স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ জুন : রাজ্যে বসবাসকারী ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠীর সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে রক্ষা ও পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বর্তমান রাজ্য সরকার খুবই আন্তরিক। জাতি জনজাতি উভয় অংশের মানুষ যাতে শান্তি সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য মনোভাব নিয়ে একসঙ্গে বাস করতে পারে সেই লক্ষ্যে সচেষ্ট রয়েছে সরকার। জনজাতিদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে চলেছে রাজ্য জনজাতি কল্যাণ দপ্তর। সোমবার পুরাতন আগরতলার ঐতিহাসিক চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে সপ্তাহব্যাপী শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী খার্চি পূজা ও মেলার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
উদ্বোধকের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময় খার্চি পূজা ও মেলায় যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা বাধার সম্মুখীন হতে হত। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তাঘাটের অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই খার্চি মেলা ও পুজোয় আসার ক্ষেত্রে এখন আর সমস্যা হয় না। দেশ বিদেশ থেকে পুণ্যার্থীরা বর্তমানে খার্চি মেলা ও পুজায় আসেন। বর্তমান রাজ্য সরকার চাইছে পরিকাঠামোর আরও উন্নয়ন ঘটাতে। আইনগত বাধা না থাকলে চতুর্দশ দেবতা মন্দিরের জন্য একটা ট্রাস্ট করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হওয়ায় এখন মানুষ কোনো সমস্যা ছাড়াই মন্দির চত্বরে পৌঁছাতে পারেন। শত বছরের পুরনো এই উৎসবকে কেন্দ্র করে যেসব ব্যবসায়ী স্টল খুলেছেন, তারাও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। বাংলাদেশ এবং অন্যান্য উত্তর-পূর্ব রাজ্য থেকেও অনেক মানুষ উৎসবে অংশ গ্রহণ করেন। কয়েক দশক ধরে চলে আসছে এই মেলা ও উৎসব। কিন্তু আগে উৎসব ও মেলাকে কেন্দ্র করে পরিকাঠামোর যথেষ্ট অভাব ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার মন্দিরের পরিকাঠামোর উন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছে। এর পাশাপাশি এই ঐতিহ্যবাহী মন্দিরটির সার্বিক পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্ট গঠন করা যায় কিনা সেটাও দেখা হবে। মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরও একটি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হয়। তাই যদি কোন সমস্যা না থাকে তবে আমরা চতুর্দশ দেবতা মন্দিরের জন্যও একটি ট্রাস্ট গঠন করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, এই মন্দিরের উন্নয়নের জন্য সরকারের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।ত্রিপুরা রাজ্য শিল্প, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যে ভরপুর রয়েছে যেটা অন্য কোথাও পাবেন না। আমাদের রাজ্যে ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে। এসবের সাক্ষী হতে অনেক গ্রামীণ এলাকা পরিদর্শন করার সুযোগ হয়েছে। তাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি সত্যিই অভিভূত করে। আগে এই অনন্য সংস্কৃতি বিলুপ্তি হতে বসেছিল। কিন্তু আমাদের সরকার তাদের রক্ষা এবং পুনরুজ্জীবিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চায় না আমাদের রাজ্যে কোনো সংস্কৃতি বা ঐতিহ্য বিলুপ্ত হোক। আমরা এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা করার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করছি।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, বিধায়ক স্বপ্না দেববর্মা সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে রীতি মেনে পূজা দেন। পরবর্তী সময় মেলার প্রদর্শনী স্টলগুলি পরিদর্শন করেন।