স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৪ এপ্রিল : শববাহী গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যেতে বহু পরিজন। কিন্তু বাঁকা পথে ডোমের খাই না মেটায় বিশালগড় হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর আটকে রাখা হয় মৃতদেহ। শেষ পর্যন্ত চাঁদা তুলে খাই মেটাতে হল মানুষরূপী ডোমের। জানা যায়, সোমবার মোটা অর্থের জন্য মর্গে আটকে রাখা হয় মৃতদেহ। এই ঘটনার প্রত্যক্ষ করা গেছে সোমবার বিশালগড় হাসপাতালে।
অভিযোগ বিশালগড় ঘনিয়া মারা এলাকার বাসিন্দা বিষ্ণু ঘোষের মৃতদেহ সোমবার ময়না তদন্তের পর হাসপাতালের ডোম পরিবারের হাতে তুলে দিতে ৩,০০০ টাকা দাবি করেন। টাকা মিটিয়ে দিতে রাজি হয়নি পরিবারের লোকজন। শেষ পর্যন্ত দেড় হাজার টাকা জোগাড় করে মিটিয়ে দিতে চাইলে ডোম মৃতদেহ ছাড়তে নারাজ। এ বিষয়ে মৃত ব্যক্তির পরিজনেরা জানান এদিন মর্গ থেকে মৃতদেহ বের করতে ৩,০০০ টাকা দাবি করে ডোম। তারপর পরিবারের লোকজনেরা সেই টাকা মিটিয়ে দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত মৃতদেহ আটকে রাখে ডোম। ডোমের সাথে দীর্ঘক্ষণ মৃতের পরিবারের চলে বাক-বিতন্ডা। মৃত ব্যক্তির পরিবার অক্ষম হয়ে প্রতিবেশীর কাছে চাঁদা তুলতে যায়। তারপর সকলে মিলে ১৩০০ টাকা তুলে দিতে চাইলে সেই টাকা নিতে নারাজ ডোম। শেষ পর্যন্ত আইনের রক্ষক এক পুলিশ কর্মী ২০০ টাকা দিয়ে মোট ১৫০০ টাকা ডোমের হাতে তুলে দিতে দেয় প্রতিবেশীরা। তারপর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ধরনের সংস্কৃতি ত্রিপুরা রাজ্যে কোন নতুন বিষয় নয়। এই বাড়তি কামাই করার সুযোগ বাম আমল পাল্টে গেলেও রাম আমলেও রয়েছে। শুধু বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নয়। রাজ্যের সবগুলি জেলা ও মহাকুমা হাসপাতালে মর্গে এ ধরনের চিত্র লক্ষ্য করা যায়। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে কোন ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় সংস্কৃতির বদল আর হচ্ছে না। আর বিষয়টি নিয়ে দায় এড়াতেও পারছে না সরকার। প্রশাসন থেকে যদি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তাহলে এ ধরনের বাড়তি কামাই বন্ধ হতে শনিবার আর মঙ্গলবার লাগবে না। কারণ যে ব্যক্তি মারা যায় তার পরিবারের লোকজনদের মানসিক অবস্থা সেই মুহূর্তে অনেকটা দুর্বল থাকে। সে সময় এ ধরনের জোর খাটানো হয় সেটা হয়তো প্রত্যক্ষ না করলে বোঝা যায় না। বহু পরিবার এই টাকা মিটিয়ে দিতে পারে না। আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করতে বাধ্য হয়। এ ধরনের অমানবিকতার সংস্কৃতি কবে বদলাবে সেটা জানা নেই আপামর জনগণের। সুতরাং জামানা পাল্টালেও, পাল্টায়নি ধান্দাবাজি।