স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ আগস্ট : সরকার ও শাসকদলের ভুলত্রুটির কারণে মানুষকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কারণ বন্যায় সরকারের উদাসীনতায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে গত ২৫ আগস্ট রাণীরবাজারে সাজানো চক্রান্ত করে ভুল বোঝাবুঝির পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন। সারা রাজ্যে বাংলাদেশের ঘটনার উদাহরণ টেনে এক অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে এক সাক্ষাৎকারে একথা জানান সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক তথা বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে দলীয় যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই বৈঠকে রানীরবাজারে এই পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়। কারণ যারা এ ধরনের ঘটনা হতে দিচ্ছে তাদের মানুষ ছেড়ে দেবে না। বাংলাদেশ দেখে মন্ত্রী এবং শাসক দলের শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। কারণ রানীরবাজারের ঘটনা তাদের অগ্নিপরীক্ষা। কারণ তাদের অন্ধ স্নেহের কারণে কিছু নিরীহ মানুষের বাড়ি পুড়েছে। শুধু মানুষের বাড়ি পড়ে নি, শাসকদলের নেতাদের মুখও পুড়েছে। তাই প্রশাসনের কঠোর এবং নিরপেক্ষ হওয়ার প্রয়োজন। পাশাপাশি তিনি এই ঘটনা নিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর কাঁধে দোষ চাপিয়েছেন। তিনি বলেন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাদের দল এবং সরকার ভাবুক এভাবে সরকার চলবে কিনা? সেদিন মন্ত্রী চাইলে এই ঘটনা রুখে দিতে পারতেন। এখন তিনি মানুষের কাছে গিয়ে যেভাবে হাত জোড় করছেন সেটা তাঁর ব্যর্থতা। এই মন্ত্রীর বয়সও কম। সামনে তার লম্বা ক্যারিয়ার রয়েছে।
এই ঘটনা ঘিরে কার গালে থাপ্পড় পড়েছে সেটা তাঁর ভাবার প্রয়োজন। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা দ্বারা যে রাজ্যের অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে সেটা নিয়ে রাজ্যের জন্য, জনগণের জন্য এবং নিজের জন্য ভাবার প্রয়োজন। সমাজবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক শান্তি সম্প্রীতি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে সরকার এবং শাসক দলের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে শাসক দলের পক্ষে দলের ঊর্ধ্বে উঠে দুষ্টুদের দমন করতে পাশে দাঁড়াবে সিপিআইএম। কারণ রানীবাজারের মত ঘটনা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম কোন ভাবেই সমর্থন করে না। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রয়োজন। নয়তো কোন অংশের মানুষের আর দুঃখ কষ্ট হবে না। নাহলে ত্রিপুরা জ্বলে পড়ে ছারখার হয়ে যাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি রানীরবাজারের এই ঘটনা নিয়ে সিপিআইএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিন সরকারকে কিভাবে সঠিক দিশা দেখানো যায় সে বিষয় নিয়ে কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি যে বন্যা পরিস্থিতি রাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারকে দিশা দেখানো যায় সেই বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। আরো বলেন শাসক দল স্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম করে এখন তাদের ফল ভোগ করতে হচ্ছে। দিকে দিকে প্রধান এবং উপপ্রধান নির্বাচন নিয়ে বিধায়ক গ্রেপ্তারের দাবি তুলছে, পঞ্চায়েতে তালা ঝুলাচ্ছে এবং রাস্তা অবরোধ করছে। সিপিআইএম একটি দায়িত্বশীল দল হিসেবে আগামী দিন এ দাবানল পরিস্থিতি নিয়ে কিভাবে ভূমিকা পালন করবে এবং সরকারের কাছে আইন-শৃঙ্খলা যাতে সঠিকভাবে পরিচালনা হয় তার দাবি জানানো হবে।