স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ নভেম্বর : বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রকে বেধড়ক পেটালো শাসকদলের এক চুনোপুটি নেতা শিমুল সাহা। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছিল নিরব দর্শক। ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি। আক্রান্ত ছাত্রের পরিবার আইনের দ্বারস্থ হতে চাইলেও তাদের রক্তচক্ষু দেখানো হয়।
গোটা ঘটনায় নতুন বাজার উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাতঃ বিভাগের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নতুন বাজার উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাতঃ বিভাগের ছাত্র ছাত্রীরা পঠনপাঠনের মাঝে খেলাধূলা করছিল। তখনই এক চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি জলের বোতল নিয়ে খেলা করছে দেখে পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া তাকে ডাক দেয়। তখন দুই ছাত্রের মধ্যে ঝামেলা বাঁধে। এর মধ্যে পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়া এসে সেই ছাত্রকে বড়দের সাথে ভালো ভাবে কথা বলতে বলে। এতে করে ওই তিন ছাত্রের মধ্যে সামান্য হাতাহাতি হয়। তখন এক ছাত্র শিক্ষকের নিকট বিচার দিলে শিক্ষক সবাইকে ডেকে এনে মৌখিক শাসন করে দেয়। কিন্তু শিক্ষকের এই বিচারে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ছাত্রের পিতা তথা খেদারনাল এলাকার শাসকদলের চুনোপুটি নেতা শিমূল সাহা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে কাউকে কোনো কিছু না বলেই পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া দুই ছাত্রকে মারধর করতে শুরু করে। তখন শিক্ষক শিক্ষিকারা নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল বলে অভিযোগ।
শাসক দলের ছত্রছায়া থাকার ফলে নিজের দাদাগিরি জাহির করতে গিয়ে স্কুল চলাকালীন স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে কোমলমতি শিশুদের মারধর করলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিমূল দাসের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাহস দেখাচ্ছে না। এদিকে বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন করতে এসে বহিরাগতদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে ওই দুই ছাত্রের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হেলদোল লক্ষ্য করতে পেরে অভিভাবকরা আইনের দ্বারস্থ হতে চাইলে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ময়দানে অবতীর্ণ হন বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি। আগামী শনিবারে বিদ্যালয়ে বিচার সভা করা হবে বলে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি। কিন্তু এই ঘটনার বিচার কেন শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য ছিল না বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির কাছে। আক্রান্ত ছাত্রের অভিভাবকরা আইনের দ্বারস্থ হওয়ার জন্য উদ্যোগী হলে বারে বারে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত চোখ রাঙ্গানি দেখে আক্রান্ত ছাত্রের অভিভাবকরা আইনের দ্বারস্থ হওয়ার সাহস পায়নি।