স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৫ ফেব্রুয়ারি : ত্রিপুরা রাজ্যে কিডনির সমস্যা জনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। তাই রাজ্যের কিছু চিকিৎসক ও নার্সকে কিডনি প্রতিস্থাপন ও চিকিৎসার প্রশিক্ষণের জন্য বহিঃরাজ্যে পাঠানো হয়েছে। সহসাই জিবি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নেতাজি সুভাষ বিদ্যানিকেতন স্কুল মাঠে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা-২০২৩ -এর সূচনা করে এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রীর ডাক্তার মানিক সাহা। প্রদীপ প্রজ্জলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষ যখন অসুস্থ হয় তখন হাসপাতালের ব্যাডে শুয়ে থাকে, এবং সে সময় মানুষ সবচেয়ে বেশি অসহায়তা অনুভব করেন। এই বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত জন আরোগ্য যোজনা প্রকল্প চালু করেছেন।
রাজ্যের বহু পরিবার এই প্রকল্পের আওতা ভুক্ত হয়েছে। এখনো রাজ্যের বেশ কিছু পরিবার প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান প্রকল্পের বাইরে রয়েছে। সেই সকল পরিবার গুলির কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান প্রকল্পের ন্যায় মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরবর্তী সময় বিধানসভায় এই প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রকল্প চালু করা শেষ নয়, প্রকল্প স্থায়ী করা বড় বিষয়। তাই এই প্রকল্প চালু করার আগে বহুবার অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন আধিকারিকদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য চিকিৎসা সংক্রান্ত সুরক্ষা প্রদান করা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদে কর্মরত সরকারি কর্মচারীরাও মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান ত্রিপুরা রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ডোনার মন্ত্রক থেকে ৫ টি প্রকল্পের জন্য ৭১৭ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। ডেন্টাল কলেজ নির্মাণের জন্য ২০২ কোটি টাকা, আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ স্থাপনের জন্য ১৯২ কোটি টাকা, বিশ্রামগঞ্জে নেশা মুক্তি কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ১২১ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। জিবি হাসপাতালে ব্যাডের সংখ্যা ৭২৭ থেকে বৃদ্ধি করে ১ হাজার ৪১৩ করা হয়েছে। বহিঃরাজ্যে রোগী রেফারের হার কমানোর জন্য জিবি হাসপাতালে সুপার স্পেশালিটি ব্লকের উদ্বোধন করা হয়েছে। সহসাই ২২৬ জন জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার, ১৭২ জন স্পেশালিষ্ট, এবং ১৬ জন সুপার স্পেশালিষ্ট নিয়োগ করা হবে। ১৪৩ জন ল্যাবরেটরি টেকনেশিয়ান, আয়ুর্বেদিক ২২ জন ফার্মাসিস্ট ও হোমিওপ্যাথি ২৫ জন ফার্মাসিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরে স্টাফ নার্সের ১৭৫ টি শূন্যপদ পূরণের প্রক্রিয়া চলছে। সহসাই নিয়োগ পত্র প্রদান করা হবে। এইদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী টিঙ্কু রায়, মন্ত্রী শুক্লা চরণ নোয়াতিয়া, বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্য, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, রাজ্যের মুখ্য সচিব জে.কে সিনহা সহ অন্যান্যরা। এইদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা প্রকল্পের বেশ কয়েকজন সুবিধাভোগীর হাতে মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা প্রকল্পের কার্ড তুলে দেওয়া হয়। এই ধরনের সুবিধা চালু হওয়ার পরে রাজ্যের প্রায় সাড়ে চার লক্ষাধিক পরিবার উপকৃত হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুবিধা পাবে বেনিফিশিয়ারিরা।