স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ ডিসেম্বর : বিজেপি সরকারের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে ৫০ হাজার চাকরি প্রদান করার। কিন্তু দীর্ঘ ৫৭-৫৮ মাসে মাত্র ২৪ হাজার ৩৩ জনের চাকরি হয়েছে রাজ্যে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহাপুরণের সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, ২০১৮ সালে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর এখনো পর্যন্ত অর্থ দপ্তর থেকে মোট ৪১ হাজার ৯৪৯ টি শূন্যপদ পূরণের জন্য অনুমোদন পাওয়া গেছে। তার মধ্যে ২৪ হাজার ৩৩ টি শূন্য পদ পূরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বর্তমান সরকার কত গুলি সরকারি চাকুরি প্রদান করেছে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়ে বলেন ২০১৮ সালে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়মিত, অনিয়মিত সকল পদ মিলিয়ে অর্থ দপ্তর থেকে মোট ৪১ হাজার ৯৪৯ টি শূন্যপদ পূরণের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। তার মধ্যে নিয়মিত পদ রয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৭ টি। ডাই-ইন-হারনেসে চাকুরি হয়েছে ১ হাজার ৩২৯ জনের। চুক্তি ভিত্তিক চাকুরি হয়েছে ৮ হাজার ১৩ জনের। আউট সোরসিং-এর মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে ৫ হাজার ৮৭৯ জনকে। অর্থ দপ্তর থেকে অনুমোদন পাওয়া ৪১ হাজার ৯৪৯ টি শূন্যপদের মধ্যে ২৪ হাজার ৩৩ টি শূন্য পদে ইতিমধ্যে নিয়োগ করা হয়ে গেছে। বাকি শূন্য পদ গুলির মধ্যে জে.আর.বি.টি-র অধিন প্রায় ৫ হাজার শূন্য পদ রয়েছে, স্পেশাল এক্সিকিউটিভের ৬ হাজার শূন্যপদ রয়েছে, টেট উত্তীর্ণ ৩ হাজারের কাছা কাছি রয়েছে। ১ হাজার পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হবে। এই সবগুলি শূন্য পদ পূরণের প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর এখনো পর্যন্ত কোন দপ্তরে কত জন লোক নিয়োগ করা হয়েছে তারও তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান রাজ্য সরকারের অধিন ৬৩ টি দপ্তর রয়েছে।
এই দপ্তর গুলির মধ্যে কোন দপ্তরে কত জন লোককে বর্তমান সরকারের সময়ে চাকুরি দেওয়া হয়েছে তার তথ্য তুলে ধরেন তিনি। তিনি জানান মধ্যে মহাকরণ ও বিধানসভায় বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার পর এখনো পর্যন্ত চাকুরি পেয়েছে ২০ জন, রাজভবনে চাকুরি হয়েছে ১৯ জনের, সাধারন প্রশাস এসএ-তে চাকুরি পেয়েছে ১৬৫ জন, নির্বাচন দপ্তরে চাকুরি হয়েছে ১৭ জনের, আইন দপ্তরে চাকুরি হয়েছে ১০ জনের, রাজস্ব দপ্তরে চাকুরি হয়েছে ২৮১ জনের, সাধান প্রশাসনে চাকুরি হয়েছে ১৮৪ জনের। অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান দপ্তরে চাকুরি পেয়েছে ৮ জন, স্বরাষ্ট্র দপ্তরে ৩ হাজার ২৭৯ জন চাকুরি পেয়েছে, পরিবহন দপ্তরে ৪০ জন চাকুরি পেয়েছে, সমবায় দপ্তরে ৫১ জন, টিএসইসিএল-এ ৬৭৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরে ১০৮ জন, স্বাস্থ্য দপ্তর ৩ হাজার ৮৫৮ জন, তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরে ৪৯ জন, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরে ২৭ জন, তপসিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরে ৭২ জন, খাদ্য দপ্তরে ১৫ জন, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরে ৬৭ জন, মৎস দপ্তরে ২১ জন, কৃষি দপ্তরে ৩০৬ জন, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরে ১৭৭ জন, বন দপ্তরে ৭৪২ জন, আরডি দপ্তরে ৩ হাজার ৬৯৭ জন, আরডি পঞ্চায়েতে ১২৮ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরে ৬১ জন, নগর উন্নয়ন দপ্তরে ৯৪ জন, উচ্চ শিক্ষা দপ্তরে ১ হাজার ১৩৯ জন, এডুকেসন সেকেন্ডারি ২ হাজার ১৮৬ জন, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরে ৪৬ জন, যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরে ১৫ জন, পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরে ৮২৫ জন, পর্যটন দপ্তরে ২৫ জন, তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরে ৭৯ জন চাকুরি পেয়েছে। অন্যান্য দপ্তর গুলিতে বেশ কিছু লোক চাকুরি পেয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান বিরোধীরা বিশেষ করে কংগ্রেস ও সিপিআইএম প্রচার করছে বর্তমান সরকারের সময়ে সরকারি চাকুরি প্রদান বন্ধ হয়ে রয়েছে। অথচ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বামফ্রন্ট সরকার থাকাকালিন সময় মোট ১৩ হাজার ৬৫৭ জনকে চাকুরি প্রদান করা হয়েছে। আর বর্তমান সরকারের সময়ে তার দ্বিগুণ চাকুরি প্রদান করা হয়েছে।