Sunday, January 19, 2025
বাড়িরাজ্যপুনর্ভোটের দাবি খারিজ করল নির্বাচন কমিশন

পুনর্ভোটের দাবি খারিজ করল নির্বাচন কমিশন

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ ফেব্রুয়ারি : ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ৪ মার্চ নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হবে। জিরো পুল ভায়োলেন্স নিয়ে নির্বাচন কমিশন দীঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ভোট সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে সারা রাজ্যে সন্ত্রাসের ঘটনা অহরহ ঘটার পর নির্বাচন কমিশন নড়েচড়ে বসলো। শনিবার রাজ্যের ২৩ টি মহকুমা মধ্যে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃত্বদের সাথে বৈঠক করেছেন মহকুমা শাসক।

 আইন হাতে তুলে না নিয়ে রাজ্যে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য আহ্বান জানান। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার কোনরকম আশঙ্কা থাকলে সাথে সাথে নির্বাচন কমিশনের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করার জন্য আহ্বান জানান। কারণ সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের ত্রিপুরার গরিমা নষ্ট হয়। এটা ত্রিপুরা সংস্কৃতি নয়। গত ৪৮ ঘণ্টা রাজ্যে অতিমাত্রায় সন্ত্রাসের পরিপেক্ষিতে শনিবার পশ্চিম জেলা শাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মুখ্য আধিকারিক কিরণ গিত্যে। তিনি জানান, নির্বাচনের দিন পাঁচটি ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। একজনের ভোট অপরজন দান করতে গিয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মোট ৬ টি এফ আই আর করা হয়েছে। ধোলাই জেলায় এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের হিংসার ঘটনা নেই। উত্তর জেলাতেও অনুরূপভাবে কোন হিংসার ঘটনা ঘটেনি।

খোয়াই সিঙ্গি ছড়ায় একটি ঘটনা ঘটে। গোমতি জেলায় দু একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। ঊনকোটি জেলায় একই জায়গায় দুটি ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ জেলায় কোন হিংসার ঘটনা ঘটেনি। পশ্চিম ত্রিপুরায় দুটি ঘটনা ঘটেছে। সিপাহীজলা জেলার সবথেকে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছে। মোট নটি ঘটনা সামনে এসেছে। ধনপুর সোনামুড়া নলছর বক্সনগর বিশালগড় । প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কমিশন। মিশন জিরো পোল ভায়োলেন্স কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সীমায়িত রাখতে চলবে না। রাজ্যের ভাবমূর্তি গোটা দেশের ক্ষেত্রে সুন্দর ও স্বচ্ছ রাখতে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও রাজ্যবাসীকে ভূমিকা নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা নিজের হাতে না নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এখনো রাজ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে বলে জানান মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। শনিবার মহকুমা শাসকদের মাধ্যমে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি বৈঠক করা হয়। তাদের কাছে আহ্বান জানানো হয় শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য। সন্ত্রাসের ঘটনা যাতে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি না পায় তার দিকে নজর দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে সকল অংশের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। গণনার পরও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী থাকবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। এখন কোন ধরনের অশান্তি কাম্য নয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন ভোটের দিন নির্ধারিত সময়ে সকাল সাতটার আগে থেকেই বহু ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ছিল। ভোট গ্রহণের শেষ সময় বিকেলে চারটের পর রাজ্যের ১৬৮২ পোলিং স্টেশনে বহু ভোটার লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিকেল চারটের পর ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য দুই লক্ষ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাদের ভোট নেওয়া হয়।

 ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তাইবান্দলে রাত ১০ টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। রাতে সমস্ত ইভিএম গুলি স্ট্রং রুমে আনা হয়। সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সামনেই এই ইভিএম গুলি স্ট্রংরুমে সিল করা হয়। ভোট গ্রহণের পর গণনা পর্যন্ত ১৪ দিনের সময় রয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থার মধ্যে থাকবে স্ট্রং রুম গুলি। থাকছে সিসিটিভি সার্ভিলেন্সের ব্যাবস্থা। মনিটর রুমে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে নজরদারি করতে পারবেন। সমস্ত স্ট্রং রুমের নজরদারির জন্য একজন করে টিসিএস অফিসার তিন শিফটে থাকবেন। শুক্রবার প্রিসাইডিং অফিসার প্রদেয় ফর্মের উপর স্কুটিনি করে অবজারভারেরা। দুটি বিধানসভা এলাকা থেকে পুনর্ভোট করার দাবি উঠে।

এর একটি গোলাঘাটি এবং অপরটি মাতাবাড়ি। কোন বিধানসভা এবং পুলিং স্টেশনে পুনর্ভোট করা হবে না। সমস্ত রিপোর্ট বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কমিশন। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিতে আরো জানান, এখনো পর্যন্ত প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী পোস্টাল ব্যালট মিলিয়ে ৮৯.৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে রাজ্যের নির্বাচনে। নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসের ঘটনায় ১৬ টি মামলায় এখনো পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সমস্ত রাজ্যবাসীর কাছে আহ্বান জানান শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখাতে এগিয়ে আসার জন্য। ব্যক্তিগত পারিবারিক ও প্রতিবেশীর শত্রুতা কে রাজনৈতিক রঙ না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার শংকর দেবনাথ । স্বাভাবিক জীবনযাপন যাতে ব্যর্থ না হয় সেদিকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চান তিনি। একই রকম ভাবে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান জেলা সাসক। এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য