Saturday, December 13, 2025
বাড়িরাজ্যপ্রয়াত  বিধায়ক সামসুল হক, শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় বিধানসভা ও সি পি...

প্রয়াত  বিধায়ক সামসুল হক, শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় বিধানসভা ও সি পি আই এম -এর রাজ্য কার্যালয়ে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ জুলাই:মঙ্গলবার রাতে প্রয়াত হলেন বক্সনগরের বিধায়ক তথা সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য সামসুল হক। এদিন রাতের বেলা হঠাৎ শ্বাসকষ্ট জনিত কারনে অসুস্থতা বোধ করেন তিনি। সাথে সাথে গাড়িতে করে তাঁর ছেলে জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জরুরী বিভাগের কর্তব্য চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

চিকিৎসক জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সামসুল হকের। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শামসুল হক গতকাল রাত পুনে একটা নাগাদ জিবি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে উনার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। মঙ্গলবার বিধায়ক শামসুল হক সোনামুড়ার কুলুবাড়ী স্থিত নিজ বাড়ি থেকে পুত্রবধূকে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে যান আগরতলা নিজ বিধায়ক আবাসনে। সন্ধ্যে ছটার সময় ডাক্তার দেখিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী শহীদ চৌধুরীকে হাসপাতালে দেখতে যান। সেখান থেকে ফিরে রাত ১১ টার নাগাদ শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিয়ে যাওয়া হয় জিবি হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি করানো হয় বিধায়ককে। রাত পৌনে দুটোর সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চিকিৎসক জানান হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বিধায়কের। মৃত্যুকালে রেখে গেছেন স্ত্রী এবং চার ছেলে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি সিপিআইএম থেকে লড়াই করে বিধায়ক হিসাবে জয়ী হয়েছিলেন। এবং বিধায়ক হওয়ার আগে বক্সনগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যানের ছিলেন। সোনামুড়া মহকুমা সহ রাজ্য রাজনীতিতে ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে জিবি হাসপাতালে ছুটে যায় বহু কর্মী সমর্থক। এদিকে সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা শোক জ্ঞাপন করেন। প্রয়াত সামসুল হকের আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন। পরিবার পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানান। এদিকে জিবি হাসপাতাল থেকে প্রয়াত বিধায়কের নিথরদেহ নিয়ে আসা হয় বিধানসভায়। শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় প্রয়াত বিধায়ক সামসুল হককে। উপস্থিত বিধায়করা সকলের প্রয়াত বিধায়কের মৃতদেহে পুষ্পাঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। উপস্থিত বিধায়ক তথা উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল বলেন, সহপাঠীর মৃত্যুতে তিনি মর্মাহত। গত কয়েকদিন আগে রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যবাসীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে এবং একসাথে কাজ করেছেন সমস্ত বিধায়ক। কিন্তু অকালে তাঁর প্রয়ানে মর্মাহত সকলে। বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন জানান, শামসুল হকের মৃত্যু অবিশ্বাস্য।

মঙ্গলবার তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে বড় ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি। পরে মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে। সেখানে প্রয়াত বিধায়ককে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান সিপিআইএম নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার, বামফ্রন্টের আহবায়ক নারায়ন কর, সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে। তিনি বলেন, প্রয়াত বিধায়ক শামসুল হক সাম্প্রদায়িক শক্তি ও স্বৈরাচারী শক্তি বিরুদ্ধে এবং মানুষের ঐক্য রক্ষার ক্ষেত্রে তিনি বড় ভূমিকা পালন করে গেছেন। এই নির্বাচিত প্রতিনিধির অকাল প্রয়াণ দলের জন্য ক্ষতি। দল একজন সংগঠক এবং একজন নেতৃত্ব হারিয়েছে। আরো বলেন তিনি যে মতাদর্শ রেখে গেছেন তা বক্সনগর বাসীর উৎসাহ দেবে। পরে প্রয়াত বিদয়াতের মৃতদেহ নিয়ে শহরের রাজপথ পরিক্রমা করে সিপিআইএম নেতৃবৃন্দ। উল্লেখ্য, তারপর বিধায়কের মরদেহ নিজ বিধানসভা কেন্দ্র বক্সনগর কুলুবারি নিয়ে যাওয়া হয় শামসুল হকের নিথর দেহ। সেখান থেকে সোনামুড়া বিভাগীয় কার্যালয়ে আনা হয়। জানা যায়, ১৯৭৯ সালে কুলুবাড়ী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হন তিনি। পঞ্চায়েত পরিচালনার মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকে। তারপর সোনামুড়ায় বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি সামাজিক ব্যক্তিত্বের শীর্ষস্থানে পৌঁছে। শোকের ছায়া নেমে আসে রাজনৈতিক মহলে। বর্তমানে রাজ্যে ৬০ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ধনপুরের পর এবার বক্সনগর বিধায়ক শূন্য হয়েছে। দুটি কেন্দ্রেই হবে উপনির্বাচন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য