স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ মে : সাংবাদিকরার সুবিধার লেইগ্যা ইতা করতে হৈব- খাইয়া-দাইয়া কাম নাই” এই কথাটি বলে শনিবার প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত ধিক্কার মিছিলে বলেন মন্ত্রী রতনলাল নাথ। একজন মন্ত্রীর মুখে এ ধরনের মন্তব্য রীতিমতো ধিক্কার জানিয়েছে সাংবাদিকরা। যদিও মন্ত্রী রতন নাথের এ ধরনের মন্তব্য নতুন নয়। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের সাদর আমন্ত্রণ জানিয়ে বিগত দিনেও মন্ত্রী মশাই এ ধরনের মতিভ্রমের কাজ করেছেন।
তিনি ভুলেই গেছেন সংবাদ মাধ্যম জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। সরকার এবং মন্ত্রী বাহাদুরের কাছে দায়বদ্ধ নয়। যার কারণে মন্ত্রী বাহাদুরের মাঝে মাঝে মাথা গরম হয়ে গেলে মুখে যাই আসে তাই বলেন তিনি। এবং লজ্জায় ফেলে দেয় গোটা বিজেপি দলকে। কারণ প্রশ্ন উঠে এটাই কি রাষ্ট্রবাদী দল বিজেপি -র রাজনৈতিক শিক্ষা? যে শিক্ষায় গড়ে উঠেছেন মন্ত্রী বাহাদুর রতন লাল নাথ। যদিও মন্ত্রী মশাইয়ের এমন কেলোর কীর্তি রাজ্যবাসী আগে থেকেই দেখে অভ্যস্ত। বিরোধী রাজনৈতিক দল নিয়েও তিনি এমন অপাসঙ্গিক মন্তব্য করে কাতলা মাছ বলে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১৮ সালের আগে এই মন্ত্রী মশাই শেয়াল পন্ডিতের মতো রাজ্যের সংবাদ মাধ্যম অফিস গুলির মধ্যে ফাইলপত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের কাছে অনুরোধ করতেন উনার খবর পরিবেশন করার জন্য। আর ২০১৮ সালে সরকার প্রতিষ্ঠিত হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশীর্বাদ বর্ষনে পেয়ে যান শিক্ষামন্ত্রীর আসন। আর শিক্ষামন্ত্রী হয়ে তিনি রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে এমন কিছু ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যার খেসারত আজ বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের নামে ভুগতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। তিনি যতদিন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ততদিন তিনি কোয়ালিটি এডুকেশনের নাম করে শিক্ষার অধিকার জনসাধারণের মৌলিক অধিকার থেকে ছিনিয়ে সরকারের মোটা কামাই এর ধান্দা বের করে দিয়েছেন।
বিনা পয়সা ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত প্রত্যেক ছেলে মেয়ের যে পড়াশোনার অধিকার সেটা পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছেন মন্ত্রী রতনলাল নাথ। আজ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাওয়ার পর মুখ দিয়ে যা আসে তাই বলেন তিনি। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি যেসব ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন সেই সিদ্ধান্তের গুলি ফল আজ ভোগ করতে হচ্ছে রাজ্যের ছেলে মেয়েদের। এবং মন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তের কারণে পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নিতে হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি ২০১৮ সালের পথ তিনি শিক্ষা মন্ত্রী থাকার সময় রাজ্যের ছেলে মেয়েরা ওনার বাসভবন কখন ঘেরাও করবে তার জন্য সকালে অপেক্ষা করতো। তারপর দ্বিতীয়বার তাকে আর শিক্ষা মন্ত্রী আসনে বসায় নি রাজ্যের মানিক সাহার নেতৃত্বাধীন সরকার। তারপর বিদ্যুৎ নিগমের মন্ত্রী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তিনি বিদ্যুৎ মন্ত্রীর আসনে বসার পর প্রতিদিন খবরের শিরোনামে উঠে আসে বিদ্যুৎ নিগমের নগ্ন পরিষেবা। সব মিলিয়ে দেখা গেছে রাজ্যের এই মন্ত্রী বেসরকারিকরণ করেছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে, এখন রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবা তুলে দিতে চলেছেন বেসরকারি সংস্থার হাতে। কিন্তু প্রথমে শিক্ষা ব্যবস্থা এবং দ্বিতীয় বিদ্যুৎ পরিষেবা কোনটারই মানোন্নয়ন করতে পারেননি রতন লাল নাথ। শুধুমাত্র ফাইল পত্র নিয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে অঙ্গিভঙ্গি করেছেন। আর এখন নিজের মুখ ঢাকতে সাংবাদিক দেখলেই তিনি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন। সাংবাদিকরা ওনার ব্যর্থতা সংবাদ মাধ্যমে জনসম্মুখে তুলে ধরছে। এবং আগামী দিনে তুলে ধরবে। এর থেকেই শিক্ষা নিতে হবে মন্ত্রী রতন লাল নাথকে।