Monday, September 16, 2024
বাড়িরাজ্যজোট মিল কর্মচারীদের মহাকরণ অভিযান রুখে দিল পুলিশ, মাঝ রাস্তায় বসে আন্দোলন...

জোট মিল কর্মচারীদের মহাকরণ অভিযান রুখে দিল পুলিশ, মাঝ রাস্তায় বসে আন্দোলন শুরু করলেন তারা

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ আগস্ট :পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছলচাতুরি, প্রতারণা ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার জুট মিলের সমস্ত শ্রমিক কর্মচারী ও পেনশনাররা স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে জমায়েত হয়। সেখান থেকে অর্থ দপ্তরের সচিবের উদ্দেশ্যে মহাকরণ অভিযান সংঘটিত করে তারা। তাদের বক্তব্য, ত্রিপুরা সরকারের অর্থ সচিবের নিকট পাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে মহাকরণ অভিযান সংঘটিত করা হয়। 

ত্রিপুরা চটকল শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক ধনমনি সিনহা, বলেন তারা এদিন শান্তিপূর্ণভাবে অর্থ দপ্তরের সচিবের উদ্দেশ্যে মহাকরণ অভিযান সংগঠিত করছিল। কিন্তু পুলিশ সার্কিট হাউজ এলাকায় তাদের মিছিল আটকে দেয়। তারপর তারা রাস্তার পাশে আন্দোলনে বসে। তিনি বিস্তারিত বলতে গিয়ে জানান, “উচ্চতর ও উচ্চ আদালত নির্দেশিত, চতুর্থ বেতন পর্ষদের সুপারিশ মোতাবেক ১৯৯৬ সালের ১ জানুয়ারি কর্মরত ১ হাজার ৬৪৭ জন জুটমিল কর্মী-সঙ্কুলের ন্যায্য বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবিয়ে পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক মঙ্গলবার মহাকরণ অভিযান করল জুটমিল শ্রমিক-কর্মচারী ও পেনশনার্সরা।আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্রাপকদের পূর্ণাঙ্গভাবে তার বেতন ভাতা, গ্রেচ্যুইটি, লিভ সেলারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে অর্থরাশি মিটিয়ে দেওয়া। কারণ ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ত্রিপুরা হাই কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অজয় রাস্তোগী জুট মিল কর্মচারীদের দায়েরকৃত মামলার রায়ে রাজ্যের সরকার ও ত্রিপুরা জুটমিল কতৃপক্ষকে ১৯৯৬ সাল থেকে চতুর্থ বেতনক্রমের সুপারিশ অনুযায়ী সেই সময়ে চাকুরীরত জুটমিল শ্রমিক-কর্মচারী সকলকে তাদের বর্ধিত বেতন-ভাতা, গ্রেচুটইটি, লিভ-সেলারী ইত্যাদির সুফল রায়দানের ছয় মাসের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই রায়ের বিরোদ্ধে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রদত্ত আপিল মামলা মাহামান্য ইন্দ্রজীৎ মাহান্তির ডিভিশন বেঞ্চ ২০২২ সালের গত ২১ সেপ্টেম্বর খারিজ করে দেন।

ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরোদ্ধে দায়ের করা এস. এল. পি সুপ্রীম কোর্ট ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং খারিজ করে দিয়ে চার মাসের মধ্যে রায় কার্যকর করার নির্দেশ দেন। এই সব ব্যর্থ অপপ্রয়াসে বহু সময় অতিক্রান্ত হয়ে যায়। কাল-বিলম্ব করে ন্যায্য প্রাপ্য না দেওয়ার চেষ্টা চলিয়ে যান। সীমাহীন বিরম্বনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যে সরকারের শীর্ষ আধিকারীক ও জুটমিল কতৃপক্ষের বিরোদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়। ২০২৪ সালের গত ১০ জুলাই জুটমিল কতৃপক্ষ সঠিক তথ্যপত্র তথা হলপনামা আদালতে হাজির করতে পারেনি। ফলে আদালত তিন সপ্তাহের সময় বেধে দিয়ে, পূর্নাঙ্গ তথ্য-সম্বলিত হলফনামা পেশ করার কড়া নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক চার্জসিট পেয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গোঁজামিল এক হলফনামা গত ৭ই অগাষ্ট আদালতে পেশ করেন। তিনি আরো জানান, এই হলফনামায় বলা হয়েছে যে- জুটমিলের উৎপাদন বন্ধ এবং রুগ্ন হয়ে পড়েছে, অর্থের অভাব ও ঋনের ভাড়ে ন্যুজ, পর্যাপ্ত তহবিল হাতে নেই, ফলে শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রাপ্য যথা বিহীত মিটিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। তবে বিভিন্ন উপায়ে জুটমিলের সহায়-সম্পত্তির বিনিময়ে ঋন আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সুতরাং তহবিল বরাদ্ধ হলেই সকলের প্রাপ্য মিটিয়ে দেয়া হবে। ৩০ কোটি টাকা সরকার বরাদ্ধ করেন। তা-থেকে যে দুটি ইউনিয়ন মামলা করেছেন, তারপর মামলা করা সংগঠনগুলি পক্ষ থেকে নাম নিয়ে এসে ১৯৭ জন অর্থ মিটিয়ে দেয়। তাই দাবি জুট মিলের ১ হাজার ৬৪৭ জন শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া এক সাথে মঞ্জুর করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে হবে বলেও দাবি জানান তিনি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য