স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৯ জুলাই : আশঙ্কা বাস্তব! ২০১৮ সালে সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৩ প্রতাপগড় বিধানসভা কেন্দ্রে চলছে জমির দালালি। আর সেই জমির দালালির ভাগ-বিতণ্ডা নিয়ে এবার শাসক দলের রাজ্য কমিটির অফিস এবং এলাকার মন্ডল অফিসের মধ্যে শুরু হয়েছে তর্জার লড়াই। এবং শেষ পর্যন্ত এর রেশ গড়ায় পূর্ব আগরতলা থানা এবং মহিলা থানায়। পুলিশ ধরি মাছ না ছুঁই পানির মত অবস্থা।
জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে নয়টার নাগাদ প্রতাপগড় বিধানসভা কেন্দ্রের ঘোষপাড়া এলাকায় এক বিজেপি কার্যকর্তার বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায় যুব মোর্চার মন্ডল সভাপতি সহ এলাকার একদল যুবক। পরবর্তী সময় শাসক দলের এই কার্যকর্তার স্ত্রী অভিযোগ তুলে মহিলাকে এবং তার কন্যাকে শ্লীলতাহানি করেছে যুব মোর্চার মন্ডল সভাপতি মনিশ চক্রবর্তী, বিনয় দেবনাথ, কিশলয় ঘোষ, দীপ্তনু শর্মা এবং দেবজিৎ সূত্রধর। রাতের বেলায় এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে শাসক দলের তাবর নেতারা জমায়েত হতে শুরু করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। শেষ পর্যন্ত যুব মোর্চার মন্ডল সভাপতি মনিষ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি দল এসে পূর্ব থানায় অভিযোগ জানান তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে এলাকার বিজেপির কার্যকর্তার স্ত্রী সহ গোটা পরিবার। ঘটনার।
পরে সকাল হতেই এলাকার মহিলা মোর্চার ওয়ার্ড সভানেত্রীর নেতৃত্বে নির্যাতিতা সহ কয়েকজন মহিলা এসে পূর্ব মহিলা থানায় শ্লীলতাহানির মামলা করতে আসে। তখন মহিলা থানার পুলিশ বিষয়টি বুঝতে পারে এটা যুব মোর্চা এবং মহিলা মোর্চার পুরনো লড়াই। এবং এতে যুক্ত রয়েছে বিজেপির প্রদেশ কার্যালয় এবং এলাকার মন্ডল কার্যালয়। তাই মামলা রাখতে চায়নি মহিলা থানার পুলিশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে যুব মোর্চার মন্ডল সভাপতি মনীশ চক্রবর্তী, বিনয় দেবনাথ, কিশালয় ঘোষ, দীপ্তনু শর্মা এবং দেবজিৎ সূত্রধরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ। মহিলা মোর্চার পক্ষ থেকে অভিযোগ যুব মোর্চার মন্ডল সভাপতি এলাকায় মহিলাদের মারধর থেকে শুরু করে সমস্ত বেআইনি কার্যকলাপ করে চলেছে। তাদের আসল কাজ হল জমির দালালি করা। আর জমির দালালি করে কোটি কোটি টাকা দলের নামে গিলছে এই যুব মোর্চা সভাপতি। কেউ যদি তার খাই মেটাতে না পারে তাহলে সে রাস্তাঘাটে ও বাড়ির ঘরে প্রবেশ করে মারধর করছে বলে অভিযোগ। এর ব্যতিক্রম হয়নি শনিবার রাতে। বিজেপি কার্যকর্তার ঘরে প্রবেশ করে মহিলাকে এবং মহিলার কন্যাকে আঘাত করে বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে মহিলা মোর্চা। তাদের আরো অভিযোগ ঘটনার পর সাথে সাথেই তারা আবার পূর্ব আগরতলা থানায় এসে মিথ্যা মামলা করেছে বাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে। বাদ যায়নি যারা মহিলার চিৎকার শুনে বাড়িতে ছুটে এসেছিল তাদের বিরুদ্ধে পর্যন্ত থানায় মামলা করেছে যুব মোর্চার পক্ষ থেকে। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে এলাকায় শাসক দলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছে একাংশ মানুষ জমির দালালি এবং শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল। সরকার পুনরায় ক্ষমতায় ফিরতে সফল হলেও তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দিন দিন এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। আতঙ্কে ভুগছে সাধারণ মানুষ।