স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৮ সেপ্টেম্বর : রাজ্যে অর্ধলক্ষাধিক শূন্যপদ থাকার পরও সরকার বেকারদের সাথে প্রতারণা করে চলেছে। সরকারের বেকার বিরোধী মুখোশ খুলে দিতে রাজ্যের বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের বেকারদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট তিন দফা দাবি তোলা হবে। রবিবার দুপুরে রাজধানীর প্যারাডাইস চৌমুহনী স্থিত ছাত্র যুবক ভবনে ডি ওয়াই এফ আই এবং টি ওয়াই এফ আই -র যৌথ উদ্যোগে সাংবাদিক সম্মেলন করে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে এই কথা বলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিক।
তিনি বলেন আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর রাজ্যের বামপন্থী চারটি ছাত্র যুব সংগঠনের দাবি দিবস। এদিন সবার জন্য কাজ ও সবার জন্য শিক্ষার দাবি তুলে আগরতলা শহরে কর্মসূচি আয়োজন করা হবে। পরবর্তী সময় রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমারকে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। ২০ এবং ২১ সেপ্টেম্বর রাজ্যের সমস্ত জেলা শাসকদের কাছে সরকারের উদ্দেশ্যে গণ ডেপুটেশন দেওয়া হবে। মূলত দাবি হবে রাজ্যের সমস্ত দপ্তরের শূন্যপদ পূরণ করা, নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পূর্ণ করা এবং আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল করা। পরবর্তী কর্মসূচি ২৬ এবং ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এই দুইদিন ডিওয়াইএফআই এবং টি ওয়াই এফ প্রতিটি ইউনিটে কর্মসংস্থানের জ্বলন্ত ইস্যু নিয়ে পোস্টারিং করবে। ৩০ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিন দফা দাবিতে গণচিঠি প্রেরণ করা হবে বলে জানান তিনি। ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি আরও জানান শারদ উৎসবের পর আগরতলায় গণ কনভেনশনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ে আন্দোলন শুরু করা হবে। এদিকে ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব বলেন রাজ্যের বেকারদের যন্ত্রণার চাপা দিতে সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তিকে লেলিয়ে দিচ্ছে। রানির বাজারের সাম্প্রতিক ঘটনার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ২৫ আগস্ট রাতের বেলা একসাথে ১৭ টি বাড়ি আক্রমণ সংগঠিত করে দুর্বৃত্তরা।
পরবর্তী সময় পাঁচজন গ্রেপ্তার হলে সেখানে আবার মন্ত্রী গিয়ে আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেন যে দুর্বৃত্তদের তিনি মুক্তি দেবে। অপরদিকে রাজ্যের মন্ত্রিসভার অপর এক সদস্য উস্কানিমূলক মন্তব্য করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিরোধী দলনেতা নিন্দা জানানোর পর এক বর্বর বাহিনীকে লেলিয়ে বিরোধী দলনেতার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায়। এই ঘটনা গুলি দ্বারা প্রশ্ন তোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না? তিনি আরো বলেন, রাজ্যে বেকারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে সরকার। একের পর এক প্রতারণা করে চলেছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। বিভিন্ন সময় বিধানসভায় বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর মন্ত্রী টিংকু রায় জানিয়েছেন ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যে সরকারি চাকরি হয়েছে ১১,৫৩২ জনের। কিন্তু সরকার ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বছরে ৫০ হাজার চাকরি দেবে, কিন্তু দেখা গেছে বছরে ২০০০ চাকরিও দেয়নি সরকার। সবচেয়ে বড় প্রতারণার ঘটনা যেটা সরকার করেছে সেটা হল আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের পর্যন্ত সরকার চাকুরীর কৌটায় ঢুকিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন সময় তাদের সংযুক্ত করে বিভিন্ন পরিসংখ্যান জনসম্মুখে তুলে ধরা হচ্ছে। ২০১৮ সালে এই বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে রাজ্যে ১৬ হাজার শূন্যপদ তৈরি করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। প্রায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য অফার বিলি করা বাকি ছিল। কিন্তু বিজেপি প্রতিষ্ঠিত হয়ে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। তাই বর্তমান সরকারের এই বেকার বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সকলকে রাস্তায় নামার জন্য আহ্বান জানান তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডি ওয়াই এর ফাই এবং টি ওয়াই এফ -এর অন্যান্য নেতৃত্ব।