Wednesday, March 26, 2025
বাড়িরাজ্যপিকচার আভি বাকি হ্যায় : প্রদ্যোত

পিকচার আভি বাকি হ্যায় : প্রদ্যোত

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ মার্চ : বিগত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসক দল বিজেপি -র সাথে তিপ্রা মথার সাখ্যতা স্পষ্ট না হলেও লোকসভা নির্বাচনের আগে শনিবার স্পষ্ট হয়ে গেছে সবকিছু। বিশেষ করে রাজ্যে বিজেপি সরকার কিভাবে আরো মসৃণ রাখা যায় তার জন্য কৌশল করে বিজেপি -র নেতৃত্ব তিপ্রা মথাকে জালে তুলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ ২০১৮ সালের আগে তিপরাল্যান্ডের দাবিতে জনজাতি অংশের মানুষকে যেভাবে আইপিএফটি দলে টেনে ছিল সেভাবেই দলে টেনে ছিল ২০১৮ সালের পর জনজাতিদের তিপরা মথা। যারা বর্তমানে রাজ্যের প্রধান বিরোধী আসনে বসে আছে।

 আর বিজেপি আইপিএফটিকে যেভাবে জালে ফেলেছিল সেই পথে অনুসরণ করে লোকসভা নির্বাচনের আগে তিপরা মথাকে জালে ফেলেছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞ রাজনৈতিক মহলের। কারণ আইপিএফটির সঙ্গে যেভাবে মডালিটি কমিটি গড়া হয়েছিল, সেইভাবেই মথার সঙ্গে গড়া হলো জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির। এবং এই দিল্লির নর্থ ব্লকে যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তিটি শনিবার হয়েছে, সেই চুক্তিতে কোথাও গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের কথা উল্লেখ নেই। কিন্তু জনজাতিদের হাতে নিয়ে প্রদ্যোতের দৌড় শুরু হয়েছিল গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের দাবি নিয়ে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনজাতিদের সামনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে লাস্ট ফাইটের কথা বলেছিলেন প্রদ্যোত। কিন্তু আজ সেই দাবি কি হয়েছে তার কোন নাম গন্ধ নেই। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যখন প্রদ্যুৎ অনশনে বসেছিল, তখন সম্মানজনকভাবে পিছিয়ে আনতে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে নিয়ে ত্রি- পাক্ষিক চুক্তি করতে স্বাক্ষর করে মথার আন্দোলনের রাজনৈতিক অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এবং আন্দোলনের ইতি এখানে দিয়েছে দিল্লি।

কারণ চুক্তিপত্রে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখতে অংশীদারদের যে কোন ধরনের প্রতিবাদ থেকে বিরত থাকতে হবে। আর এতে খুশি হয়ে গেলেন প্রদ্যুৎ সহ দলের সভাপতি বিজয় রাঙ্খল এবং বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা। অর্থাৎ সাপও মরল লাঠিও ভাঙলো না। আর চাতক পাখির মতো মহারাজার জন্য বড়মুড়ায় অনশন মঞ্চে বসে থাকা জনজাতিদের রবিবার এসে বোঝালেন জনজাতিদের অধিকার শেষ কথা। কিন্তু গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের দাবি কি হলো সে নিয়ে কোন উল্লেখ নেই প্রদ্যোতের মুখে। রাজনৈতিক মহলের এক কথায় পরিষ্কার আফিমের নেশায় দেখা স্বপ্নের মতো, সে স্বপ্ন আধরা থেকে গেল!

অথচ রবিবার বড়মুড়া যাওয়ার আগে প্রদ্যোত বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে বলেন, এর আগেও এ ধরনের চুক্তিপত্র স্বাক্ষর হয়েছিল। কিন্তু এবার যে চুক্তিপত্রটি স্বাক্ষর হয়েছে তা যতক্ষণ না পর্যন্ত বাস্তবায়ন হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভরসা রাখতে হবে। এই চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ার জন্য দায়িত্ব দিতে রাজ্য থেকে বিশেষ এমন ব্যক্তিকে বাঁচাই করতে হবে -যে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নয়, ইতিহাস সম্পর্কে অবগত রয়েছে এবং প্রশাসনিক দিকে অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার দ্বারা কমিটি গঠন করে চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। এই দাবি রাজ্যের গরিব অংশের মানুষের জন্য এবং যারা ৭৫ বছরে অধিকার পায়নি। পরে বড়মুড়ায় গিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রদ্যুৎ বলেন, কাউকে বাদ দিয়ে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়া যায় না। ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এডিসি -তে জনজাতিদের উন্নয়ন হতে হবে। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ইতিহাসে অনেক ভুল রয়েছে, যেগুলি সংশোধন করে জনজাতিদের ভালো ভবিষ্যৎ দিতে কাজ করতে হবে। আরো বলেন, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এ রাজ্যে প্রথম মহারাজা বীর বিক্রম দিয়েছিলেন। তিনি বলেন জনজাতিদের বহু ত্যাগের পর আজ এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তাই এটা শুধু প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের সাফল্য নয়। সমস্ত জনজাতির সফলতা। এবং আগামী দিনের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন পিকচার আভি বাকি হ্যায়। এদিন আমরণ অনশন মঞ্চের সমাপ্ত অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতি বিজয় রাঙ্খল, মেবার কুমার জামাতিয়া সহ অন্যান্যরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য