Tuesday, January 21, 2025
বাড়িরাজ্যবিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড বটতলা বাজারে, পুড়ে ছাই বহু সবজির দোকান সহ গ্রোসারির দোকান

বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড বটতলা বাজারে, পুড়ে ছাই বহু সবজির দোকান সহ গ্রোসারির দোকান

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ নভেম্বর : মাঝরাতে বিধ্বংসী আগুনে ভষ্মিভূত বটতলা বাজারের সবজির সেডের সমস্ত দোকান সহ বহু গ্রোসারি দোকান। অবশিষ্ট রইল সর্বহারা ব্যবসায়ীদের চোখের জল। এ যেন এক অভিশপ্ত রাত। সারাদিনে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন ঘুমাবে বলে। কিন্তু রাত দুইটা নাগাদ ফোন বেজে উঠে। বাজার থেকে কেউ না কেউ বলছে বাজারে আগুন লেগেছে। পরনে কাপড় নিয়ে ছুটে আসে বাজারে। কিন্তু বাজারে এসে দেখে দোকান পুড়ছে।

 দোকানে ভেতর পুড়ছে হাজার, হাজার, লক্ষ টাকার জিনিসপত্র। দমকল কর্মীদের জলে নিভছে না আগুন। যা দেখে মাথায় যেন এই মাঝরাতেই আকাশ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানায় রাতের বেলা দুটা নাগাদ খবর পেয়ে বাজারে এসে এ ভয়াবহ দৃশ্য দেখতে পায় তারা। বিধংসী অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের। কিছুই বের করতে পারে নি দোকান থেকে। সবজি বাজারের শেড ঘরে ছিল। স্থানীয় লোকজন আগুনের লেলিহান শিখা প্রত্যক্ষ করে বাজারে ব্যবসায়ী ও দমকল কর্মীদের খবর দেন। এক এক করে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের ৬ টি ইঞ্জিন।

ছুটে আসে বাজারের ব্যবসায়ীরাও। দমকল বাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে নেয় বটতলা বাজারের গোটা সবজি শেড সহ একাধিক মুদির দোকান। দমকল বাহিনীর দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রনে আসে আগুন। তবে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ১৫ থেকে ২০ টি মুদির দোকান। পাশাপাশি সম্পূর্ণ ছাই হয়ে যায় সবজি বাজার। বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান রাত ২ টার সময় তিনি খবর পান বাজারে আগুন লেগেছে। সাথে সাথে বাজারে ছুটে আসেন। বাজারে এসে দেখতে পান আগুন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। দমকল বাহিনীর কর্মীরা দীর্ঘ প্রচেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ততক্ষণে বহু দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের প্রাথমিক ধারনা বিদ্যুৎ-এর শট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

বাজারের এক ষ্টেশনারী দোকানদার জানান চোখের সামনে ওনার দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তিনি যখন বাজারে ছুটে এসেছেন, তখন আগুন ওনার দোকানে পৌছায়নি। ওনার চোখের সামনে মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ওনার গোটা দোকান গ্রাস করে নিয়েছে। এতে ওনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কান্নায় তিনি ভেঙ্গে পড়েন।সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা ক্ষতিগ্রস্তলা বাজার পরিদর্শনে যান। কথা বলেন ব্যবসায়ীদের সাথে। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন মেয়র দীপক মজুমদার। পরবর্তী সময়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এই অগ্নিকাণ্ডে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করা হচ্ছে। প্রাথমিক ধারণা দেড় কোটি টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে। দমকল কর্মীরা যদি সঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে এসে না পৌঁছাতো তাহলে আরো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হতো বলে ধারণা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কিভাবে সহযোগিতা করা যায় সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান দ্রুত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আবার ব্যবসা শুরু করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে সিপিআইএম সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মানিক দে সহ একটি প্রতিনিধিদল। ক্ষয়ক্ষতি দেখে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সমবেদনা জানান প্রতিনিধি দল। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে মানিক দে বলেন, এ মরশুমে সবজি মজুদ থাকে অধিক। সব সবজি ঘষ্মীভূত হয়ে গেছে। এবং যাদের নগদ অর্থ দোকানে ছিল সেই টাকা পর্যন্ত পুরোপুরিভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগামী দিনে যাতে বাজারটি যাতে আধুনিকরণ করা হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের যাতে পুনরায় একই স্থানে ব্যবসা করার সুযোগ পায় তার জন্য দাবী জানান সরকারের উদ্দেশ্যে। আরো বলেন বামুটিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক, যুবরাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক, প্রতাপগড় বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সহ একটি প্রতিনিধিদল সদর মহকুমা শাসকের কাছে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাবে বলে জানান মানিক দে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রাথমিক ধারনা বিদ্যুৎ-এর শট সার্কিট থেকে এই অগ্নিসংযোগ ঘটেছে। এই অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে দমকল কর্মীরা সঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে না পৌঁছালে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পাড়ত। এইদিকে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য