স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ আগস্ট : জুট মিলের শ্রমিক কর্মচারীরা উচ্চ আদালতে রায় কার্যকর করার জন্য আদালত অবমাননার মামলা করেছে। এ মামলায় যারা অভিযুক্ত তাদের উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ আট সপ্তাহের সময় বেধে দিয়েছে। এই আট সপ্তাহের মধ্যে উচ্চ আদালতের রায় কার্যকর করার জন্য বলা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন। ইতিমধ্যে জুট মিল কর্মচারী ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১৯১ জন শ্রমিককে আর্থিক বরাদ্দ করা হয়েছে।
এর জন্য জুট মিলের ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু জুট মিলের তথ্য অনুযায়ী আরো ২২৭ জন শ্রমিক জুট মিলের সুফল পাবেন। এর জন্য আরো ৩৫ কোটি টাকার প্রয়োজন। এই ৩৫ কোটি টাকা জোগাড় করার জন্য জুট মিল কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের কাছে দরখাস্ত দিয়ে ঋণ গ্রহণের জন্য আবেদন করেছে। পাশাপাশি জোট মিলে বিভিন্ন জমি বিক্রি করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর জন্য জোট কর্তৃপক্ষ ৮ মাসের সময়সীমা চেয়েছিল। কিন্তু উচ্চ আদালত আট সপ্তাহে সময় বেধে দিয়েছে তাদের। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি অজয় রাস্তগী জুটমিল এবং রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল বেতন কম সুপারিশে শ্রমিক কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতা সমেত ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি ১ তারিখ থেকে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য। তারপর জুটমিল এবং রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতে আবার আপিল করে। কিন্তু ২০২২ সালে এ আপিল বাতিল হয়ে যায়। তারপর রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এস এল পি খারিজ করে দিয়ে নির্দেশের ৬ মাসের মধ্যে রায় কার্যকর করার জন্য। কিন্তু যায় কার্যকর করেনি সরকার এবং জোটমিল কর্তৃপক্ষ। তারপর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা হয়। এই মামলায় গত ১৯ জুলাই প্রধান বিচারপতি অপরেশ কুমার সিং এবং বিচারপতি অরিন্দম লোধের ডিভিশন বেঞ্চ একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়ে বলেছিল আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে জুট মিলকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে দরখাস্ত করে রায় কার্যকর করার জন্য সময়সীমা বাড়াতে হবে। অথবা জুট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এবং রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হবে। কিন্তু এই আদেশের পর রাজ্য সরকার এবং জুটমিল কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের ছুটে যায়। তখন সুপ্রিম কোর্টে ১৭ জুলাই রাজ্য সরকারকে সময়সীমা বাড়ানোর জন্য যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেই নির্দেশ অস্বীকার করে বলে তারা উচ্চ আদালতের সাথে সমস্ত বক্তব্য রাখবেন। সে অনুযায়ী বক্তব্য উপস্থাপন করে জানায় কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তারা। আরো বলো রাজ্য সরকারের কাছে ৬ কোটি টাকা পাবে জুট মিল। সেই টাকা রাজ্য সরকার মিটিয়ে দিলে কিছু সংখ্যক কর্মচারীর বঞ্চনার সমস্যা সমাধান হয়। আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে যদি সমস্যার সমাধান না করে তাহলে চার্জ গঠন করে শাস্তির মধ্যে পড়বে বলে জানিয়ে দেন আইনজীবী পুরুষোত্তম রায় বর্মন।