স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ সেপ্টেম্বর : ” ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম । ধান্তারীং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্ ।। “
অর্থাৎ, জবাপুষ্পের মত লোহিত বর্ণ, অন্ধকারণাশক মহাদ্যুতিবিশিষ্ট সর্ব্বপাপবিনাশক কশ্যপপুত্র সূর্য্যকে প্রণাম করি। আর সেই বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণই যেন ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে গুজরাটের বৈশ্বিক মহাসমারোহে। এখানেই শুরু হয়েছে তিন দিনের (১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪) ফোর্থ গ্লোবাল রিনিউবল এনার্জি ইনভেস্টার্স মিট এন্ড এক্সপো। পুননবীকরণ শক্তির প্রধান উৎসই যে সূর্য, সেই সূর্যের আলোয় আর শক্তিকে আধারিত করেই গোটা পৃথিবী এবার শক্তি যোগানোর পথে এগোচ্ছে। প্রচলিত শক্তির (বিদ্যুৎ ) উৎস গ্যাস কিংবা কয়লা ফুরিয়ে যাবার পথে সেই আশঙ্কার কালো মেঘ দিয়ে সরিয়ে এবার সৌর শক্তিকে ভর করেই এগোবে গোটা পৃথিবী ।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত মোট ৫০০ গিগা ওয়াট সৌরশক্তি উৎপাদন করার পরিকল্পনা স্থাপন করেছে। যেখানে ত্রিপুরা রাজ্য ৮১৫ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে সংকল্প পত্রে স্বাক্ষর করেছে। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ স্বাক্ষরিত এই সংকল্প পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে রাজ্যে সৌরশক্তি উৎপাদিত হবে ৩৯৬ মেগাওয়াট। এছাড়া হাইড্রো পাম্প স্টোরেজে উৎপাদিত হবে ৪০০ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ। হাইড্রো- তে ১৫ মেগাওয়াট এবং বায়ো এনার্জিতে ২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে মোট ১৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা সৌরশক্তি উৎপাদনে এবং ব্যবস্থাপনায় গোটা দেশেই উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে। এবারের মহাসমারোহে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজীর উপস্থিতিতে গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে তৃতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে ত্রিপুরা ।
রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ সোমবার এই পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এই গ্লোবাল রিনিউয়াবল এনার্জি ইনভেস্টার্স মিট এবং এক্সপোতে হাজির পৃথিবীর সমস্ত দেশের প্রতিনিধি এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ তাদেরকে ত্রিপুরায় বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এখানে শিল্প বান্ধব সরকারের পাশাপাশি অত্যন্ত বলিষ্ঠ শিল্পনীতি যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে জমির সহজলভ্যতা, বিনিয়োগের পরিবেশ এবং শক্তি ক্ষেত্রে ও শিল্প বিনিয়োগের সর্বসুবিধা । ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা এনার্জি ভিশন ২০৩০ প্রস্তুত করে নিয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই ত্রিপুরা রেনুয়েবল এনার্জি পলিসিও প্রস্তুত হয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সৌর শক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ত্রিপুরা এক নতুন ইতিহাস তৈরির পথে। গুজরাটে আয়োজিত চতুর্থ গ্লোবাল রিনিউবল এনার্জি ইনভেস্টার্স মীট এন্ড এক্সপো- তে ট্রেডা অর্থাৎ ত্রিপুরা রেনুয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি বিশেষভাবে সম্মানিত হয়েছে পুননবীকরণ শক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য। এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী রতন লাল নাথের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ট্রেডা এর মহাপরিচালক মহানন্দ দেববর্মা এবং যুগ্ম অধিকর্তা দেবব্রত শুক্লদাস।