স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ জুলাই :
মাত্র ৬ বছরের শাসনকালেই বর্তমান শাসকদলের নেতৃত্বদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে সাধারণ জনগণ। তথাকথিত উন্নয়নের নাম করে একাংশ শাসকদলের নেতৃত্ব যেভাবে লুট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তাতে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে সাধারণ জনগণের। তাই ভুক্তভোগী জনগণ শাসকদলের নেতৃত্ব -র বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে বাধ্য হচ্ছে। অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত লেবাছড়া এডিসি ভিলেজের সূত্রধর পাড়ার রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবত অত্যন্ত বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ, গত ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে বিজেপি দলের নেতৃত্ব এলাকার মানুষদের আশ্বাস দেন যে তারা যদি বিজেপির পক্ষে ভোট দান করেন তাহলে সরকার আসার পর অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাদের রাস্তার সমস্যা সমাধান করা হবে।
তখন বিজেপি নেতৃত্তের প্রতিশ্রুতিপূর্ণ সুন্দর সুন্দর কথায় বিশ্বাস করে তারা সরকার পরিবর্তনে অংশগ্রহন করেছিল। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর তৎকালীন বিজেপি দলের নেতৃত্বরা বসন্তের কোকিলের মত উড়ে গেছে বলে এলাকাবাসীদের অভিযোগ। তাদের সমস্যার সমাধান থাক দূরের কথা বেহাল রাস্তাটি দিয়ে এলাকার জনগণ কিভাবে চলাচল করছে তা সরেজমিনে দেখা পর্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করেননি বর্তমান শাসক দলের নেতৃত্বরা। ভোট আসে ভোট যায়। আর প্রতিটি নির্বাচনের আগে শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছে না এলাকার জনগণ। তাই গত লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে এলাকাবাসীরা ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু শাসকদলের অমরপুর মন্ডল সভাপতি সঞ্জয় চক্রবর্তী সহ শাসক দলের নেতৃত্ব এলাকাবাসীদের আবারো আশ্বাস দেন যে এবার নির্বাচনের পর তাদের রাস্তার সমস্যা সমাধান করা হবে। কিন্তু সমস্যার সমাধান থাক দূরের কথা মন্ডল সভাপতির ইটভাট্টার মাটি বোঝাই গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে চলাচলের ফলে রাস্তাটি আরো বেহাল হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণের ফলে রাস্তার একটি বড় অংশ জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। যার ফলে এলাকাটি হাট বাজারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রাস্তার ওই ভাঙ্গা অংশের উপর দুটি কাঠের টুকরো বিছিয়ে মানুষজন জীবনের ঝুকি নিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। এছাড়াও দশমি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার উপর জল কাঁদা জমে থাকায় রাস্তাটি সম্পূর্ণভাবে চলাচল অযোগ্য হয়ে রয়েছে। প্রতিনিয়ত এলাকার মানুষদের সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। গর্ভবতী মা ও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া আসা করতে দুর্গতির শেষ নাই। এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সহ পরিবারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী হাট বাজার থেকে মাথায় বোঝাই করে আনতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী জনগণ জানান ডটকমের যুগে যখন গোটা দুনিয়া দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বর্তমান সরকারের আমলে এই এলাকার মানুষ ধীরে ধীরে আদিম যুগে চলে যাচ্ছে। সূত্রধর পাড়ায় প্রায় ১২০ পরিবারের বসবাস। যারা বিশেষ করে রাস্তাটির উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও ডেপাইছড়ি ও নীলধন পাড়া প্রভৃতি এলাকার মানুষদের নতুন বাজারে আসা-যাওয়ার জন্য এই রাস্তাটিকে ব্যবহার করে থাকে। এলাকাবাসীর আরো অভিযোগ করেন বৃষ্টির জলের তোরে রাস্তাটি ভেঙ্গে বর্তমানে এলাকাটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলেও স্থানীয় ভিলেজ কমিটি কিংবা ব্লক প্রশাসন কেউই একবারের জন্যেও তাদের খোঁজখবর নেননি। ফলে তারা তাদের বর্তমান দুরবস্থা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবে তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। এমত অবস্থায় স্থানীয় বিধায়ক কিংবা করবুক ব্লক প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করছে এলাকার সাধারণ জনগণ।