Wednesday, January 22, 2025
বাড়িরাজ্যসমাজের মেরুদন্ডকে পিটিয়ে খুন করল রাষ্ট্রবাদী দলের নেতারা

সমাজের মেরুদন্ডকে পিটিয়ে খুন করল রাষ্ট্রবাদী দলের নেতারা

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ আগস্ট : শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পিটিয়ে খুন করল শাসক দলের চুনোপুটি নেতা এবং তার সঙ্গপাঙ্গরা। ঘটনা গত বৃহস্পতিবার উদয়পুর পল্ট্রি রোড এলাকায়। আক্রান্ত শিক্ষককে পুলিশ এদিন রাতেই থানায় নিয়ে আসে। মারাত্মক আঘাতের পরও পুলিশ চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। শুক্রবার আদালাতে পাঠালে বিচারপতির সামনেই শিক্ষক অভিজিৎ দে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং রক্ত বমি শুরু করে। পরবর্তী সময় গোমতী জেলা হাসপাতাল নিয়ে গেলে জিবি হাসপাতালে রেফার করা হয়।

 শনিবার দুপুরে এই শিক্ষকের মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে জানা যায়, শিক্ষকের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকার পরও মৃত্যুর পর মৃতদেহ ময়না তদন্ত না করে ছেড়ে দেয় জিবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ধারনা করা হচ্ছে বিশেষ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয় জিবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতদেহ শনিবার রাতে উদয়পুর নিয়ে আসা হলে শিক্ষকের পরিবারের লোকজন মৃতদেহটিকে নিয়ে যায় গোমতী জেলা হাসপাতালে। বর্তমানে গোমতী জেলা হাসপাতালের মর্গে রয়েছে মৃতদেহ এবং রবিবার ময়না তদন্তের পর তুলে দেওয়া হবে। মৃত শিক্ষকের স্ত্রী’র অভিযোগ পল্ট্রি রোডের শংকর কর্মকারের বাড়িতে তার স্বামীকে প্রথমে ব্যাপক পেটানো হয়, তারপর তাকে খবর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সেই বাড়িতে। তার সামনে পুনরায় মারধর করা হয়। অভিযোগ এক ছাত্রীকে অশ্লীল কথা বার্তা বলেছেন শিক্ষক অভিজিৎ দে। যদিও মৃত শিক্ষকের স্ত্রী জানেন না অশ্লীল কথা বলেছেন বা তাদের কাছে বাজে কথা বলার কোন প্রমান আছে কিনা সেটাও বলতে পারছেন না। অভিজিৎ দে -র স্ত্রী আরো জানান, শংকর কর্মকার আগে থেকে বাড়িতে প্রচুর লোক জমায়েত করে রেখেছিলেন।

অভিজিৎ ছাত্রীকে পড়াতে যাওয়ার পরেই শংকর কর্মমার, জীবন সাহা সহ কয়েকজন এলোপাথারি মারধর করে। সকলের নাম তিনি জানেন না, তবে চেহারা দেখলে চিনবেন। শিক্ষক অভিজিৎ দে ইংরেজী বিষয়ক সরকারী শিক্ষক। তার বাড়ি উদয়পুর রাজর্ষি কলাক্ষেত্র সংলগ্ন এলাকায়। এসটিপিজিটি পরীক্ষা দিয়ে বিষয় শিক্ষকের চাকুরী পেয়েছেন। এলাকাবাসী সূত্রে খবর, সরকারী শিক্ষক হওয়ার বহু আগে থেকেই অত্যন্ত সুনামের সহিত প্রাইভেট টিউশনের কাজে যুক্ত ছিলেন। অন্তত ২০ বছর যাবৎ গৃহ শিক্ষকতা করছিলেন। কিন্তু কোন দিন কোন ছাত্র/ছাত্রী কিংবা অভিভাবকের সাথে দুর্ব্যবহার বা কোন খারাপ কাজ করার অভিযোগ নেই। মৃত শিক্ষকের স্ত্রী নিজেও টেট পরীক্ষা পাস করা একজন সরকারী শিক্ষিকা। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য হলো অভিজিৎ যদি সত্যিই দোষী হতেন তাহলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারতেন। কিন্তু শংকর কর্মকার এলাকার বিজেপি নেতা বলে তার হাতে কেউ আইন তুলে দেয়নি।

দীর্ঘদিন ধরে সংকর কর্মকারের মাতব্বরিতে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। এবার যারা সমাজের মেরুদন্ড তাদের খুন করতে ময়দানে নেমেছে তথাকথিত এই বিজেপি নেতা। তার বিরুদ্ধে শুধু কঠোর শাস্তি নয়, ফাঁসির দাবি তুলল স্থানীয়রা। এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার বইছে। কারণ পুলিশ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। পুলিশ সেটা বুঝে উঠতে পারি নি এটা কোনভাবেই হয় না। এলাকাবাসীর দাবি পুলিশ হয়তো এই শাসক দলের নেতার কথায় উঠে বসে। যার কারণে আজ এক শিক্ষককে হারাতে হলো সমাজের। তবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তুলেছে সকলে। এবং যারা এই ঘটনায় দোষে তাদের শনাক্ত করে ফাঁসির দাবি তুলেছে আমজনতা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য