে ত্রিপুরা রাজ্যের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ারদের অবস্থা আজ শোচনীয়। চাকুরীর জন্ম লগ্ন থেকে একই পদে চাকুরী করে কোন প্রমোশন ছাড়াই অনেক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার চাকুরী থেকে অবসর যেতে বাধ্য হয়েছেন।
উচ্চপদে ইঞ্জিনীয়ারদের জন্য প্রচুর সংখ্যক পদ খালি পড়ে আছে, কিন্তু পূবর্তন সরকারের ভ্রান্ত নীতি গ্রহনের ফলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়াররা যথাসময়ে প্রমোশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বহু বছর ধরে। যদিও বর্তমান রাজ্য সরকার ২০২১ সালে এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের সমস্ত স্তরের ইঞ্জিনীয়ারদের এককালীন এডহক প্রমোশনের ব্যবস্থা করেছেন এবং এর ফলে ইঞ্জিনীয়ারদেরও কিছুটা বঞ্চনা লাঘব হয়েছে বলে জানান তিনি। কিন্তু বর্তমানে যে সমস্যাগুলি নিয়ে ইঞ্জিনিয়াররা ভুগছে সে বিষয়গুলো নিয়ে সম্মেলনে দাবি তোলা হবে।
অর্থাৎ মঞ্চে মন্ত্রীদের রেখেই দাবি গুলি করবে সংগঠনের কর্মকর্তারা। তাদের দাড়ির প্রাথমিক পে স্কেল উন্নতিকরণ করা, ত্রিপুরা ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসে পুরনো পদোন্নতির নিয়মাবলী বাতিল করা, রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তরে ইঞ্জিনিয়ারের যে শূন্য পদ সৃষ্টি হয়ে আছে সেগুলি অবিলম্বে পূরণ করা, সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং পদে প্রমোশনের ব্যবস্থা চালু করা, এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে প্রমোশনের ক্ষেত্রে ডিগ্রী ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পুরনো আনুপাতিক হার চালু করা সহ একাধিক দাবি তোলার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে সংগঠনের কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, ইঞ্জিনিয়ারদের বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শূন্যপদ থাকার পরও সরকার পূরণ করার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। এমনটাই অভিযোগ বেকার ইঞ্জিনিয়ারদের। হয়তো আগামী রবিবার সম্মেলন থেকে এ বিষয়টি নিয়ে সরব হতে পারে সংগঠনের কর্মকর্তারা। শনিবার এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা। তবে মন্ত্রীদের মঞ্চে বসিয়ে রেখে যদি দাবিগুলি তুলে ধরে তাহলে তার জবাব কি দেবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।