স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ মে : বাবা উঠ, স্নান করে মোবাইল দেখবি। ও বাবা উঠ না রে, কি হয়েছে তোর, উঠ। এভাবেই বলছে কয়েক মিনিট আগে ছেলে হারা এক অচৈতন্য মা! আট বছরে ছেলে, মাকে বলে গিয়েছিল খেলা করতে যাচ্ছে। কিন্তু আর কখনো যে মায়ের কুলে ফিরবে না তার সন্তান, তা হয়তো জানতো না জন্মদাতা মা। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই এলাকায় চিৎকার খোয়াই নদীতে ডুবে গেছে তিন শিশু। সবার মত মাও শুনেছে তার ছেলে নদীতে ডুবে গেছে।
বাড়ির লোকদের সাথে ছুটে এসেছেন হাসপাতালে। চোখ বুঝা ছেলেকে দেখে মা অচৈতন্য হয়ে ভাবছে ছেলে ঘুমিয়ে আছে। তাই বার বার ছেলেকে উঠতে বলছে। কিন্তু অচৈতন্য মার দুঃখ বুঝে উঠতে পারছে না কেউ। অপরদিকে মেয়েকে জড়িয়ে হাসপাতালে হাউমাউ করে কাঁদছে বাবা। কি হয়ে গেল। হয়তো জবাব নেই বিধাতার কাছে। কিন্তু শিশু একসাথে নদীর জলে তলিয়ে গেছে, আরো শিশু তলিয়ে যাওয়ার সময় তাকে উদ্ধার করেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। ভাগ্যক্রমে একটি শিশু বেঁচে গেলেও, তিনটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে এদিন। রুমহর্ষক এবং মর্মান্তিক ঐই ঘটনার সাক্ষী রইল রবিবার খোয়াইবাসী। মৃত তিন শিশুর নাম সপ্তদ্বীপ নমঃ। বয়স সাত বছর। বাড়ি বিশালগড়। জৈষ্ঠ্যের বন্ধে দাদুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। অপর শিশু কন্যাটির নাম মটুসি দাস। তার বয়স ১২ বছর। বাড়ি মহড়চড়া।
অপর শিশুটি ৯ বছরের বাবলি রায়। বাড়ি এলাকাতেই। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, খোয়াই পশ্চিমগনকি এলাকার জনৈক্য গোপাল দাসের বাড়িতে গতকাল একটি সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল। এই সামাজিক অনুষ্ঠানে গোপাল দাসের দুই মেয়ে নাতি নাতনীকে নিয়ে দাদুর বাড়িতে আসে বেড়াতে। রবিবার সকাল ১১ টা নাগাদ গোপাল দাস ও তার নাতি সপ্তদ্বীপ নমঃ ও নাতনি মটুসি দাস সহ প্রতিবেশী বাবলি রায়কে নিয়ে খোয়াই নদীতে স্নান করতে নামে। আচমকা তিন শিশু নদীতে তলিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের চিৎকার করতেই প্রতিবেশীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে নদীতে। নদী থেকে এলাকাবাসীরা সপ্তদীপ নামঃ -কে ও বাবলি রায়কে উদ্ধার করে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। অপরদিকে তলিয়ে যাওয়া মটুসি দাসকে দীর্ঘ দেড় ঘন্টা পর খোঁজাখুঁজি করে এলাকাবাসী নদী থেকে উদ্ধার করে। তাও মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়। এই ঘটনা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে যায়। আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া অপর শিশুটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।