স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ জানুয়ারি : সি পি আই এম এবং কংগ্রেসের উপর অনেক সন্ত্রাস হয়েছে। কিন্তু তিপ্রা মথার উপর কোন সন্ত্রাস চালাতে পারে নি দুর্বৃত্তরা। কারণ পাহাড়ে থানসা রয়েছে। তাই সকলকে এক মঞ্চে আসার জন্য দাবি জানান তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মন। এদিন রাজ অন্দরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ দাবি করেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের পর আগামী পাঁচ বছরের জন্য যদি নিরাপত্তার জন্য একসাথে আসার আহ্বান জানান। এবং বর্তমান শরিক দল আইপিএফটির উদ্দেশ্যে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মন বলেন, দলের নামে কিছু আসে যায় না। জোট না হলেও কোন সমস্যা নেই।
৯৯ শতাংশ দাবির মিল রয়েছে। এবং আসন্ন বিধানসভায় নির্বাচনে যদি টিকিটের প্রয়োজন হয় তাহলে নিতে পারে দল, সভাপতি পদ চাইলেও নিতে পারে। তারপরও এক মঞ্চে আসার জন্য আই পি এফ টি -র কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং আই পি এফ টি -র সাথে এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক মঞ্চে আসার জন্য এভাবে ইচ্ছা প্রকাশ করলেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মন। তিনি আরো বলেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত অংশের মানুষের মধ্যে প্রার্থীর জন্য টিকিট দেওয়া হবে। কোন ধরনের বিভাজন করবে না তিপ্রা মথা। উত্তরপ্রদেশে দেখা গেছে চার শতাধিক আসন থাকার পরেও সংখ্যা লঘুদের কোন টিকেট মেলে নি। তারাই আবার সবকা সাথ সবকা বিকাশ বলে দাবি করছেন। তাই তিপ্রা মথা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ ধরনের সিস্টেমের পরিবর্তন করে সব অংশের মানুষের মধ্যে টিকিট বিতরণ করবে। এবং তিনি এক প্রকার ভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই সবকা সাথ সবকা বিকাশের পার্টি কোন সংখ্যালঘু অংশের মানুষকে টিকিট দেবে না।
এভাবেই এদিন বিজেপিকে বিধলেন এদিন প্রদ্যোত। পাশাপাশি তিনি বলেন, আসন্ন বিধানসভার নির্বাচনে ৪০ থেকে ৪৫ টি আসনে লড়াই করবে তিপ্রা মথা। কোন দলের ভোট কাটতে চায় না। লক্ষ্য জয় পাওয়া। এদিন আবার ভিলেজ কমিটির নির্বাচন নিয়ে বর্তমান জোট সরকারকে কামান দাগেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মন। তিনি বলেন হাইকোর্টের নির্দেশের পর বলা হয়েছিল ব্রু -দের পুনর্বাসন হয়নি। তাদের পুনর্বাসন করে নির্বাচন সংঘটিত করা হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তাদের পুনর্বাসনে পুরোপুরি ব্যবস্থা না করে সরকার বিধানসভার নির্বাচনে যাচ্ছে। কারণ দিল্লি থেকে অর্থ আসবে বলে। শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কারণে ত্রিপুরা উন্নয়ন হয়নি। যার ফলে রাজ্যে রাস্তাঘাট সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘ ৭৫ বছরে রাজ্যের মানুষ ত্রিপুরা কোন আঞ্চলিক পার্টি দেখে নি। কিন্তু বর্তমানে সেই সস্তা রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে চায় মানুষ। এবং বিগত এত বছর ধরে দেখা যাচ্ছে দিল্লি থেকে কোন ছোট মাপের নেতা ত্রিপুরা সফরে আসলে তাকে পুষ্পস্তবক দিয়ে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানো হতো। এ ধরনের সিস্টেম এখন ভেঙে দিতে চায়।
আর যেদিন এক ছাতার নিচে সবকটি রাজনৈতিক দল আসবে তখন ত্রিপুরা কি করবে সেটা ত্রিপুরায় ঠিক করবে। ত্রিপুরার জন্য কি করতে হবে সেটা দিল্লি ঠিক করে দেবে না। তাই এই জোমলাবাজি অনেক হয়েছে বলে জানান তিনি। আরো বলেন উত্তর কোরিয়া, চীন নয় নেতাদের কথায় রাজ্যবাসী চলবে। বিশ্বের মধ্যে হিন্দুস্তান সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ। দিল্লিকে এই ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরার গণতন্ত্র মেনে চলতে হবে। এদিনের আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনের পর ১৪৫ পরিবারের প্রায় হাজার ভোটার বিজেপি এবং সি পি আই এম ছেড়ে তিপ্রা মথায় যোগদান করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী অনিল সরকারের ছেলে অভিজিৎ সরকার, তপন শীল, এন সি পি দলের প্রাক্তন সভাপতি এই রাজু বণিক, মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস নেতা রাজিব গোপ, যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি জহির আলী, ৬ আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বিশ্বজিৎ দেব, কাকড়াবন বিধানসভার কেন্দ্রের সিপিআইএম সম্পাদক উত্তম সরকার সহ অন্যান্যরা।