স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ মার্চ : ত্রয়োদশ বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন সন্ত্রাস নিয়ে তোলপাড়। প্রথম দিন সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা করতে না পারা বিরোধী দল সি পি আই এম সোমবার সন্ত্রাসের প্রসঙ্গটি প্রথমে অধ্যক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্যের গৃহমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহার কাছে জবাব চায়। সভা শুরু হতে বিরোধীদল সিপিআইএমের পক্ষ থেকে পরিষদীয় দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বিশালগড় নেহাল চন্দ্রনগরের ঘটনা নিয়ে প্রসঙ্গ তুলেন। ট্র্যাজেরি বেঞ্চের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন বিশালগড়ে জনৈক ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার পর এই ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জিতেন্দ্র চৌধুরী গৃহমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে জবাব চান। কিন্তু ট্র্যাজেরি বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলে উঠে সিপিআইএমের মুখে গণতন্ত্র মানায় না।
বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা অধ্যক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন জিতেন্দ্র চৌধুরী কি বলতে চাইছেন সেটা শোনা দরকার। তিপ্রা মথাও এ বিষয়ে জানতে চায়। এবং তিনি বলেন দু’দিন বিধানসভায় বিষয়টি উদযাপন হলেও কেন এ বিষয়টি উত্থাপন করতে দেওয়া হচ্ছে না। সন্ত্রাস নিয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা করতে পারে, কিন্তু সন্ত্রাসের বিষয়ে বিরোধীদের বিধানসভায় কথা বলার সুযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে জানান তিনি। তারপর অধ্যক্ষ বিশ্ব বন্ধু সেন জানান প্রশ্ন করার সুযোগ নেই এই দিন অধিবেশনে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্র্যাজেরি বেঞ্চ থেকে বিধায়ক সুধাংশু দাস বলেন বিএসসি বৈঠকে কেন প্রশ্ন করার বিষয়ে বিরোধী দল সিপিআইএম -এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়নি। তারপর আবার মন্ত্রী রতন লাল নাথ সিপিআইএমের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন রাজ্যে সন্ত্রাসের আমদানি কে করেছে? ১৯৯৩ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যতগুলি নির্বাচন সংগঠিত হয়েছে সেগুলির আগে এবং পরে যেসব সন্ত্রাস ত্রিপুরা রাজ্যে হয়েছে এবং যারা খুন হয়েছে তাদের বিষয় টেনে বিরোধী দল সিপিআইএমকে এদিন তুলোধোনো করেন রতন লাল নাথ।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ত্রিপুরায় কংগ্রেস এবং সিপিআইএম সরকার পরিচালনা করার পরেও ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য বানানোর কোন উদ্যোগ নেয়নি। শুধু তাদের দলের নেতারা ব্যক্তি সম্পত্তির বৃদ্ধি করেছেন। মানুষকে স্বাবলম্বিন করতে চায়নি। কিন্তু আজ বর্তমান সরকার চাইছে একটি ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার জন্য। তিনি বলেন সিপিআইএমের এ ধরনের সরকার পরিচালনা করায় আজ তাদের ত্রিপুরা রাজ্যের জনগণ তৃতীয় দল করে দিয়েছে। বিরোধী দলের পদ পর্যন্ত তাদের কাছে নেই। এদিন বিরোধী দল সিপিআইএম -কে আক্রমণ করে রতন লালন বলেন জিতেন বাবুরা দেশকে ভালবাসতে শিখুন। রাষ্ট্রবাদী হন। সুদীপবাবু তো আজ অধিবেশনেই নেই। এবং বাকি যে দুজন কংগ্রেসের হয়ে অধিবেশনে রয়েছেন তারাও কোন কাজে লাগবে না বলে কটাক্ষ করলেন রতন লাল নাথ। পাশাপাশি অধ্যক্ষ নির্বাচন নিয়ে তিপ্রা মথার প্রসঙ্গ টেনে বলেন কংগ্রেস এবং সিপিআইএমকে মুখে জামা ঘষে দিয়েছে তিপ্রা মথা পার্টি।
এদিকে বিধানসভা অধিবেশনের প্রথম দিন রাজ্যপালের ধন্যবাদ সূচক বক্তব্যে পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দল সিপিআইএমের উপনেতা শ্যামল চক্রবর্তী বলেন নির্বাচনে ফলাফল বের হওয়ার পর ৮৫ টি বাড়ির সম্পূর্ণভাবে জ্বালিয়ে দিয়েছে শাসক দলের দুর্বৃত্তরা। ৯৭ টি দোকান পুরোপুরি ভাবে পুড়িয়ে দিয়েছে। শত শত গাড়ি চালক রাস্তায় নামতে পারছে না। এক অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে ত্রিপুরায় রাজ্যে। এমনকি ৩৫ টি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ঘরের মানুষজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে ল কাপে ভরে দিয়েছে। সুতরাং রাজ্যপালের বক্তব্য সমর্থন করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।